img

সপ্তাহে কত দিন শ্যাম্পু করা উচিত, ব্যবহার পদ্ধতি জানেন তো

প্রকাশিত :  ০৭:৫০, ০১ নভেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৫৮, ০১ নভেম্বর ২০২৩

সপ্তাহে কত দিন শ্যাম্পু করা উচিত, ব্যবহার পদ্ধতি জানেন তো

আপনি যদি মনে করেন যে যত বেশি শ্যাম্পু করবেন, ততই চুলের জন্য ভালো, তবে ভুল করবেন। সেটা যদি বাজারের সবচেয়ে ভালো শ্যাম্পুও হয়, তবুও। আবার যদি চুলের ধরন না বুঝেই সপ্তাহে এক দিন বা দুই সপ্তাহে এক দিন শ্যাম্পু করেন, সেটাও ভুল।

নর্থ ক্যারোলাইনা ওয়েক ফরেস্ট স্কুল অব মেডিসিনের প্রফেসর অ্যামি ম্যাকমাইকেল জানান, কিছু না জেনেই প্রতিদিন যদি শ্যাম্পু করেন, তাহলে হয়তো আপনি চুলের জন্য বিপদ ডেকে আনছেন। অতিরিক্ত শ্যাম্পু করার ফলে আপনার চুল পড়ার হার বেড়ে যেতে পারে। চুলের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেঙে ভেঙে যেতে পারে। আবার আপনি যদি চুলের ধরন না বুঝে সপ্তাহে এক দিন বা দুই সপ্তাহে এক দিন শ্যাম্পু করেন, তাহলেও চুলে ময়লা জমে মাথার ভেতরে চুলকানি শুরু হয়ে যেতে পারে। আবার তেলের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে সেখানে ধুলাবালু আটকে চুলে জট পড়ে যেতে পারে।

তাহলে কেমন চুলে সপ্তাহে কত দিন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত? এই প্রশ্নের উত্তরের আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক, শ্যাম্পু জিনিসটা আসলে কী?

শ্যাম্পু কিছু উপাদানের সংমিশ্রণে তৈরি হয়, যা তেল–ময়লা, মৃত কোষ সরিয়ে চুলকে পরিষ্কার ও রেশমি করে, যাতে আপনি পরিচ্ছন্ন থাকেন, চুল সুন্দর দেখায় আর চুলের স্টাইলও করতে পারেন মনমতো। ক্যালিফোর্নিয়ার লোমা লিন্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডার্মাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জেনিন লুক জানান, সাধারণ স্বল্প মাত্রার পরিষ্কারক যেমন সারফ্যাকট্যান্টস পানির সাহায্যে তেল–ময়লাগুলোকে মাথার ভেতর থেকে ধুয়ে পরিষ্কার করে। সোডিয়াম লরেথ সালফেট, অ্যামোনিয়াম লরেথ সালফেট, সোডিয়াম লরেল সালফেট, অ্যালুমিনিয়াম লরেল সালফেট—সাধারণত এগুলোই মূল উপাদান।

এ ছাড়া এর সঙ্গে থাকে পর্যাপ্ত পানি, কোকামাইড বা কোকামাইডোপ্রোপাইলের মতো ফোমিং এজেন্ট। আরও থাকে সিলিকন; যেমন সিমথিকন চুলকে স্নিগ্ধ, সিল্কি আর উজ্জ্বল করে। এগুলোর সঙ্গে প্যানথিনল, ফ্যাটি অ্যালকোহল বা বাদামের তেলও থাকে, যাতে শ্যাম্পু করার পর চুলের স্বাভাবিক ময়েশ্চার ও আর্দ্রতা অটুট থাকে।

ড.  ম্যাকমাইকেল জানান, এটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। যেমন কোনো ব্যক্তি যদি জিম করেন, নিয়মিত মাথা ঘামে বা এমন শহরে থাকেন বা এমন পরিবেশে কাজ করেন, যেখানে ধুলাবালু বেশি, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই শ্যাম্পু ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে বেশি।

চুলে তেলের মাত্রাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। যদি আপনার চুল ভীষণ তৈলাক্ত হয়, তাহলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতেই পারেন। যদি ভীষণ রুক্ষ হয়, তাহলে সপ্তাহে একবার শ্যাম্পু করবেন। এমনকি দুই সপ্তাহে একবার করলেও অসুবিধা নেই। আর যদি মোটামুটি ঠিকঠাক হয়, তাহলে সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করলেই হবে। অর্থাৎ, স্বাভাবিকভাবে আপনি সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করবেন।

চুলের টেক্সচারও এ ক্ষেত্রে একটি নিয়ামক। আপনার চুল হতে পারে সোজা, ঢেউখেলানো, কোঁকড়ানো বা খুবই কোঁকড়ানো। হেয়ার ফলিকলের আকৃতির কারণে একেকজনের চুল একেক রকম হয়। আপনার চুলের হেয়ার ফলিকল যত ওভাল বা অ্যাসাইমেট্রিক্যাল হবে, আপনার চুল ততই কোঁকড়ানো দেখাবে।

চুল কোঁকড়ানো হলে সপ্তাহে একবার শ্যাম্পু করতেই হবে। আর সে ক্ষেত্রে শ্যাম্পু পরিমাণেও লাগবে একটু বেশি। কেননা, কোঁকড়ানো চুলে ময়লা সহজে ভেতরে ঢুকতেও পারে না, আর ঢুকলে সহজে বেরও হয় না। তৈলাক্ত চুলে প্রতিদিন শ্যাম্পু করবেন। আর সোজা ঠিকঠাক চুলে সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করলেই যথেষ্ট।

img

বন্যা পরবর্তী সময়ে যা করা উচিত

প্রকাশিত :  ১০:০৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তলিয়ে গেছে দেশের ১১ থেকে ১৩টি জেলা আকস্মিক বন্যায়। বন্যা-কালীন সময়ে ত্রাণ ও দুর্গতদের সাহায্য গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু বন্যা পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন ও কিছু করণীয় থাকে। 

আভাস পেলে যা করবেন

আকস্মিক বন্যার শঙ্কা অনেক বেড়েছে। তাই বন্যার আভাস পেলে মুড়ি, চিড়া, গুড়, চিনি বা শুকনো জাতীয় খাবার সংরক্ষণ করা ভালো। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণের জন্য চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করা ভালো। এছাড়া সহজে বহনযোগ্য চুলা ও রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানির ব্যবস্থা রাখতে পারেন। বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীর দিকে বিশেষ নজর রাখুন। এছাড়া টাকা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংরক্ষণে রাখুন। বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।

ডায়রিয়া হলে

বন্যার সময় ডায়রিয়া বেশি দেখা দেয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। লবণ ও পানির অভাব পূরণ করাই এর একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন ও শরীরে লবণ পানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

বন্যার সময় চর্মরোগ

বন্যার পানি গোসল বা গায়ে লাগানো থেকে বিরত থাকুন। কেননা এ পানি বিভিন্ন জীবাণুর ধারক ও বাহক। তাই এ পানির সংস্পর্শে বিভিন্ন চর্ম রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে-পায়ে স্যাঁতসেঁতে ও ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিস জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে।

টিউবওয়েল ডুবে গেলে

যেসব টিউবওয়েল বন্যায় ডুবে গেছে, সেগুলোর পানি ডিসইনফেকশন না করে পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এ কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পরিমাণ পানি একটি জগ বা পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে হাতল চাপতে থাকুন।

বাড়ি ফিরলে

অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরবেন। একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।  জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন। বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না। বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না। সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন। বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।