img

‘বিভাজন কোন সমাধান নয়’, তাই টাওয়ার হ্যামলেটসের অধিকাংশ রোড ক্লোজার অপসারণের সিদ্ধান্ত নিলেন মেয়র

প্রকাশিত :  ২২:৪১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

‘বিভাজন কোন সমাধান নয়’, তাই টাওয়ার হ্যামলেটসের অধিকাংশ রোড ক্লোজার অপসারণের সিদ্ধান্ত নিলেন মেয়র
  • বেথনাল গ্রীন, কলম্বিয়া রোড, আর্নল্ড সার্কাস এবং ব্রিক লেনের রোড ক্লোজার গুলো সরিয়ে ফেলা হবে; তবে বহাল রাখা হয়েছে ওয়াপিং বাস গেট
  • ৩৩টি স্কুল স্ট্রিট ক্লোজার এবং কিছু পায়ে হাঁটা পথ ও সাইকেলিং রুট বহাল থাকবে আগের মত;
  • সক্রিয় চলাফেরা এবং পরিবেশগত উন্নতিতে ৬ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবে কাউন্সিল


টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল দূষণমুক্ত বায়ু অর্জনের জন্য কম বিভাজনকারী উপায় খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে বারার বেশিরভাগ এলটিএন ভূক্ত (লো ট্রাফিক নেইবারহুড) রাস্তা বন্ধ রাখার (রোড ক্লোজার) প্রতিবন্ধকতাগুলো অপসারণ করা হবে।
কাউন্সিল বায়ুর গুণমান উন্নত করার ব্যবস্থাদিতে ৬ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবে, যার মধ্যে থাকবে পাবলিক স্পেস গুলোকে উন্নত করার জন্য আরও অবকাঠামো তৈরি করা এবং লোকজনকে হাঁটা এবং সাইকেল চালাতে উৎসাহিত করা এবং আরও গাছ লাগানো।
অধিকতর সর্বজনীনভাবে সমর্থিত নতুন প্রকল্পগুলোতে কাউন্সিল বাসিন্দাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
লন্ডনের বাকি অংশের মতো, লিভেবল স্ট্রিট হিসেবে পরিচিত এলটিএন রোড ক্লোজারের উদ্যোগ বিতর্কিত প্রমাণিত হয়েছে, যা  বাসিন্দাদের একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। সর্বশেষ কনসালটেশন অর্থাৎ গণপরামর্শের ফলাফলে দেখা গেছে যে, এলটিএন—এর আওতাধীন এলাকার টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাদের প্রায় ৪১.৭% অপসারণের পক্ষে এবং ৫৭.৩% এগুলোকে বহাল রাখতে চায়।
জরুরী এবং কিছু কাউন্সিল সার্ভিসগুলোরও এই রোড ক্লোজার সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিধিনিষেধগুলো সম্পর্কে বিভক্ত অভিমত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসেস্ রাস্তা বন্ধের কঠোর বিরোধিতা করে আসছে।
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের কেবিনেট মিটিংয়ে, মেয়র লুৎফুর রহমান কলম্বিয়া রোড, আর্নল্ড সার্কাস এবং বেথনাল গ্রিন—এ রোড ক্লোজারগুলি (রাস্তা বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া) সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সমর্থনের কারণে ক্যানরোবার্ট স্ট্রিটের রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। গত অটোমে বাসিন্দাদের সাথে কনসালটেশনে ব্যতিক্রমী সমর্থনের কারণে মেয়র ওয়াপিংয়ে বাস গেট বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাারার ৩৩টি স্কুল স্ট্রিট সহ অ্যাক্সেসযোগ্য হাঁটার রুট এবং পথচারী স্থানগুলিতে করা উন্নতিগুলিও বজায় রাখা হবে, যেগুলো মূলত স্কুলের বাচ্চাদের ড্রপ—অফ এবং পিক—আপের সময় নির্ধারিত সময়ে রাস্তা বন্ধ রাখার সুবিধা দেয়।
টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, “এলটিএনগুলো লন্ডনের সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যূগুলির মধ্যে একটি, যা মূলত ‘সবার জন্য একই সাইজ’মূলক সমাধান, যা বারা ও এর কমিউনিটি এবং এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও বিভক্ত করেছে। একটি ইনার—সিটি বারা হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটসে ঘুরে বেড়ানোর উপযোগী জায়গার স্বল্পতার কারণে এই রোড ক্লোজারগুলোর প্রভাব আরও গুরুতর রূপ ধারণ করেছে।”
মেয়র বলেন, যদিও এলটিএনগুলো এর আশেপাশে বায়ুর গুণমান উন্নত করলেও এর ফলে যানবাহনগুলোকে অর্থাৎ ট্রাফিক প্রবাহকে আশেপাশের এলাকার শাখা রোডগুলোতে ঠেলে দেয়, যেখানে সাধারণত কম ধনী বাসিন্দারা বাস করেন। দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই বারায় পরিবারগুলোর ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রেও তারা একটি বাধা।”
তিনি বলেন, “ফলাফল হল বিভাজন। যদিও আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম এই স্কিমগুলো সরিয়ে ফেলব। আমি প্রভাবগুলি সম্পর্কে আরও ভাল বোঝার জন্য পরামর্শ করতে চেয়েছিলাম।”
“আমরা দেখেছি যে উভয় পক্ষের লোকেরা আমাদের পরামর্শের ফলাফলকে তির্যক করার চেষ্টা করছেন। শেষ পর্যন্ত, আমি মূলত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাদের মতামত জানতে আগ্রহী।”
লুৎফুর রহমান আরো বলেন, “আমাকে এখন মেয়র হিসাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এবং আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বিভাজন কোন সমাধান হতে পারেনা। আমাদের বায়ুর গুণমান উন্নত করার জন্য আরও ভাল সমাধান খুঁজে বের করতে হবে যা আমাদের বাসিন্দা এবং ব্যবসায়িদের একত্রিত করতে পারে।”
তিনি বলেন, “আমরা কিছু সার্বজনীন উপকারী বৈশিষ্ট্য বজায় রাখব, যেমন অ্যাক্সেসযোগ্য হাঁটার রুট এবং পথচারী স্থান, সময়মত ৩৩টি স্কুল স্ট্রিট বন্ধ রাখার প্রক্রিয়া যথারীতি বহাল রাখা। আমরা আমাদের রাস্তাগুলোকে নিরাপদ করতে এবং আমাদের পাবলিক স্পেসগুলোকে উন্নত করতে নতুন পদক্ষেপসমূহে ৬ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবো।
“এবং আমি আমাদের বাসিন্দাদের এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে নতুন স্কিম গুলো নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যা পরিচ্ছন্ন বায়ু অর্জনের জন্য আরও বেশি লোকজনকে একত্রিত করবে।”

এ-টুয়েলভ এবং এ-ইলেভেন হলো বারার সবচেয়ে দূষিত রাস্তা
এলটিএন আওতাধীন এলাকার চেয়েও টাওয়ার হ্যামলেটসের দু’টি সবচেয়ে দূষিত রাস্তা হল এ১২ এবং এ১১। উভয় ‘এ’ সড়কই ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের মালিকানাধীন ও পরিচালিত এবং প্রায়শই এনও২ কণার ৪০মাইক্রোগ্রাম/ঘন মিটার সীমার আইনি সীমা অতিক্রম করে। কাউন্সিল এই সড়ক দু’টিতে সৃষ্ট দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনতে আরও কাজ দেখতে চায়।

লিভেবল রাস্তা এবং এলটিএনসমূহ
লিভেবল বা  বাসযোগ্য রাস্তাগুলি কোভিড মহামারী চলাকালীন চালু হয়েছিল। লন্ডনের অন্যান্য বারাতে এগুলোকে বলা হত লো ট্রাফিক নেবারহুড (এলটিএন)।
কিছু ট্র্যাফিক স্তর অর্থাৎ যানবাহন চলাচলের মাত্রা হ্রাস করার মাধ্যমে এই কর্মসূচিটি তার কিছু মূল উদ্দেশ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
যাইহোক, কাউন্সিল যে ফিডব্যাক বা মতামত পেয়েছে, তা দেখায় যে, রাস্তা বন্ধের এই উদ্যোগগুলোর ফলে চিকিৎসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট, শিশুর যত্ন এবং অন্যান্য সহায়তা নেটওয়ার্কগুলির মতো পরিষেবাগুলির জন্য যানবাহন ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের অ্যাক্সেসের সমস্যা সহ বিরূপ প্রভাবও রয়েছে।
বিশেষ করে আর্নল্ড সার্কাস এবং ওল্ড বেথনাল গ্রিন রোডের আশেপাশে ইমার্জেন্সি সার্ভিস সমূহের যানবাহন গুলোর জন্য অ্যাক্সেস অর্থাৎ প্রবেশ—নির্গমন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। উপাত্ত আরও দেখায় যে, কিছু স্থানীয় বাস সার্ভিসসমূহে এবং আশেপাশের রাস্তা এবং রাস্তায় স্থানচ্যুত ট্র্যাফিকের উপরও প্রভাব পড়েছে।
কখন রোড ক্লোজার গুলো (রাস্তা বন্ধ রাখার প্রতিবন্ধকতা ও বিধিব্যবস্থাগুলো) অপসারণ করা হবে, এখন কাউন্সিল তার একটি সময়সূচি নির্ধারণ করবে।

কমিউনিটি এর আরও খবর

img

মালয়েশিয়ায় অগ্নিদগ্ধ দুই বাংলাদেশির মৃত্যু

প্রকাশিত :  ১৬:৩৫, ১২ অক্টোবর ২০২৪

মালয়েশিয়ায় রাসায়নিক কারখানার মধ্যে বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩ বাংলাদেশির মধ্যে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এ দুই প্রবাসী শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় একজন ও শনিবার ভোর রাত ৩টায় আরেকজন মৃত্যুবরণ করেন। নিহতরা হলেন, মুন্সীগঞ্জের রাজ্জাক ভূঁইয়ার ছেলে জব্বার আলী ও একই জেলার আবুল কাশেমের ছেলে আবু তাহের।

অন্য আরেকজন মুন্সীগঞ্জের মহিউদ্দিনের ছেলে সালাম আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে মৃতদেহ দুটি হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে এই মৃতদেহ দুটি দেশে প্রেরণের আশ্বাস দেন প্রথম সচিব শ্রম এএসএম  জাহিদুর রহমান।

প্রথম সচিব জাহিদুর রহমান আরও জানান, কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কোম্পানির কাছ থেকে নিহত ও আহতের ক্ষতিপূরণ আদায়ে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

মৃত ও আহত তিনজনের বাড়িই মুন্সীগঞ্জ জেলায়। তাদের আত্মীয়স্বজন ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে হাইকমিশনের টিমের দেখা হয় হাসপাতাল ও মর্গে।


কমিউনিটি এর আরও খবর