img

মন্দ ভাবনা দূরে রাখুন

প্রকাশিত :  ১১:০০, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মন্দ ভাবনা দূরে রাখুন

বর্তমানে মানসিক অবসাদ, ক্লান্তি, হতাশা সবার জন্যই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যান্ত্রিক জীবন বলুন আর যাই বলুন, মন্দ ভাবনা থেকে দূরে থাকার উপায় নেই। কিন্তু সেটি আপনার জীবনকে ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আটকে রাখার কারণে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক অন্তত এই মানসিক কারণকেই দায়ী করছেন। 

তার মতে, \'মন্দ ভাবনা বা নেতিবাচক ভাবনা তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আর সমস্যাগুলো ক্ষুদ্র। একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। কদিন আগে স্বনামধন্য একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া হয়। প্রেমিক তাকে ছেড়ে যাবে এই ক্ষুদ্র ভাবনা থেকেই সে আত্মহত্যা করবে এমন একটি কথা বলে ছেলেটিকে। সে চেষ্টাও করে। আসলে মেয়েটি মরতে চায়নি। শুধু ভয় দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু হাত কাটার ফলে রক্তপাত ভয়াবহ আকার ধারণ করে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে পথেই মেয়েটি মারা যায়। নেতিবাচক ভাবনা যেমন ক্ষুদ্র তেমনি এর ফলে তাৎক্ষণিক নেওয়া অনেক সিদ্ধান্তও ক্ষুদ্র। তবে পরিণতি যে ভয়াবহ হতে পারে তা এই ঘটনাই বলে দেয়।\'

অবশ্য তিনি এই নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে থাকার কিছু উপদেশও দিয়েছেন। সেগুলো ধাপে ধাপে দেখা যাক:

নিজের জার্নাল রাখুন

যখনই মাথায় কোনো বাজে ভাবনা আসবে কাগজ কলম নিয়ে লিখতে বসুন। আজকাল মোবাইলেই অনেক জার্নাল অ্যাপ পাওয়া যায়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন। এমনটি না করাই ভালো। নিজের জার্নালে লিখে একটি মতামত দিলে দেখবেন আপনার ভালো লাগছে। 

উচ্চাভিলাষী হতাশা নয়

জীবন একঘেয়ে। সমাজে বাস করলে আমাদের একঘেয়ে নিয়মেই বাঁচতে হয়। আর এই একঘেয়েমিতে ছোট ছোট সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা দিয়ে বৈচিত্র্য আনুন। কৃতজ্ঞ থাকুন এই মূহুর্তের প্রতি।  

মজার ছলে শেখা

মস্তিষ্ককে সচল রাখুন। চিন্তা করার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে হতাশা জেঁকে বসে। আর মজার ছলে বই পড়া, নতুন কাজ শেখা, কোনো শখ গড়ে তোলা গেলে অন্তত হতাশা আসবে না। 

সৃজনশীলতায় মুক্তি

আপনি কবি, সাহিত্যিক হবেন এজন্য শিল্প বা সৃজনশীলতায় জড়াবেন বিষয়টি এমন নয়। নোটপ্যাডে লিখুন, বা কোনো বিষয় নিয়ে কাজ করুন। সৃজনে সুন্দর মানসিক আনন্দ দেয়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে দূরে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আছেন আপনি। কিন্তু আপনি করছেন শুধু স্ক্রলিং কিংবা মেসেজিং। আপনার মস্তিষ্ক সক্রিয় নয়। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন এবং অন্য কাজে মনোযোগ দিন। ঘুম ও খাদ্যাভ্যাস ঠিক করুন। 


img

বন্যা পরবর্তী সময়ে যা করা উচিত

প্রকাশিত :  ১০:০৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তলিয়ে গেছে দেশের ১১ থেকে ১৩টি জেলা আকস্মিক বন্যায়। বন্যা-কালীন সময়ে ত্রাণ ও দুর্গতদের সাহায্য গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু বন্যা পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন ও কিছু করণীয় থাকে। 

আভাস পেলে যা করবেন

আকস্মিক বন্যার শঙ্কা অনেক বেড়েছে। তাই বন্যার আভাস পেলে মুড়ি, চিড়া, গুড়, চিনি বা শুকনো জাতীয় খাবার সংরক্ষণ করা ভালো। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণের জন্য চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করা ভালো। এছাড়া সহজে বহনযোগ্য চুলা ও রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানির ব্যবস্থা রাখতে পারেন। বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীর দিকে বিশেষ নজর রাখুন। এছাড়া টাকা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংরক্ষণে রাখুন। বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।

ডায়রিয়া হলে

বন্যার সময় ডায়রিয়া বেশি দেখা দেয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। লবণ ও পানির অভাব পূরণ করাই এর একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন ও শরীরে লবণ পানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

বন্যার সময় চর্মরোগ

বন্যার পানি গোসল বা গায়ে লাগানো থেকে বিরত থাকুন। কেননা এ পানি বিভিন্ন জীবাণুর ধারক ও বাহক। তাই এ পানির সংস্পর্শে বিভিন্ন চর্ম রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে-পায়ে স্যাঁতসেঁতে ও ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিস জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে।

টিউবওয়েল ডুবে গেলে

যেসব টিউবওয়েল বন্যায় ডুবে গেছে, সেগুলোর পানি ডিসইনফেকশন না করে পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এ কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পরিমাণ পানি একটি জগ বা পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে হাতল চাপতে থাকুন।

বাড়ি ফিরলে

অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরবেন। একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।  জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন। বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না। বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না। সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন। বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।