অস্বাস্থ্যকর বায়ু: প্রথম অবস্থানে লাহোর, ঢাকা দ্বিতীয়
প্রকাশিত :
০৬:২৩, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
জনমত ডেস্ক: বায়ুর মান সূচকে আজও ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’। মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) ১৭২ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। যার অর্থ হলো জনবহুল এ শহরের বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষক সংস্থা একিউএয়ারের তথ্য বলছে, ২০০ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম অবস্থানে পাকিস্তানের লাহোর; ১৬৯ স্কোর নিয়ে তৃতীয় থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই। ১৬৭ স্কোর নিয়ে চতুর্থ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা এবং পঞ্চমে স্থানে থাকা ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের স্কোর ১৬২।
একিউএয়ারের তথ্য বলছে, জানুয়ারি মাসে একদিনের জন্যও অস্বাস্থ্যকর অবস্থা থেকে নামেনি ঢাকার বায়ু। বরং বেশ কয়েকদিনই ঢাকার বায়ুমান ছিল চরম অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে। এ ধারাবাহিকতা চলছে ফেব্রুয়ারিতেও।
১৫০ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
মেগাসিটি ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে বায়ুদূষণে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো: ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলা।
বর্তমানে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণকাজ, রাস্তার ধুলা ও অন্যান্য উৎস থেকে দূষিত কণার ব্যাপক নিঃসরণের কারণে ঢাকা শহরের বাতাসের গুণমান দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে।
ইলিয়াস আলীসহ সব গুম রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে: রিজভী
প্রকাশিত :
১২:৩৯, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৮, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানী বনানীর ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গাড়িচালক আনসার আলীসহ ইলিয়াস আলীকে তুলে নিয়ে যায়।’
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর গুমের বুধবার ১২ বৎসর পূর্ণ হলো। তাকে ফিরে পাওয়ার অধীর অপেক্ষায় আজও প্রহর গুনছেন তার স্ত্রী-সন্তান-পরিবারসহ দেশের অগণিত নেতাকর্মী। শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানী বনানীর ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গাড়িচালক আনসার আলীসহ তুলে নিয়ে যায় ইলিয়াস আলীকে। এরপর গাড়িটি পাওয়া গেলেও হদিস মিলেনি তাদের। একথা আজ জনগণের সামনে স্পষ্ট যে, এই ফ্যাসিবাদী সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম আর টিপাইমুখ বাঁধ ও সীমান্ত আগ্রাসনের প্রতিবাদে সিলেট অঞ্চলে গড়ে উঠা গণআন্দোলনে নেতৃত্বের কারণে ইলিয়াস আলী রাষ্ট্রযন্ত্র ও দেশি-বিদেশি অপশক্তির গাত্রদাহের প্রধান কারণ ছিলেন। ইলিয়াস আলী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। ইলিয়াস আলীর জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় ঈর্ষান্বিত সরকার রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে তাকে গুম করে রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে গুম করার পর সরকার বহুবিধ নাটক সাজিয়েছে। ওই সময় তার বিরুদ্ধে অশোভন কথা লিখে দেয়ালে পোস্টার সাঁটিয়েছিল সরকারের এজেন্টরা। গুমের ঘটনার পর তার স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের আয়োজন এবং ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার আশ্বাস ছিল লোক দেখানো। কারণ, ওই সময় বিএনপির পাঁচ দিন হরতাল ছিল। আর বিএনপির সে হরতাল ও আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্যই ছিল ওই মিথ্যা আশ্বাস।’
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘গুম হওয়ার পরে থানায় জিডি করা হয়, কোর্টে মামলা করা হয়। এরপরও তাকে ফিরিয়ে দেননি শেখ হাসিনা। ইলিয়াস আলীর সন্ধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযান চালানোর হাস্যকর নাটক করতে দেখা যায়। উচ্চ আদালতে করা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনার রিট আবেদনের শুনানিও আটকে দেয় সরকার। অর্থাৎ অদৃশ্য হওয়া নাগরিককে ফেরত দেওয়ার উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে বাধাগ্রস্ত করে সরকার। সুতরাং ইলিয়াস আলীসহ সব গুম রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। বেআইনি গুম-খুনের ফেস্টিভ্যাল পালন করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।’
‘যারা অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তাদেরই অত্যন্ত সচেতনভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে, আয়নাঘরে আটক করে রাখা হচ্ছে। ভারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে,’ বলেন রিজভী।
তার ভাষ্য, ‘তার প্রমাণ অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে ভারতে। সেখানে তারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে দেয়।’
রিজভী বলেন, ‘দ্য এশিয়ান হিউমান রাইটস কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত গুম হয়েছেন ৬২৩ জন। বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশে নিখোঁজ বা গুম হয়েছেন ১৬ জন। এই সময়ের মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রসফায়ারে মারা গেছে তিন জন। এ পর্যন্ত গুম হয়েছে ৬৫০ জনের বেশি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত ১৫ বছরে ৬ শতাধিক মানুষ গুম হয়েছেন।’