img

কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তান সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৯৪

প্রকাশিত :  ০৬:৫৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তান সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৯৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দিনে দিনে বেড়েই চলেছে কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষে এখন পযর্ন্ত মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ জনে, যা আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এতে কিরগিজস্তান বাটকেনের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলে ৫৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং তাজিকিস্তান বলছে ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে গত শুক্রবার যুদ্ধবিরতি হলেও রোববার রাতে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় একশ’ জনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে কিরগিজস্তান-তাজিকিস্তানের মধ্যে এটিই সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ। 

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ দুটি প্রায়ই সীমান্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে থাকে। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ইউএসএসআর-এর (সোভিয়েত ইউনিয়নের) পতনের পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দেশের প্রতি তাদের মতপার্থক্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। মধ্য এশিয়ার এই দুই দেশের মধ্যে ১ হাজার কিমি (৬০০ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। এই সীমান্তের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি বিতর্কিত। অবশ্য উভয় দেশের সাথেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে রাশিয়ার। আর তাই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য ‘জরুরি’ ব্যবস্থা নিতে আগেই আহ্বান জানায় মস্কো।

এর আগে ২০২১ সালে উভয় দেশের মধ্যে নজিরবিহীন লড়াইয়ে প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত বুধবার তিনটি পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে দুইজন নিহত হওয়ার পর এই দুই দেশের মধ্যে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ে। আর এই সর্বশেষ সংঘর্ষে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। যা আগের লড়াইয়ের প্রাণহানির প্রায় দ্বিগুণ।

তাজিকিস্তান রোববার বলেছে যে, তার ৩৫ জন নাগরিক নিহত হয়েছে, বুধবার সশস্ত্র সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এটি প্রথম সরকারী মৃত্যুর সংখ্যা। ফেসবুক পোস্টে তাজিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২৫ জন আহত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।

এদিকে, কিরগিজস্তান রোববার বলেছে যে, বাটকেনের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলে ৫৯ জন মারা গেছে এবং ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। দেশটির জরুরি অবস্থা বিষয়ক মন্ত্রী আরও জানান, চার কিরগিজ সেনা নিখোঁজ রয়েছেন।

জানা গেছে, কিরগিজস্তান ১৯ সেপ্টেম্বরকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে।

গণমাধ্যম জানাচ্ছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রোববার তাজিকের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাখমন এবং কিরগিজ প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভের সঙ্গে ফোনালাপ করে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ক্রেমলিনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুতিন দুই নেতাকে ‘একচেটিয়াভাবে শান্তিপূর্ণ, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিস্থিতির সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন।’

সহিংসতার শুরুর জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। কিরগিজস্তান সংঘর্ষে নিহতদের জন্য সোমবার দেশটিতে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।

সূত্রঃ টিআরটি ওয়াল্ড, বিবিসি

img

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৪১

প্রকাশিত :  ০৭:০৫, ১৩ মে ২০২৪

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে একটি আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা এবং আকস্মিক বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও ১৭ জন। 

সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় দুর্যোগ সংস্থার এক কর্মকর্তা।

কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা ভারী বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যার কারণে রাস্তা-ঘাঁট, বাড়ি-ঘর, মসজিদ প্লাবিত হয়েছে।

পশ্চিম সুমাত্রার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার কর্মকর্তা ইলহাম ওয়াহাব এএফপিকে বলেন, গত রাত পর্যন্ত আমরা ৩৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তবে আজ সকাল পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে।

উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, এখনও ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ চলছে। নিখোঁজদের মধ্যে আগাম জেলায় তিনজন এবং তানাহ দাতারে ১৪ জন। বন্যার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এই দুই এলাকায় কয়েক লাখ মানুষের বসবাস।

এখন পর্যন্ত কতজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেননি ইলহাম ওয়াহাব। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অনুসন্ধান, উদ্ধার, সরিয়ে নেওয়া ব্যক্তিদের সুরক্ষা এবং তল্লাশি অভিযানের দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

বন্যার কারণে রাস্তাঘাট যেন নদীতে পরিণত হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় মসজিদ এবং ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আগ্নেয়গিরির শীতল লাভা লাহার নামেও পরিচিত। আগ্নেয়গিরির প্রধান উপাদান যেমন ছাই, বালি এবং নুড়ি পাথর বৃষ্টির কারণে আগ্নেয়গিরির ঢালে নেমে আসে। তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যাঞ্চলে বন্যা এবং ভূমিধসে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। সে সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রাস্তাঘাট ভেসে গেছে।

বর্ষাকালে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসের প্রবণতা বেড়ে যায়। কিছু এলাকায় বন উজাড়ের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। দীর্ঘ সময় মুষলধারে বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

২০২২ সালে সুমাত্রা দ্বীপে বন্যায় প্রায় ২৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় দুই শিশুর মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে।