গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের নির্বাচন কমিশনের উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করে শাহীন আহমদ এর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত গোলাপগঞ্জবাসীদের নিয়ে গঠিত গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের সভাপতি প্রার্থী (স্বতন্ত্র) শাহীন আহমদ নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রতীক না দেওয়া, লিখিত অভিযোগে বেশ কিছু দাবী তুলে ধরে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করার ঘোষনা দেন। তার সাথে ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের সাবেক উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম ও গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের অন্যতম সদস্য আব্দুর রহমান খান সুজা।
গত রবিবার ২.৩০ টায় ইস্ট লন্ডন হোয়াইচ্যাপলের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি আসন্ন গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের নির্বাচনে সভাপতি (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হয়ে ছিলাম।নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী তিনটি পানেলের প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন। সেই সভায় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ব্যালট পেপার নিয়ে আলোচনার শুরুতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনে আমার জন্য কোন প্রতিক বরাদ্দ দেয়া হবে না, কারণ আমর পূর্ণ প্যানেল নেই। আমি অতীতের নির্বাচনের ঊদাহরণ তুলে তাদের প্রস্তাবের তিব্র প্রতিবাদ করি। সেই সময় দেলওয়ার-হাফিজ-একলিম পানেলের প্রতিনিধিরাও আমাকে সমর্থন করে একটি প্রতিক বরাদ্দের অনুরোধ করেন।
প্রতিক নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, বই এবং দোয়াত কলম প্রতিকের মাঝখানে আমার মার্কা (ফুটবল) থাকবে। তবে, ভোট প্রদানের জন্য দোয়াত কলম বা বই মার্কার মত আমার মার্কার পাশে প্যানেল ভোট এর জন্য কোন বক্স থাকবে না। কারণ হিসাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, উনাদের প্যানেল আছে কিন্তু আমার পূর্ণ প্যানেল নাই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাহেবের সম্মানের কথা ভেবে বেশী তর্কে না গিয়ে আমি শুধু অন্যান্য প্যানেলের মত আমাকে ও বক্স সহ মার্কাটি দেওয়ার অনুরোধ করি। সভা চলাকালীন সময় নির্বাচন কমিশনার মুসলেহ উদ্দিন আহমদ, একটি ব্যালট পেপারের নমুনা উপস্থাপন করেন, যেখানে অন্যান্য প্যানেলের প্রতিকের সাথে মধ্যখানে সমান আকারের ফুটবল প্রতীক ছিল এবং এভাবেই সবার সমাপ্তি ঘোষিত হয়।
পরের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাকে ফোন করে বলেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মুসলেহ উদ্দিন ভাইয়ের অফিসে গিয়ে ব্যালট পেপারের ফাইনাল কপি দেখে কনফার্ম করে আসতে। উনার কথামতো আমি সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ব্যালট পেপারের নির্ধারিত স্থানে আমার মার্কা ফুটবলকে মুছে দিয়ে শুধুমাত্র ইংরেজিতে ফুটবল শব্দটি লেখা এবং নিচে আমার নামের পাশে ছোট্ট একটা গোল বৃত্ত দেওয়া যা খালি চোখে বুঝা মুশকিল যে এটা ফুটবল। সাথে সাথেই আমি মৌখিক প্রতিবাদ জানাই এবং নির্বাচন কমিশনাররা তৎক্ষণাৎ একটি কনফারেন্স কলের আয়োজন করেন যেখানে অপর দুটি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থীদ্বয় এবং নির্বাচন কমিশনারগন কথা বলেন। শুধুমাত্র একটি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী এমদাদ হোসেন টিপু ভাইয়ের কথায় গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন কমিশনাররা উনাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এ থেকে আমার বুঝতে অসুবিধা হয়নি কিভাবে রাতের অন্ধকারে আমার প্রতীকটি ব্যালট পেপার থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল।
আমি এই অন্যায়ের তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করে চলে আসি এবং পরদিন আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে বিনীতভবে লিখিত আবেদন জানাই যে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর, নির্বাচন কমিশনের সাথে প্যানেলের প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমার ফুটবল মার্কা যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করার অনুরোধ করি। প্রতি উত্তরে শুধু দুজন কমিশনারের নাম উল্লেখ করে, কোন তারিখ ও স্বাক্ষর ছাড়া আমাকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়, যার সারাংশ হচ্ছে যে, সভায় অংশগ্রহণকারী সকলের অভিযোগের ভিত্তিতে তোমাকে ফুটবল মার্কা দেওয়া হয়নি এবং আমাকে এভাবেই নির্বাচন করতে হবে (যাহা আদৌও সত্যি নয়)
নির্বাচন কমিশনের এমন কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশন একটি নির্দিষ্ট প্যানেলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টায় লিপ্ত এবং কোন ভাবেই এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুন্দর একটি নির্বাচন দাবী করছি।
এদিকে, গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের সভাপতি প্রার্থী(স্বতন্ত্র) শাহীন আহমদের সংবাদ সম্মেলন অনাখাংকিত উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনারদের পক্ষে মোসলেহ উদ্দিন বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী সকলের মতামতের বৃত্তিতে দুইটি প্যানেল ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিন্ধান্ত মোতাবেক নামের পাশে ফুটবল প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এই সিন্ধান্ত প্রার্থী (শাহীন) আহমদ নিজেও মানেন। গঠন্ত্র অনুযায়ী সব কিছু করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে যায়গায় গঠনতন্ত্রে পরিস্কার উল্লেখ নেই সেখানে সকলের মতামত নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আর এখনও ব্যালট দেখেননি তাহলে তিনি (শাহীন আহমদ) কিভাবে পক্ষপাত দেখলেন।
সভাপতি প্রার্থী (স্বতন্ত্র) শাহীন আহমদ নির্বাচন কমিশনারের এই আচরণের নিন্দা জানান এবং গোলাপগঞ্জ হেল্পিং হ্যান্ডস ইউকের সকল সদস্যদের প্রতি ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আহবান জানান।