প্রকাশিত :  ১১:১১, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বড়লেখায় পল্লীবিদ্যুতের ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইনে মৃত্যুফাঁদ

মাঠ পর্যায়ের কাজ তদারকি করেন না ডিজিএম-এজিএম-জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার!

 বড়লেখায় পল্লীবিদ্যুতের ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইনে মৃত্যুফাঁদ

বসত ঘরের পেছন দিয়ে যাওয়া ৬ হাজার ৩৫০ ভোল্টের (সিঙ্গেল ফেজ হাই ভোল্টেজ এইচটি লাইন) লাইনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন বেশ কয়েকটি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন দেখা গেছে। দীর্ঘদিন থেকে এই লাইনগুলো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। কোথাও বসত ঘরের পেছন দিয়ে, কোথাও মানুষের আসা-যাওয়ার পথে হাতছোঁয়া দূরত্বে বিদ্যুতের হাই ভোল্টেজ এসব লাইন রয়েছে। আবার কোথাও পিডিবির কয়েক যুগ পুরোনো স্টিলের খুঁটিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিদ্যুতের লাইন টানানো রয়েছে। এসব খুঁটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকাও রয়েছে। তবে এসব খুঁটি ও বিদ্যুৎ লাইন সরানোর উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ সঞ্চালন লাইনের বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ে বারবার ধর্না দিয়েও মেলেনি সুফল।

ঝুঁকিপূর্ণ সঞ্চালন লাইনের বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়ার বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের চরম গাফিলতি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

সূত্র জানিয়েছে, মাঠ পর্যায়ের লাইন রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন কাজ ডিজিএমের নেতৃত্বে তদারকি করবেন এজিএম ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু এসব কাজ তদারকি করা হয়না ঠিকমতো। যারফলে দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ লাইনসহ নানা ত্রুটি রয়ে যায়। বিভিন্ন সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ লাইনসহ নানা ত্রুটির বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। এছাড়া এসব বিয়ে কর্তৃপক্ষের নজর খুব একটা পড়েনা।

অভিযোগ রয়েছে, এই অফিসের এজিএম আশরাফুল হুদা, সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সাদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। তারা বিভিন্ন লোকজনের সাথে বড় অংকের আর্থিক লেনদের মাধ্যমে বিধিবহির্ভূত সংযোগ (কাগজে কলমে বৈধ দেখিয়ে) দিতে ব্যস্ত সময় পার করেন।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, দক্ষিণ শাহবাজপুর, বড়লেখা পৌরসভা, বড়লেখা সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুতের লাইন ও পিডিবির সময়ের জরাজীর্ণ স্টিলের খুঁটির সাথে বিদ্যুতের লাইন টানানো আছে। এরমধ্যে দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের উত্তর ঘোলষা (খদানগর) এলাকায় গিয়াস উদ্দিনের বসত ঘরের পেছন দিয়ে যাওয়া ৬ হাজার ৩৫০ ভোল্টের (সিঙ্গেল ফেজ হাই ভোল্টেজ এইচটি লাইন) লাইনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। বছর দেড়েক আগে ‘‘সিঙ্গেল ফেজ হাই ভোল্টেজ এইচটি’’ সঞ্চালন লাইনটি ঝুলে মাটি স্পর্শ করে। তখন বাড়ির লোকজন বাঁশের খুঁটি দিয়ে সঞ্চালন লাইটি কোনোমতে উঠিয়ে রাখেন। তারপরও হাতছোঁয়া দূরত্বে বিদ্যুতের হাই ভোল্টেজ সঞ্চালন লাইনটি আছে। অপরদিকে বড়লেখা পৌর শহরের গাজিটেকা (বাঁশতলা) জামেমসজিদ এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের এসপিসি (পাকা) খুঁটির পরিবর্তে পিডিবির আমলের জরাজীর্ণ স্টিলের খুঁটি দিয়ে এলটি বেয়ার (খোলা তার) সঞ্চালন লাইন টানানো হয় প্রায় এক দশক আগে। পাশপাশি পিডিবির আমলের জরাজীর্ণ স্টিলের খুঁটি দিয়ে এলটি ডুপ্লেক্স (কভার তার) লাইন দিয়ে ওই এলাকার ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন ও মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। জরাজীর্ণ এই খুঁটিগুলো দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে লাইন টানানো থাকলেও তা রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে কোনো খুঁটি ভেঙে পড়েছে, কোনোটি হেলে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এ বিষয়ে বাসিন্দারা বিদ্যুৎ অফিসে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার পাননি। অথচ রক্ষণাবেক্ষণের নামে প্রায় প্রতি সপ্তাতে এক/দেড়দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে।

এব্যাপারে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সুহেল রানা চৌধুরী বলেন, ‘সব জায়গায়তো তদারকি করা সম্ভব হয়না। অভিযোগ পেলে গুরুত্ব সহকারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঝুঁিকপূর্ণ লাইন নজরে আসলেই তা দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু লাইনের সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। এগুলো সারানোর জন্য ঠিকাদারকে তাগিদ দিচ্ছি। এজিএমকম ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের সিন্ডিকেটের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি। তবে এব্যাপারেও খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’




Leave Your Comments


সিলেটের খবর এর আরও খবর