‘সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায়’ স্ত্রী-সন্তানদের হাতে খণ্ডবিখণ্ড হাসান
চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকায় লাগেজে পাওয়া খণ্ডবিখণ্ড মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাঁর নাম মো. হাসান (৬১)। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে।
একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পিবিআই।
সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে তাকে হত্যার পর খণ্ডখণ্ড দেহ বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় নিহত হাসানের গেছেন স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমাকে আটক করা হয়েছে। পলাতক রয়েছে ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি।
পিবিআই জানায়, অন্তত ৩০ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না।
এসময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। গত এক বছর আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেগুলো নিজেদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য হাসানের স্ত্রী এবং সন্তানরা চাপ দিতে থাকেন।
কিন্তু তিনি বিষয়টিতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে। এটি হাসানের ছোট ছেলের বাসা ছিল।
২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মানুষের শরীরের ৮টি খণ্ড। এর মধ্যে ছিল ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ।
প্রত্যেকটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। তবে নিহত হাসানের বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ উদ্ধার হলেও মাথা এখনও পাওয়া যায়নি। মাথার খোঁজ চলছে বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তারা।
নিহত মো. হাসানের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামে হলেও পিবিআইয়ের সংগ্রহ করা তার জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) অস্থায়ী ঠিকানা লেখা আছে, সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির জামাল মিয়ার গ্যারেজ।
১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেইট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় হাসানকে খুন করা হয়েছে। এই বাসায় হাসানের ছোট ছেলে তার স্ত্রী-সন্তানসহ থাকতেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম এসব তথ্য জানিয়েছেন।