img

পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে নিহত ১

প্রকাশিত :  ১৭:২৯, ০৩ মার্চ ২০২৩

পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে নিহত ১

জনমত ডেস্ক: পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতকে (কাদিয়ানি) নিষিদ্ধ ও তাদের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় পুলিশ ও মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (৩ মার্চ) জুমার নামাজের পর মুসল্লিরা পঞ্চগড় শহরে মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় আরিফুর রহমান (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি মসজিদপাড়া এলাকার ফরমান আলীর ছেলে। 

পঞ্চগড় পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান চৌধুরী ইরান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের সালানা জলসার মিডিয়া সেলের মাহমুদ আহম্মেদ সুমন দাবি করেছেন, সংঘর্ষে তাদেরও একজন নিহত হয়েছেন। তবে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

 এদিকে সংঘর্ষের পর বিকেলে আহতদেরকে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে আসতে দেখা যায়। কয়েকজন সংবাদকর্মীও বিক্ষোভকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বার্তা বিচিত্রার রিপোর্টার ফাহিম হাসানের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ফাহিম হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

আহতরা জানান, তাদের লক্ষ্য করে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তারা আহত হন। যাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

জানা গেছে, দুপুর থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। শহরে দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় বিজিবি ও র‌্যাব। বিকেলে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের আহম্মদনগর মুসলিম জামাত এলাকার বাড়িগুলোতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। এ সময় ২০ থেকে ২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তবে সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। 

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রহিমুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আহত  ১৮ জন পুরুষ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এছাড়াও ২৭ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি গেছেন। দুইজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

মুসল্লিদের দাবি, আহমদিয়া মুসলিম জামাত তথা কাদিয়ানিরা আমাদের শেষ নবীকে অস্বীকার করে অন্য কাউকে নবী মেনে নিজেকে মুসলিম দাবি করতে পারে না। গোলাম আহমদকে নবী মনে করে কাদিয়ানী সম্প্রদায়, তারা কাফের। ইসলামের নামে তাদের কোনো জালসা আয়োজন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মেনে নিতে পারে না। কাজেই তাদের জালসা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, মারা যাওয়ার বিষয়টি এখনো আমি নিশ্চিত না। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। সালানা জলসা বন্ধ করতে বলা হয়েছে কাদিয়ানিদের। কাদিয়ানিরা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। 

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহফুজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। পরে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সালানা জলসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) একই দাবিতে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন মুসল্লিরা। প্রায় ৫ ঘণ্টা এই অবরোধ চলে। বিকেল ৩টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমঝোতার আশ্বাস দেন। পরে মুসল্লিরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। 


img

মা-মেয়ের একসঙ্গে এসএসসি পাস

প্রকাশিত :  ০৭:১৩, ১৩ মে ২০২৪

একসঙ্গে এসএসসি পাস করেছে মা ও মেয়ে। এই মা–মেয়ের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামে।

রোববার (১২ মে) প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে মেয়ে নাসরিন আক্তার চাতলপাড় ওয়াজউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ–২ দশমিক ৬৭ পেয়েছেন। অন্যদিকে নুরুন্নাহার বেগম একই বিদ্যালয়ের কারিগরি (ভোকেশনাল) শাখা থেকে জিপিএ–৪ দশমিক ৫৪ পেয়েছেন।

নুরুন্নাহার (৪৪) চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের দুবারের নির্বাচিত সদস্য। তিনি কাঁঠালকান্দি গ্রামের মো. ফরিদ মিয়ার মেয়ে। তার স্বামী মো. দুলাল মিয়া ইটভাটার ব্যবসা করেন। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে।

জানা গেছে, ২৩ বছর আগে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন নুরুন্নাহার বেগমের বিয়ে হয়। তিনি বলেন, “বিয়ের পর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু দুই ছেলে-মেয়ে আর সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন রক্ষণশীল হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারিনি। এসএসসি পরীক্ষা না দিতে পেরে মনের ভেতর জিদ ছিল—যেদিন সুযোগ পাব, তখনই এসএসসি পরীক্ষা দিব।”

চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক মিয়া বলেন, “একজন ইউপি সদস্য হয়েও নুরুন্নাহার মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় বসেছেন। বিষয়টি সত্যিই প্রশংসনীয়। তার এ সাফল্যে আমরা গর্বিত। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি একজন আদর্শ হয়ে থাকবেন। কারণ, অনেকেই এ কাজ করতে পারবেন না।”