এক মাস পর আবার চালু হচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র
কয়লা সংকটের সমাধান হওয়ায় প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর আবার উৎপাদনে যাচ্ছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র; যেখানকার একটি ইউনিট থেকে ৫৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হচ্ছিল জাতীয় গ্রিডে।
বুধবার থেকে এ কেন্দ্রের ওই ইউনিট চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে তিনি জানান, কয়লা সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরীক্ষামূলক পর্যায় পেরিয়ে বাগেরহাটের রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছিল। তবে ডলার সংকটে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে উৎপাদন শুরুর ২৭ দিনের মাথায় পর্যাপ্ত কয়লা না থাকায় গত ১৪ জানুয়ারি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিদিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু রাখতে প্রয়োজন পাঁচ হাজার টন কয়লা।
কয়লার নতুন চালান নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি একটি জাহাজ রামপালে আসার পর আবার উৎপাদনে ফিরছে কেন্দ্রটি।
বিআইএফপিসিএল ডিজিএম আজিম জানান, ওই চালানে ৩০ হাজার টন কয়লা এসেছে। ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরেকটি জাহাজ আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আসার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ বিনিয়োগে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাগেরহাটের রামপালে। গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে এই কেন্দ্রের একটি ইউনিট জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছিল। এর উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। প্রতিদিন উৎপাদন করা হচ্ছিল ৫৬০ থেকে ৫৭০ মেগাওয়াট। আগামী জুনে দ্বিতীয় ইউনিটও বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
কয়লা আমদানিতে এলসি জটিলতা এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে জানিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা আজিম বলেন, ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে যে জাহাজ এসেছে, সেই কয়লা দিয়ে মাত্র ছয় দিন ইউনিটটি চালু রাখা যাবে। পরে ৫০ হাজার টন কয়লাবাহী জাহাজটি আসলে সেটি দিয়ে কেন্দ্রটি আরও ১০ দিন চালানো যাবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লাবাহী একটি জাহাজ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেটিতে ভিড়তে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে বলেও জানান তিনি।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানী ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে রামপালের কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছিল। এ কেন্দ্র থেকে রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত। বাকি বিদ্যুৎ যেত খুলনায়। শীতের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কম থাকায় রামপাল কেন্দ্র বন্ধ রাখায় তেমন বিরূপ প্রভাব পড়েনি। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে থাকায় কেন্দ্রটি বন্ধের প্রভাব রাজধানীসহ দেশজুড়ে পড়েছে। ফলে কিছু এলাকায় লোড শেডিং বেড়েছে।