প্রকাশিত :  ১৭:২০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ১৭:২০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীমের বাগানে এবার হয়েছে লাউয়ের বাম্পার ফলন

সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীমের বাগানে এবার হয়েছে লাউয়ের বাম্পার ফলন

প্রায় দুই যুগের বেশী সময় ধরে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত রয়েছেন এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম। দেশে যেভাবে সংবাদপত্রের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন ঠিক তেমনই প্রবাসেও তিনি খবরের সন্ধানে মগ্ন থাকেন কাজের ফাঁকে। কিন্তু অবসরে অন্য এক শামীম হিসেবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি। সখের বসে সবজি বাগান তৈরি করে পেয়েছেন সফলতা।

এবার লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে সিনিয়র সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম এর বাগানে।

তার বাগানে লাউ, কুমড়া, শিম, টমেটো, ডাটা, শসা, কাচা মরিচ, নাগা মরিচ ,লেবু, শাক ইত্যাদির বাহার দেখলে মনেই হবে না যে এটি বিলেতের কোন সবজি বাগান। বরং ভাবতে হবে এক টুকরো বাংলাদেশ বলে।

দীর্ঘ প্রচেষ্ঠায় ব্রিটেনের নর্থাম্পটনের হান্সবাড়িতে শামীম গড়ে তুলেছেন নানা জাতের সবজির বাগান। শখের তাগিদেই তিনি শুরু করেন বাগান প্রতিষ্ঠার কাজ। নানা জাতের সবজিতে তার বাগানটি আজ পরিপূর্ণ।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম বলেন, ব্রিটেনের মতো জায়গায় লাউ চাষ করা আলাদাই আনন্দ। গাছে এ বছর লাউ আর লাউ  ধরেছে। শুধু লাউ নয়, নানা ধরনের শাক সবজিতেও ভরপুর তার  বাগান। এসব শাক সবজি আত্মাীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের দিয়ে আনন্দ পান তিনি। তার এই সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে আছে পলোনেইট প্রক্রিয়া।

শামীম বলেন, লাউ গাছে পলোনেইট করা অবশ্যই দরকার। এটা না করলে গাছে ভালো ফলন হয় না। বাংলাদেশে লাউ গাছে পলোনেইট করার দরকার হয় না। কারন বাংলাদেশে পোকা-মাকড় প্রচুর আছে। কিন্তু ব্রিটেনে পোকা-মাকড় খুব কম। তাই এখানে লাউ গাছে পলোনেইট করা দরকার হয়। লাউয়ের ফুল নিয়ে ছোটো লাউয়ের কলির মধ্যে ঘষে লাগানোকে পলোনেইট করণ বলে। তাছাড়া যত্ন ছাড়া কোন জিনিষ ভালো হয় না। তাই অবশ্যই যত্ন করতে হবে।

উল্লেখ্য, বিগত ১২ বছর ধরে নিয়মিত বাগান করছেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্য, চ্যানেল এস টেলিভিশনের রিপোর্টার  এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম।

শামীম তার নর্থাম্পটনের হান্সবাড়ির ঘরের পিছনের জমিতে এই বাগান প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশীয় সবজির চাহিদা পুরণ করতেই তার এই উদ্যোগ।

প্রথমে সখের বসে বাগান করলেও এখন এই বাগান পরিচর্যা করা, নানা জাতের সবজির চাষ করা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শামীম বলেন, ছোট বেলা থেকে আমার বাগান করার শখ ছিলো। দেশে থাকার সময় বাড়ির আঙিনায় নানা ধরনের ফুলের গাছ লাগাতাম। পাশাপাশি অব্যবহৃত জমিতে করতাম মৌসুমি সবজির চাষ। ব্রিটেনে আসার পর থেকেই একটি বাগান প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু করবো করছি বলে আর হয়ে উঠছিলো না। বারো বছর পূর্বে মনস্থির করে কাজে লেগে পরি। আমার বাগানে নানা জাতের সবজির পাশাপাশি নানা ধরনের ফুল গাছও লাগিয়েছি। যখন সবজি বাগানে কাজ করি তখন মনে হয় আমি বাংলাদেশে আমার মাতৃভূমিতে আছি। এই ভালোলাগাটাও আমাকে উদ্বুদ্ধ করছে সবজি চাষের প্রতি।কোন মাসে লাউ রোপন করতে হয়? মার্চ মাসের প্রথম দিকে ঘরের মধ্যে সিড বা বিচি রোপন করবেন।তার পর মেয়ে মাসের শেষে গাছ বাহিরে বের করবেন।এর আগে বের করলে শীতে নস্ট হয়ে যাবে।


শুধু শামীমই নন, গত কয়েক বছর ধরে ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে প্রবাসী বাংলাদেশীরা সবজি বাগানের প্রতি  ঝুকছেন। বলা যায়, ব্রিটেনের বাঙালিদের কাছে দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শবজি চাষ।

বিদেশ ওইল সাত সমুদ্র তেরো নদী পার। আয় আত্মীয় ফালাইয়া আইছি, দেশ ছাইড়া দূর দ্যাশে থাকলেও দ্যাশের টান অন্তরে সব সময় থাকে। দ্যাশের খাওনের যে স্বাদ তা কোনো কিছুর লাগে তুলনা ওয় না। এর লাগিয়া আর নিজের শখের বশেই ২০১২ সালে বাসার আঙিনায় দেশি গাছ লাগানো শুরু করি।

মহাসমারোহ গড়ে তুলেছেন সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ সাদার পাড়ার এহসানুল ইসলাম চৌধুরী   শামীম ও তার স্ত্রী। যে কোনো বাঙালি বাগানের আঙিনায় গেলে প্রেমে পড়া ছাড়া উপায় নেই। এক টুকরো প্রশান্তির ছায়া ঘিরে রেখেছে শামীমের  শখের বাগান। আর এ শখের বাগান দেখতে ব্রিটেনের  বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক বাঙালি ভিড় করেন তার বাড়িতে। অনেক সময় অনেকে বাগান করার বিষয়ে তথ্যও জানতে চান শামীমের কাছে। বাগান বিষয়ে মানুষের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে বা মানুষের এ আগ্রহ অনেক বেশি উপভোগ করেন বলে শামীম আমাদের জানান।

তিনি বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে বাড়ির পেছনে অল্প অল্প করে বাগান তৈরি করি। অনেকটা শখের বশে আবার কিছুটা দেশীয় খাবারের স্বাদ নিতেই এ পরিকল্পনা। প্রথম বছরই যখন গাছে লাউ ধরে তখন এ শখ কয়েক গুণ বেড়ে যায় আমার। সেলিব্রেটি শেফ এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীমের শখের বাগানের সহযোগী তার স্ত্রী ও মেয়ে। বাগান সম্পর্কে বলেন, ‘প্রতি বছর গ্রীষ্মেই দুজনে মিলে বাগানের আয়োজন করি। সকাল-বিকাল পানি দিই। যত্ন করি। তারপর যখন সবজি ফলন হয়, তখন সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। নিজেরা খেয়ে আত্মীয়-বন্ধুর বাসায়ও এ সবজি পাঠাই। তাদের মুখেও যখন হাসি দেখি, তার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।

বাগানের সব থেকে বেশি জনপ্রিয় লাউ। এ বছর একটি লাউ হয়েছে যার যার ওজন ১৭ কেজির মতো। বাগানে সবজির তালিকায় আরও আছে শিম, বেগুন, টমেটো, কচু, ডাঁটা, ক্যাপসিকাম, কাঁচা মরিচ,নাগা মরিচ  ইত্যাদি। এসব সবজি সম্পূর্ণ বাংলাদেশি জাতের। শুধু সবজিই নয়, পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের ফল-মূলের চাষও করেছেন তিনি।