img

সাহিত্য একাডেমি নিউইয়র্কের সভায় একুশে স্মরণ

প্রকাশিত :  ০৭:১৪, ০৪ মার্চ ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৩৭, ০৪ মার্চ ২০২৩

সাহিত্য একাডেমি নিউইয়র্কের সভায় একুশে স্মরণ

সাহিত্য একাডেমি নিউইয়র্কের মাসিক সাহিত্য আসর ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আসরটি দুটি পর্বে সাজানো ছিল। প্রথম পর্বের শুরুতেই একুশে ফেব্রুয়ারির সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখক ও প্রাবন্ধিক এ বি এম সালেহ উদ্দিন এর সঞ্চালনায় বাঙালির চিরায়ত বিষয় অমর একুশের ওপর আলোকপাত করেন, লেখক ও সাংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ, সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান এবং কবি তমিজ উদদীন লোদী।

লেখক ও সাংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনায় ১৯৫২ সম্পর্কে বলেন, আমি তখন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।আন্দোলন বুঝি না। রাজনীতি বুঝি না। কিন্তু দেখতাম, মিছিল বের হচ্ছে। না বুঝেই মিছিলে শরীক হয়ে যাই। সেই থেকেই শেখার শুরু- ভাষা আন্দোলন কী, রাজনীতি কী, জনগণের অধিকার কী? বুঝতে পারি, ভাষা আন্দোলন এমন একটি আন্দোলন, যা বাঙালি সমাজকে একটি ধাক্কায় অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সাহিত্য, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্যবোধ সর্বক্ষেত্রে এই আন্দোলনের একটা বিরাট অবদান রয়ে গেছে। তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে পৃথিবীজুড়ে যে প্রভাবপড়েছিল, তাকে কেন্দ্র করে মানবজাতির চিন্তা-চেতনায় শিল্প-সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্রে যে অগ্রগতি; তা অস্বীকার করা যাবে না।আমাদের ভাষা আন্দোলনেরও এমন একটি অবদান আমাদের সমাজে বিদ্যমান।পরিশেষে তিনি তার লেখা কবিতা পড়ে শোনান।

সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, পাঞ্জাব প্রভাবিত পাকিস্তানী শাসকবর্গের সেই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে ১৯৫২ সালে ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ মানুষ বুক পেতে দিয়েছিল পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর পুলিশ ও মিলিটারির সামনে। কোনো দাবীই আমরা বিনা রক্তপাতে বিনা আন্দোলনে অর্জন করতে পারিনি। একুশের শিক্ষা আমাদের সঙ্গে আছে। কোনো দুর্বৃত্তরাই আমাদের দমন করতে পারবে না।

কবি তমিজ উদদীন লোদী বলেন, ৫২তে বিস্ফোরণ ঘটার সূত্রপাতটি হয়েছিল ৪৭-এর দেশ বিভাগের সাথে সাথে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য প্রথম প্রস্তাব রেখেছিলেন। পরর্বতীতে জিন্নাহ এটিকে গ্রহণ করেন।পাকিস্তান হবার সাথে সাথে মুদ্রায়, পোস্ট কার্ডে এবং রেলওয়ের টিকিটগুলোতে ইংরেজী ও উর্দু সন্নিবেশিত করা হয়েছিল। তৎকালীন পাবলিক সার্ভিস কমিশন ঘোষণা দিয়েছিল, এখন থেকে এটিই বহাল থাকবে। সুত্রপাতটা মূলত সেখান থেকেই। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এদেশে আমরা আছি, বুক ভরে যায়, যখন শুনি এখানকার অনেক কিছুতেই বাংলা ভাষাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি ভাষাই সময়ের বিবর্তনে সমৃদ্ধ হচ্ছে। ইংরেজি ভাষার এত বেশি গ্রহণযোগ্যতা থাকার পরও ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষার কিছু কিছু শব্দ তারা অকেজো করে দিচ্ছে এবং নতুন শব্দকে সেখানে প্রতিস্থাপিত করছে। বাংলা ভাষাও তার বাইরে নয়। বুকের রক্ত ঢেলে পাওয়া এই ভাষাটিকে আমাদের লালন করে যেতে হবে।

আলোচনা, আবৃত্তি এবং স্বরচিত পাঠের জন্য দ্বিতীয় পর্বের পরিচালনায় ছিলেন একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন।

এ পর্বে আবৃত্তি করেন 0ভাষার মাসে আমন্ত্রিত নতুন প্রজন্মের কচিপ্রাণ আহনাফ ও আশফিয়া। এছাড়া আবৃত্তি করেন পারভীন সুলতানা, নাসিমা আক্তার এবং নাসরিন শাহানা।

স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশগ্রহণ করেন তাহমিনা খান, সুমন শামসুদ্দিন, মৃদুল আহমেদ, সুলতানা ফেরদৌসী, সৈয়দ মামুনুর রশীদ, মিয়া আছকির, সৈয়দ আহমেদ জুয়েদ এবং বেনজির শিকদার।

লেখক ও প্রাবন্ধিক আবেদীন কাদের বলেন, নিউইয়র্ক শহরে যেখানে বেঁচে থাকাটাই কঠিন, সেখানে জীবন চালিয়ে সাহিত্য করা সহজ নয়; ভীষণ ভীষণ কঠিন।সাহিত্য একাডেমিতে আসি কবিতা শুনি ভালো লাগে। লেখালেখির উন্নতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেশকিছু নারী লেখক খুব ভালো গল্প লিখছেন। আশা করি ঢাকা এবং নিউইর্য়ক থেকে সামনের দিনগুলোতে বেশ ভালো কিছু হবে।

অধ্যাপক হুসনে আরা বলেন, আজ আমরা বিশ্ববাঙালি। প্রতি ১৪ দিনে একটি করে ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদেরএখন করনীয় কী সেটাও মাথায় রাখতে হবে। ছোটো ছোটো ভাষা হারিয়ে যাক সেটা হতে দিতে পারি না। ভাষাই জীবন, ভাষাইগতি।

এছাড়া আসরে বক্তব্য রাখেন নীরা কাদরী, মনিজা রহমান ও সাইদা উদিতা।

সার্বিক সমাপনী বক্তব্যে লেখক ফেরদৌস সাজেদীন বলেন, চলছে অমর একুশে বইমেলা। আমাদের মাথায়, শিরে আমরা ভাষার মুকুট পরে আছি। সেই মুকুটকে কেন্দ্র করে অনেক কবি লেখকই বাংলাদেশে চলে গেছেন। আজ তাদের এখানে দেখছি না। দেশে তারা পুরোনো লেখকদের সাথে আলাপচারিতায় মত্ত হচ্ছেন এবং আরও নতুন কিছু দেবার সম্ভাবনা তৈরি করছেন।একুশ প্রসঙ্গে বলেন, যে ভাষার শ্বাস আমাদের বাঁচার আশ তা নিয়ে সারাজীবন কথা বললেও শেষ হবার নয়। একুশের কারণেই আজ আমরা এখানে আসতে পেরেছি। আমরা বাঁচি বাংলা ভাষায়। যখন দেশান্তরী হই তখনও ভাষাকে বহন করি। পৃথিবীতে আর কোনো জাতি আছে কি যারা এত অল্প সময়ে এত লালিত্যে, এত বৈচ্যিত্রতায় জীবনের সঙ্গে ভাষাকে এত ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রেখেছে? কাজেই ভাষাকে আমরা যেন কখনো শাসন করতে না যাই। ভাষাকে যত্নে রাখতে হবে।

আসরে উপস্থিত ছিলেন কাজী আতীক, মিশুক সেলিম, রাহাত কাজী শিউলি, স্বপ্ন কুমার, লুৎফা শাহানা, নীলিমা বেগম, আমজাদ হোসেন, জাহেদ শরীফ, ভায়লা সেলিনা।

সকলকে পরবর্তী আসরে আমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন মোশাররফ হোসেন।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

মৌলভীবাজার জেলা সাবেক ছাত্রলীগের রিইউনিয়ন কমিটি ইউকের সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত :  ১২:২৯, ১৪ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৪৮, ১৪ মে ২০২৪

ব্রিটেনের বসবাসকারী মৌলভীবাজার জেলার প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আত্মার আত্মীয়তা ও প্রাণের সেতুববন্ধন অটুট রাখা ও  সবাইকে ঐক্যের বন্ধনে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করার দীপ্ত শপথে গঠিত মৌলভীবাজার সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রিইউনিয়ন কমিটি ইউকের এক গুরুত্বপূর্ণ  সভা গত ১২ই মে ২০২৪ই,পুর্ব লন্ডনের  ইমপ্রেশন ইভেন্টে বিপুল সংখ্যক প্রাক্তন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

রিইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিইউনিয়ন কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমীন রুহেল এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আকিল আহমদ।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাউন্সিলার মুজিবুর রহমান জসিম, ওয়েলস আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  মৌলভীবাজার জেলার সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর, কমিউনিটি লিডার মোস্তফা কামাল বাবলু, আব্দুর রশিদ কাজল, নজরুল ইসলাম অকিব, মুহিবুর রহমান খসরু, খয়রুল রব মুকুল, ইকবাল আহমদ, আব্দুল বাছিত, সেলিম আহমদ, শেখ আব্দুর রউফ ,মোহিদুর রহমান, দিলু মিয়া, জয়নাল আহমদ, সেলিম আহমদ, কাউন্সিলার কাবিদ আহমদ,রাধা কান্ত ধর, শাহ শাফি কাদির, জয়নাল ইসলাম, মোয়াইমিন আহমদ, দেওয়ান ফাহিম আহমদ চৌধুরী ,আমিনুল ইসলাম বেলাল, মোহাম্মদ আজিজুল আম্বিয়া, আমজাদ হোসেন সানি, এস এম দোলাল আহমদ ও রাসেল আহমদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। 

সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সামারের মধ্যে রিইউনিয়ন এর  সভা অনুষ্টান করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ৩রা জুন সন্বা ৬.০০ ঘটিকার সময় পূর্ব লন্ডনে প্রস্তুতি সভায় রিইউনিয়ন কমিটির সভা করার সিদ্বাস্ত গূহিত হয়। এবং বিস্তারিত কর্মসূচি চুড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


কমিউনিটি এর আরও খবর