img

আরো ২ দিন বাড়লো বইমেলার সময়

প্রকাশিত :  ১৬:২৪, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট: ১৮:১২, ০৯ মার্চ ২০১৯

 আরো ২ দিন বাড়লো বইমেলার সময়

জনমত রিপোর্ট ।। অমর একুশে বইমেলার সময় দুইদিন বাড়ানো হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় বইমেলার শেষ দিকে বই ভিজে যাওয়া ও সে কারণে আশানুরূপ পাঠক না আশায় লেখক ও প্রকাশকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মেলা দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে মেলা ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এই সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। মাসব্যাপী চলা এই মেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল। 

এবারের বইমেলায় ৫২৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া ১৮০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। 

প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকে। ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে।

img

আজ পঁচিশে বৈশাখ, কবিগুরুর ১৬৩তম জন্মদিন

প্রকাশিত :  ০৬:১০, ০৮ মে ২০২৪

 আজ পঁচিশে বৈশাখ, বাংলা সাহিত্যের অনন্যপ্রতিভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মদিন। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ অর্থাৎ ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বকবি।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক তিনি। বাঙালির আত্মিক মুক্তি ও সার্বিক স্বনির্ভরতার প্রতীক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সংকটে প্রতিরোধ ও অভিযাত্রার প্রেরণাও তিনি।

কবিগুরুর জন্মদিন প্রথম বার পালিত হয়েছিল তার ২৬ বছর বয়সে, ১৮৮৭ সালে। প্রিয় ভাগনি সরলাদেবী ‘জীবনের ঝরাপাতা’য় লিখেছেন, ‘রবি মামার প্রথম জন্মদিন উৎসব আমি করাই। তখন মেজ মামা ও নতুন মামার সঙ্গে তিনি ৮৯ পার্ক স্ট্রিটে থাকেন। অতি ভোরে নিঃশব্দে বাড়ির বকুল ফুলের নিজের হাতে গাঁথা মালার সঙ্গে অন্যান্য ফুল ও একজোড়া ধুতি চাদর তাঁর পায়ের কাছে রেখে প্রণাম করে তাকে জাগিয়ে দিলাম, এরপর সেদিন বাড়িতে সবাই মিলে জন্মদিন পালন হয়েছিল।’ পরে শান্তিনিকেতনে ১৯১০ সাল থেকে নিয়মিত কবির জন্মদিন পালিত হয়ে এসেছে। ১৯৩১ সালে কবির ৭০ বছর বয়সে তো রীতিমতো আলোড়ন তুলে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হয়েছিল। অনুষ্ঠান কমিটির সভাপতি ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু, মূল উদ্যোক্তা অমল হোম। এই উপলক্ষে প্রকাশিত ‘The book of Tagore Golden’-এ নিবন্ধ লিখেছিলেন দেশবিদেশের গুণী মানুষেরা।

প্রতি বছর জন্মদিন উপলক্ষে তিনি কিছু লিখতেন। সব কবিতাতেই সেই অনন্ত জিজ্ঞাসা, ‘কে আমি?’ চিরন্তন এই প্রশ্ন থেকে ‘এই আমি প্রথমজাত অমৃত’ উত্তরে ফেরার চেষ্টা। সেসব কবিতাই আমাদের দলিল দস্তাবেজ। বাংলা ১৩৪৪ সালে আলমোড়াতে বসে ‘জন্মদিন’ কবিতায় লিখছেন, ‘দৃষ্টিজালে জড়ায় ওকে হাজারখানা চোখ,/ ধ্বনির ঝড়ে বিপন্ন ঐ লোক।/ জন্মদিনের মুখর তিথি যারা ভুলেই থাকে,/ দোহাই ওগো, তাদের দলে লও এ মানুষটাকে।’

রবীন্দ্রভূমির এক ভাগ কাব্য আর তিন ভাগ গদ্য। চিন্তা ব্যাখ্যা বাস্তববোধ তার প্রতিভার বুনিয়াদ; সেই মাটি থেকে উঠে আকাশ ছুঁয়েছে তার কল্পনা, ভাবাদর্শ, বিশ্বচেতনা। জীবন ও জগদ্বেদনার আলোয় কবির চিত্ত উদ্ভাসিত হয়ে সত্যের সুন্দর ভাষ্য রচনা করেছেন সংগীতে। কত অসাধারণ সব গান রচনা করেছেন তিনি! এক আশ্চর্য ক্ষমতা রবীন্দ্রসংগীতের। দেখা গেল সাধারণ মানুষ, যার জীবন হতদরিদ্রের নিঃস্বতায় জর্জরিত নয়, একটুখানি মানবিক সুবাতাস গ্রহণের সামান্য অবকাশটুকু আছে, সে যেন রবীন্দ্রনাথের গানে ঠিকই তার মনের পুষ্টি পেয়ে যায়।

বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলার পথে, ঘাটে, হাটে, মাঠে, এমনকি সুদূর নিভৃত পল্লির ঘরে প্রাঙ্গণে তাহার গানের সুর বাজিয়া উঠিতেছে।’ কারণ তিনি জানেন, ‘রবীন্দ্রনাথ খাঁটি বাঙালি কবি। রবীন্দ্রনাথের যে সত্যকার কবি-মূর্তি, তাহা সেই বাংলার বৈষ্ণব কবিরই প্রতিচ্ছবি। ’

বাঙালির পরম আরাধ্য এই মহাত্মার জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয়। সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রবীন্দ্রদর্শনের প্রধান বিষয় হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। তাকে (রবীন্দ্রনাথ) জীবনমুখী শিক্ষাদর্শনের পথপ্রদর্শকও বলা যায়। তিনি শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সব সময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন।’

কর্মসূচি :কবিগুরুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ছায়ানট দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র-উত্সবের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠান আরম্ভ হবে আজ সন্ধ্যা ৭টায়। দুই দিনব্যাপী এই উৎসবে পরিবেশিত হবে একক ও সম্মেলক গান, নৃত্য, পাঠ-আবৃত্তি। অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পী ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পী ও দল অংশ নেবেন। উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর তাদের মিলনায়তনে বিকাল ৪টায় আয়োজন করেছে ‘আত্মশক্তির উদ্বোধনেই নিহিত মানবমুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি, বেলা ১১টায় তিন দিনের এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এছাড়া থাকছে চ্যানেল আইয়ের ‘পর্দা জুড়ে ২৪ ঘণ্টা রবীন্দ্রমেলা’।