img

পাকিস্তানের গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মাদ রাফি উসমানির ইন্তেকাল

প্রকাশিত :  ১৩:২৮, ২৪ নভেম্বর ২০২২
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:৪১, ২৪ নভেম্বর ২০২২

পাকিস্তানের গ্র্যান্ড মুফতি মুহাম্মাদ রাফি উসমানির ইন্তেকাল

সৈয়দ নাঈম আহমদ, লন্ডনঃ পাকিস্তানের গ্র্যান্ড মুফতি ও দারুল উলুম করাচির প্রেসিডেন্ট মুফতি মুহাম্মাদ রাফি উসমানি ইন্তেকাল করেছেন। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) করাচিতে ৮৬ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তিনি আল্লামা মুফতি তাকি উসমানির বড় ভাই এবং পাকিস্তানের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি দারুল উলুম করাচির প্রতিষ্ঠাতা মুফতি শফি (রহ.)—এর ছেলে। গত রবিবার ২০ নভেম্বর সকাল ৯ টায় অসংখ্য উলামায়ে কেরাম ও লাখো মানুষের উপস্থিতিতে মরহুমের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। তাঁকে তাঁর পিতা হযরত মুফতি শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির পাশে সমাহিত করা হয়। 

তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি,প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও পাকিস্তান জমিয়তের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। 

মুফতি রফি উসমানি ১৯৩৬ সালের ২১ জুলাই অবিভক্ত ভারতের দেওবন্দে ঐতিহ্যবাহী উসমানি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উপমহাদেশের আধ্যাত্মিক পুরোধা মাওলানা আশরাফ আলি থানভি (রহ.) তাঁর নামকরণ করেন। পবিত্র কোরআন হিফজ ও প্রাথমিক পড়াশোনা তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে করেন। ১৯৪৮ সালের ১ মে তার পিতা মুফতি শফি (রহ.)—এর সঙ্গে সপরিবারে পাকিস্তান চলে যান। ১৯৫১ সালে দারুল উলুম করাচিতে দরসে নেজামিতে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। এরপর পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাজিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।   


মুফতি রফি উসমানি দীর্ঘকাল দারুল উলুম করাচিতে উচ্চতর হাদিস ও ফিকাহ পড়িয়েছেন। তাছাড়াও অল পাকিস্তান উলামা কাউন্সিল, কাউন্সিল অব ইসলামিক আইডিওলজি ও সিন্ধু প্রদেশের জাকাত কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের শরিয়াহ আপিল বিভাগের উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিস আল—আরাবিয়ার কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। তিনি এনইডি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। হাদিস, ফিকাহ, তাফসিরসহ বিভিন্ন বিষয়ে উর্দু ও আরবি ভাষায় তার একাধিক গ্রন্থ রয়েছে।

মুফতী রাফি উসমানীর ইন্তেকালে ইউকে জমিয়তের শোক

পাকিস্তানের মুফতী আজম মুফতী রাফি উসমানীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ।

গণমাধ্যমে প্রেরিত এক শোক বার্তায় জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন পাকিস্তানের মুফতী আজম মুফতী রাফি উসমানীর ইন্তেকালে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

শোক বার্তায় জমিয়ত নেতারা বলেন, “মুফতী রাফি উসমানী ছিলেন একজন বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক স্কলার। তিনি দীর্ঘকাল যাবত পাকিস্তানের প্রধান মুফতীর দায়িত্বের পাশাপাশি দারুল উলুম করাচীর মুহতামিম ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এসব দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানসহ মুসলিম বিশ্বে দ্বীনি কাজে অবদান রেখেছেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন অখণ্ড পাকিস্তানের মুফতীয়ে আজম মুফতী শফী রহ.—এর বড় সাহেবজাদা। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সারাজীবন দ্বীনের খিদমত আঞ্জাম দিয়েছেন মুফতী রাফি উসমানী।”

জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন “মুফতি মুহাম্মদ রফি উসমানী (রাহঃ) পাকাপোক্ত গভীর ইলম, সুন্দরতম আমল, ইত্তিবায়ে সুন্নাত, দার্শনিক চিন্তা চেতনা, অপরিসীম যোগ্যতা, বিচক্ষণতা এবং অসাধারণ নেতৃত্ব গুণের বিচারে এ যুগে মুসলিম উম্মাহর একজন শ্রেষ্ঠ ইসলামী চিন্তানায়ক মনীষা ছিলেন সন্দেহ নেই। মুফতী রাফি উসমানীর ইন্তেকালে শুধু পাকিস্তান নয়, সারা বিশ্বের দ্বীনি ও ইলমী অঙ্গনে অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হয়েছে, যা কখনোই পূর্ণ হওয়ার নয়।”

শোকবার্তায় জমিয়ত নেতৃবৃন্দ মরহুমের মাগফিরাতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। একই সাথে মরহুমের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানান।  

শোকবার্তায় স্বাক্ষর করেন— জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ আসগর হোসাইন, সভাপতি মাওলানা শুয়াইব আহমদ, সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা মুফতি আব্দুল মুনতাকিম, হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তছদ্দুক আহমদ, মাওলানা ফখরুদ্দীন সাদিক, মাওলানা হামিদুর রহমান হিলাল, মাওলানা আব্দুল মজিদ, মাওলানা শাহ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা আওলাদ হুসেন, জেনারেল সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আশফাকুর রহমান, মাওলানা শামসুল আলম ক্বিয়ামপূরী, হাফিজ মাওলানা আব্দুল হক, ট্রেজারার হাফিজ হুসাইন আহমদ বিশ্বনাথী, সহকারী ট্রেজারার মুফতি মুতাহির সিদ্বিক, মাওলানা আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আখতারুজ্জামান, হাফীজ জিয়াউদ্দীন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, সহকারী প্রচার সম্পাদক হাফিজ মাওলানা রশীদ আহমদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা ইলিয়াস, তাফসিরুল কোরআন বিষয়ক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা মুশতাক আহমদ, যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদ, মিডিয়া সেক্রেটারি মাওলানা খালেদ, প্রশিক্ষন সম্পাদক হাফিজ মাওলানা সৈয়দ হোসাইন আহমদ, অফিস সম্পাদক মাওলানা ফখরুদ্দিন বিশনাথী, ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি সৈয়দ আরজু মিয়া ও আব্দুর রহমান কোরেশী প্রমুখ।

২৭ নভেম্বর রবিবার স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল

এদিকে আগামী ২৭ নভেম্বর রবিবার বিকেল ছয় টায় লন্ডনের ইকরা বাংলা টিভির স্টুডিও সংলগ্ন হলে হযরত মুফতি রাফি উসমানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি স্মরণে বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সকলকে উপস্থিতি াকার জন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

আল্লামা মুফতি রফি উসমানির ইন্তেকালে খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্য শাখার শোক প্রকাশ 

মুফতিয়ে আজম পাকিস্তান, দারুল উলূম করাচীর মুহতামিম ও শাইখুল হাদীস, বহুগ্রন্থ প্রণেতা আল্লামা মুফতি রফি উসমানি এর ইন্তেকালে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি শায়খুল হাদীস প্রিন্সিপাল মাওলানা রেজাউল হক ও যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি ছালেহ আহমদ। 

শোক বার্তায় নেতৃদ্বয় বলেন, “আল্লামা মুফতি রফি উসমানি ইসলাম ও উম্মাহর কল্যাণে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে গেছেন।তাহার সকল অবদান উম্মাহ আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে। মরহুমের ইন্তেকালে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ দরদী একজন অভিভাবককে হারালো।” নেতৃদ্বয় মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

এপ্রিলে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০.২২ শতাংশ

প্রকাশিত :  ১২:৫১, ১৩ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৯, ১৩ মে ২০২৪

মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার সব চেষ্টার মধ্যেও গত এপ্রিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে এপ্রিলে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে। এর আগের মাসে অর্থাৎ, মার্চে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে সাত বেসিস পয়েন্ট কমে নয় দশমিক ৭৪ শতাংশ দাঁড়িয়েছে।

আজ সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। হালনাগাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে, গত এপ্রিলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৩০ বেসিস পয়েন্ট কমে নয় দশমিক ৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মার্চে এটি ছিল নয় দশমিক ৬৪ শতাংশ।

এপ্রিল মাসে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে; গত মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

মার্চ মাসে যা ছিল ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ দিকে গত এপ্রিল মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে; আগের মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্লেষকেরা বলেন, মূল্যস্ফীতি এক ধরনের কর, যা ধনী-গরিব-নির্বিশেষে সবার চাপ বাড়ায়। আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে গেলে গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। তার সঙ্গে চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ


কমিউনিটি এর আরও খবর