img

বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবে এই ৫ অভ্যাস

প্রকাশিত :  ১০:০৬, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবে এই ৫ অভ্যাস

মানুষের মনে দুশ্চিন্তা আসবেই। কিন্তু এই দুশ্চিন্তাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। কারণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আমাদের মন ও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এর কারণে সৃষ্ট হতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। তাই দুশ্চিন্তাকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। এটি এমন এক সমস্যা যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে আরও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। জীবনের ছোট-বড় সব বিষয়কে দুর্বিষহ করে তোলে দুশ্চিন্তা। এই সমস্যা এড়াতে কিছু কাজ করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৫ অভ্যাস সম্পর্কে-

মনোযোগের অভ্যাস তৈরি 

মনোযোগের অভ্যাস তৈরি করতে হবে। এতে দুশ্চিন্তা করার প্রবণতা অনেকটাই কমে যায়‌। দুশ্চিন্তার সময় আমরা অতীত নয় ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি। সেটা না ভেবে সেই মুহূর্তে চোখের সামনে যা আছে তাতে মন দিতে হবে। এতেই তৈরি হবে মনোযোগের অভ্যাস।  

প্রাণ খুলে হাসুন

২০০৫ সালে পরিচালিত গবেষণায় জানা যায়, সবসময় গম্ভীর থাকার বদলে প্রাণ খুলে হাসলে শতকরা বিশভাগ বেশি ক্যালরি পোড়ানো যায়। প্রাপ্তবয়স্ক কিছু মানুষকে নিয়মিত হাস্যকর এবং তুলনামূলক গম্ভীর চলচ্চিত্র দেখানোর পর গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে আসেন।

নিয়মিত আমোদ-প্রমোদ হৃৎস্পন্দনের হার বাড়িয়ে দেয়। ২০১০ সালে প্রকাশিত আমেরিকান জার্নাল অফ কার্ডিওলজি’র তথ্যানুসারে, হাসি-ঠাট্টার ফলে দেহের সংবহনতন্ত্র বা বিভিন্ন নালীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই ঠোঁটের কোণে সবসময় এক চিলতে হাসি রাখুন কিংবা পারলে মন খুলে হাসুন।

পর্যাপ্ত ঘুম

রোজ অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। ঘুম দুশ্চিন্তা কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে।‌ একই সঙ্গে মন শান্ত রাখতেও ভূমিকা রাখে পরিমিত ঘুম‌। ঘুম পর্যাপ্ত হলে তা দুশ্চিন্তা দূর করতে জাদুকরি ভূমিকা রাখে। সেইসঙ্গে মনও শান্ত থাকে। তাই ঘুম যেন ভালো হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। ঘুম ভালো হলে আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

প্রাণায়াম

মন শান্ত রাখতে প্রাণায়াম অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। গভীরভাবে শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগই প্রাণায়ামের মূল নিয়ম। রোজ ভোরে ১০ মিনিট এই ব্যায়াম করলে অনেকটাই উপকার মেলে। 

নিজেকে ব্যস্ত রাখুন

দুশ্চিন্তাকে মাথা থেকে দূরে রাখতে হলে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। আপনার মস্তিষ্ক এবং হাত ব্যস্ত থাকে এমন কোন কাজ করুন যেমন গেম খেলুন বা কোন হস্তশিল্প তৈরি করুন। বলা হয়ে থাকে, \'অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা।\' এটি কিন্তু বাস্তবিকই সত্য। আপনি কোনো কাজ না করে অলসভাবে শুয়ে বসে থাকলে হতাশা আর দুশ্চিন্তা আপনাকে ঘিরে ধরবে- এটাই স্বাভাবিক। তাই যে কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।


img

ভুলে যাওয়ার সমস্যা বাড়ে যেসব অভ্যাসে

প্রকাশিত :  ১২:৪৪, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইদানীং অনেকেই  ভুলে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। এমনটা যে বয়স্কদের হচ্ছে তা নয়। অনেক কম বয়সীদের মধ্যেও ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যাচ্ছে। হুট করে সবকিছু গুলিয়ে যাওয়া, প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে ভুলে যাওয়া কিংবা পছন্দের মানুষের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর তারিখ ইত্যাদি ভুলে যাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা নয়। চলার পথে হুট করে কিছু মনে না রাখত্রে পারলে খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। কখনো কখনো অন্যদের সামনে বেশ অস্বস্তিতেও পড়তে হয়।

কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? গবেষকরা বলছেন, প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করছে। দিনের পর দিন একই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে। 

উচ্চস্বরে গান শোনা: গান শোনা খুব ভালো একটি অভ্যাস। গান শুনলে মস্তিষ্ক শীতল হয়। দুশ্চিন্তা দূর হয়। কিন্তু কানে হেডফোন গুঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উচ্চস্বরে গান শুনলে মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। টানা ৩০ মিনিট অতি উচ্চমাত্রার শব্দ শুনতে থাকলে শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ রূপে লোপ পেতে পারে। শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে পারে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: অতিরিক্ত ‘স্ক্রিন টাইম’ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। অফিসে সারা ক্ষণ কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের সামনে মুখ গুঁজে বসে থাকা, সারাক্ষণ ফোন স্ক্রল করা, স্ক্রিনে গেমস খেলা, ওয়েব সিরিজ দেখা ইত্যাদি কাজগুলো করলে দিনের অধিকাংশ সময় স্ক্রিনে চোখ থাকে। এতে চোখের যেমন  ক্ষতি হয়, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও কমে যায়। এতে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ে।

অন্ধকারে থাকা: কেউ কেউ অন্ধকারে থাকতে ভালোবাসেন। দীর্ঘ সময় অন্ধকারে থাকার অভ্যাস মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। এই অভ্যাস মনে বিষণ্ণতা তৈরি করে। আর বিষণ্ণতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ধীর করে দেয়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে প্রাকৃতিক আলোতে থাকতে হবে। সূর্যের আলোতে সময় কাটাতে হবে। এতে মেজাজ ভাল থাকে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ে।

একা থাকার অভ্যাস: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুঁ মারলে অনেক বন্ধু পাওয়া যায়। কিন্তু ভার্চুয়াল বন্ধুরা কাছের হয় না। এখন বেশিরভাগ মানুষ ভেতর থেকে একা হয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই ভীড়-আড্ডা-অনুষ্ঠানে যেতে চান না। পারিবারিক অনুষ্ঠান হোক কিংবা অফিসের পার্টি— সব কিছুই এড়িয়ে চলতে চান। অর্থাৎ নিজের মতো একা থাকতে চান। একা থাকার অভ্যাসও কিন্তু মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা কাছের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় হাসিখুশি ও কর্মদক্ষ হন। তাঁদের স্মৃতিশক্তিও অন্যদের তুলনায় বেশি হয়।

অধিক পরিমাণে চিনি খাওয়া: অতিরিক্ত চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার খাওয়াও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। আবার বার্গার, ভাজাপোড়া খাবার, আলুর চিপ্স বা কোমল পানীয়ের মতো খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। তাই এসব খাবারের বদলে খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি, ফল ও বাদামজাতীয় খাবার রাখতে হবে।