img

ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে : ডাকসু নেতৃবৃন্দকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত :  ১৭:২১, ১৬ মার্চ ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:৩২, ১৭ মার্চ ২০১৯

ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে : ডাকসু নেতৃবৃন্দকে প্রধানমন্ত্রী

জনমত ডেস্ক ।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণ প্রজন্মের মেধাকে কাজে লাগিয়ে তাঁর সরকার দেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় উল্লেখ করে নবনির্বাচিত ডাকসু নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দরভাবে চলুক, আর এজন্য সেখানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল ছাত্র সংসদের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তরুণ প্রজন্মের মেধা ও মননকে আমাদের উন্নয়নের কাজে সম্পৃক্ত করতে চাই, তাঁদের চিন্তা-ভাবনাকে কাজে লাগাতে চাই।’
ডাকসু’র সহসভাপতি নুরুল হক নূর (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রব্বানী ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এছাড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী শোভন এবং হল সংসদের ১৮ জন সহসভাপতি বক্তৃতা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সংগঠনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জিৎ চন্দ্র দাস স্বাগত বক্তৃতা করেন।

স্বৈরশাসকরাই দেশের সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা হঠাৎ ক্ষমতা দখল করে চাকচিক্য পোশাক-আশাকের প্রতি এত বেশি নজর দিয়েছে। তাই বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে পারেনি। আর সেখানেই তাদের ব্যর্থতা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর আমাদের সফলতা হচ্ছে উন্নয়নে একবারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের জীবনমানে পরিবর্তন এনে দেয়া।
অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণীতে পাঠদান কার্যক্রম অনিয়মিত হয়ে যাওয়ার প্রসংগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর কোন সেশন জট নেই। যেখানে ৬,৭ এবং ৮ বছরের সেশন জট ছিল।’
এই সেশন জট দূর করার জন্য তাঁর সরকারের কঠোর নির্দেশের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন. ‘কোন সেশন জট থাকবে না এবং সময় মতো পরীক্ষা দিয়ে সবার কৃতকার্য হওয়া নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘লেখাপড়ার একটা বয়স থাকে এবং তারুণ্যের যে মেধা সেটাকে আমরা দেশের কাজে লাগাতে চাই। সেই মেধাকে আমরা দেশের উন্নয়নের কাজে লাগাতে চাই। মেধা ও মননকে আমরা আরো কার্যকর করতে চাই।’
ভবিষ্যত নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ডাকসুকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশে আবার একটা সুস্থ রাজনীতির ধারা ফিরে আসবে।’
শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে সরকারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে সব সময় আমি একটা কথাই বলেছি, যে নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়। এখানে আমি চাইনি কোন বোমা ও গুলির আওয়াজ বা কোন কিছু ঘটুক। ফলে সবাইকেই বলেছি যে, সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কে ভোট পেল, আর কে পেলনা সেটা কোন বড় কথা নয়, আমি চেয়েছি সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হোক। ছাত্র-ছাত্রীরা যা চায় তাই হবে।’
নির্বাচনের পরিবেশ যেন বজায় থাকে সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছাত্রলীগ থেকেও মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভিপি পদে আমাদের সভাপতি জয়লাভ করতে পারেনি। কিন্তু আমি বলেছি তুমি তাঁকে (ভিপি পদে নির্বাচিত) গিয়ে অভিনন্দন জানাবে এবং বলবে তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করবে।’
তিনি এসময় ছাত্রলীগকে ‘ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত একটি সংগঠন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সেই সংগঠনের মর্যাদা নিয়ে সকলকে চলার আহবান জানান।
প্রতিযোগিতায় হারজিৎ থাকবেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, যে জিতেছে তাঁর দায়িত্ব বেশি। কে ভোট দিয়েছে, কে দেয় নাই সেটা দেখার দরকার নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করাই তাঁর দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, হল কমিটি ও ডাকসুতে যারা জয়লাভ করেছে প্রত্যেককে এটাই মনে রাখতে হবে, হলে যারা জিতেছে হলের ভালমন্দ তাদের দেখার দায়িত্ব। ডাকসুতে যারা জিতেছে সেখানে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সে মর্যাদা হারিয়ে যায়। যা উদ্ধারেই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনগুলো মেরামত করার এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী সম্প্রসারণ এবং ডিজিটালাইজড করায় উদ্যোগ নেবে বলেও প্রধানমন্ত্রী নবনির্বাচিত ডাকসু নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদিন শুধু লেখাপড়া নয়, সেই সঙ্গে সংস্কৃতি চর্চা এবং খেলাধূলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ডাকসু প্রসংগে বলেন, ২৮ বছর পর নির্বাচন হয়েছে। এই গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে। কারণ আমাদের দেশে ধারাবাহিকতাই কোনদিন বজায় থাকতে পারেনি।
তিনি অতীত স্মরণ করে বলেন, এই ডাকসু নির্বাচনের পর আমাদের ছাত্রীদের ওপর ছাত্রদলের নেতারা যেভাবে আক্রমণ ও মারধর করেছিল সে কথাটাও মনে রাখা উচিত। এরপর তারা নিজেরা মারামারি করেছে এবং তাঁদের কর্মী মারা গেছে। সেসব ঘটনার পর থেকে সেই বিএনপি আমল থেকেই ডাকসু বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যত নেতৃত্ব খুঁজি। কিন্তু সেই নেতৃত্ব যদি ছাত্রজীবন থেকে গড়ে না ওঠে তাহলে সেই নেতৃত্ব কতটুকুই বা একটা দেশকে দিতে পারবে।’
তিনি বলেন, সেজন্যই তাঁর সরকার স্কুল পর্যায় থেকে স্কুল কেবিনেট গড়ার মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী কলেজ জীবনে তাঁর ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে স্মৃতি রোমন্থন করেন এবং এদেশের ছাত্র রাজনীতিতে কালোটাকা, পেশী শক্তি এবং অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঘটনানোর জন্য জিয়াউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একটি বক্তব্য ‘আওয়ামী লীগের জন্য আমার ছাত্রদলই যথেষ্ট’ এর সমালোচনা করে বলেন, ‘এর বিপরীতে ছাত্রলীগের হাতে আমি কলম ও কাগজ তুলে দিয়ে বলেছিলাম ছাত্রদের কাজ হলো পড়াশোনা করা।’
কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় ভিসি’র বাড়ি ভাংচুরের তীব্র সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ভিসির বাড়িতে গিয়ে ভাংচুর, লুটপাট, হামলা করবে এটা কখনও কাম্য হতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে আন্দোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে অনুপ্রবেশকারীদের সম্পৃক্ত হয়ে ছাত্র নামধারীদের বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সাহস থাকা ভালো। কিন্তু পরিবেশ সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। যেন আর একটা দুর্ঘটনা আর কোন সর্বনাশ ডেকে আনতে না পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভয় ছিল ওখানে যে, এই সূত্র ধরে সেখানে কেউ যদি কোন অশুভ ঘটনা ঘটায় তবে, তার দায় দায়িত্ব কে নেবে, সরকারকেই বহন করতে হবে।’ সরকারের আহবানে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যাওয়ায় তিনি তাঁদের ধন্যবাদ জানান।
এসব আন্দোলনের ক্ষেত্রে সবসময়ই কিছু সুযোগ সন্ধানীরা থাকে, অতীতেও ছিল এবং অভিষ্যতেও থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় যে, সেখানে সুযোগ সন্ধানী কেউ ঢুকে গিয়ে আবার কোন অনিষ্ট না করে বসে। কাজেই এসব বিষয়গুলোতে আমাদের ছাত্ররা যারা নেতৃত্ব দেবেন তাদেরকে সচেতন থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী নবনির্বাচিত ডাকসু এবং হল ছাত্রসংসদের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজকে যারা নির্বাচিত হয়ে তোমরা এসেছে তোমরা মনে রাখবে এক একটা নেতা হিসেবে তোমরা নির্বাচিত হয়ে এসেছ। সেখানে নেতা হিসেবে কতটুকু তোমার বন্ধু এবং সহপাঠিদের দিতে পারলে, ছাত্র সমাজকে দিতে পারলে আর ভবিষ্যত বাংলাদেশকে তোমরা কি দেবে, সেটাই মাথায় রাখবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভবিষ্যতে তোমরাই একদিন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে, আর সেই শিক্ষা গ্রহণের সময় এটা। কাজেই সেইভাবে দেশকে ভালবাসবে, দেশের মানুষকে ভালবাসবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার উর্ধ্বে উঠে যদি কাজ করতে পার তবেই একজন সফল নেতা হতে পারবে। এটাই জাতির পিতার শিক্ষা। মনে রাখবে যারা জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক তারাই কিন্তু দেশের জন্য কাজ করে। অন্য যারা উড়ে এসে জুড়ে বসে ক্ষমতা দখল করে তারা নয়।’
তিনি বলেন, যে কারণে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নতি হয়। যা অন্য কেউ অতীতে আর করতে পারেনি। আর ভবিষ্যতেও পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। লাখো শহীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, সেই চেতনা নিয়েই তোমাদের চলতে হবে।
তিনি ছাত্রলীগের মূলনীতি শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির উল্লেখ করে বলেন, ‘শিক্ষার মশাল জ্বেলে শান্তির পথ ধরে প্রগতির পথে তোমরা এগিয়ে যাবে সেটাই আমি চাই এবং বাংলাদেশের সেই অগ্রযাত্রায় তোমরাই ভূমিকা নেবে, তোমাদের জন্য আমার দোয়া ও আশীর্বাদ থাকলো।’

img

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন: ৬৫ শতাংশ হতে যাচ্ছে লিখিত, ৩৫ শতাংশ শ্রেণিভিত্তিক

প্রকাশিত :  ১৮:৪৬, ১৩ মে ২০২৪

এসএসসি পরীক্ষায় ৬৫ শতাংশ লিখিত ও ৩৫ শতাংশ শ্রেণিভিত্তিক মূল্যায়ন হবে। এমন পরিকল্পনা শিক্ষামন্ত্রণালয়ের। মূল্যায়নের জন্য গঠিত কমিটি যে সুপারিশ করেছিল, তা থেকে কিছুটা পরিবর্তন এনে লিখিত অংশের ওয়েটেজ বাড়ানোর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আজ সোমবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ নিয়ে আলোচনা ও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, দুই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্তকরণের কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি যে চূড়ান্ত সুপারিশ করেছিল, তাতে কার্যক্রমভিত্তিক অর্থাৎ হাতে-কলমে মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ আর লিখিত অংশের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ করতে বলেছিল। কার্যক্রম বলতে বোঝানো হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট করা, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যার সমাধান করা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি। আরও সহজ করে বললে হাতে-কলমে কাজ।

আজকের বৈঠকে  প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষা অর্থাৎ এসএসসি পরীক্ষায় লিখিত অংশের ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ হবে ৩৫ শতাংশ। প্রথম বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ধাপে ধাপে কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ বাড়ানো হবে। লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র হবে কার্যক্রমের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল রেখে অর্থাৎ প্রশ্ন হবে দুই অংশের মধ্যে আন্তসম্পর্ক বজায় রেখে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন এনসিটিবি দ্রুত আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করলে এটিকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পূর্বনির্ধারিত জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় তোলা হবে।

জানা গেছে, ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী লিখিত ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন মিলিয়ে সময়টি পাঁচ ঘণ্টাই রাখা হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দশম শ্রেণি শেষে যে পাবলিক পরীক্ষা হবে, সেটির নাম এখনকার মতো মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষাই রাখা হচ্ছে। এ পরীক্ষা হবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে।

এনসিটিবির উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, লিখিত অংশের ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আরেকটু পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। 

দেশে গত বছর নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় এবং ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে অধ্যয়ন করছে। পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম।

কিছুদিন ধরেই নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কেমন হবে, সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে নবম শ্রেণির সামষ্টিক বা বার্ষিক মূল্যায়নটি পাবলিক পরীক্ষার আদলে নেওয়ার। তবে অন্যান্য শ্রেণির মূল্যায়ন এখনকার মতোই চলতে থাকবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন যে, মূল্যায়নটি দ্রুত চূড়ান্ত করা উচিত। কারণ, বর্তমানে যারা নবম শ্রেণিতে পড়ে, তারা নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো এসএসসি পরীক্ষা দেবে। নবম শ্রেণিতে তাদের অধ্যয়নকাল পাঁচ মাস চলছে। কিন্তু তাদের এসএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন কেমন করে হবে, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অবশ্য নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ভিত্তিতে।

শিক্ষা এর আরও খবর