img

স্যুটকেসের মতো ভাঁজ করা যাবে এই ইলেকট্রিক স্কুটার

প্রকাশিত :  ১৪:০৭, ০২ নভেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:৪৯, ০৩ নভেম্বর ২০২৩

স্যুটকেসের মতো ভাঁজ করা যাবে এই ইলেকট্রিক স্কুটার

স্যুটকেসের মতো ভাঁজ করা যাবে Honda Motocompacto নামের সেই ইলেকট্রিক স্কুটারটি। উদ্ভট আকারের সেই ই-স্কুটার আপনি স্যুটকেসের মতোই বহন করতে পারবেন। আসলে এই স্যুটকেস আকারের ইলেকট্রিক স্কুটারটিকে হোন্ডা অনেকটাই তাদের পুরোনো মডেলগুলির মতো করেছে। ইলেকট্রিক স্কুটারটি খুবই হালকা, এর ওজন মাত্র ১৯ কেজি। হাতে করেই আপনি এটিকে বহন করতে পারবেন।

স্কুটারটিকে যদি একটা স্যুটকেসে ভরে যেখানে-সেখানে বেড়াতে যেতে পারতেন, কেমন হতো তাহলে? মন্দ হতো না, কী বলেন! পার্কিস স্পেসের ঝামেলা নেই! জাপানিজ অটোমেকার হোন্ডা কিন্তু এবার সেরকমই একটা ইলেকট্রিক স্কুটার নিয়ে এসেছে। Honda Motocompacto নামের সেই ইলেকট্রিক স্কুটারটি ফোল্ডেবল। উদ্ভট আকারের সেই ই-স্কুটার আপনি স্যুটকেসের মতোই বহন করতে পারবেন। আসলে এই স্যুটকেস আকারের ইলেকট্রিক স্কুটারটিকে হোন্ডা অনেকটাই তাদের পুরোনো মডেলগুলির মতো করেছে।

১৯৮০ সালের দিকে জাপানিজ ম্যানুফ্যাকচারার হোন্ডার কাছেই এমন একটি স্কুটার ছিল, যার বুটস্পেসে  পুরো গাড়িটাই ফিট করে যেত। হোন্ডার মটোকম্প্যাক্টো ইলেকট্রিক স্কুটারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এটি কম্প্যাক্ট এবং ফোল্ডেবল। অর্থাত্ আপনি এটিকে ফোল্ড করেও যেখানে সেখানে ঘুরতে পারবেন। অনেক সময়ই আমাদের অনেকটা দূরে যেতে ট্রেন বা বাস ধরতে হয়। কিন্তু ট্রেন বা বাস থেকে নেমেই আবার গন্তব্যে পৌঁছাতে অটো বা রিকশা ধরতে হয় আমাদের। এখন একবার ভেবে দেখুন, এরকম যদি একটা স্যুটকেসের মতো স্কুটার আপনার কাছে থাকে, তাহলে আপনি তা যেখানে খুশি নিয়ে যেতে পারেন।

Honda Motocompacto ইলেকট্রিক স্কুটারটি খুবই হালকা, এর ওজন মাত্র ১৯কেজি। হাতে করেই আপনি এটিকে বহন করতে পারবেন। হন্ডার জানিয়েছে, শহরে যাতায়াত করার জন্য ইলেকট্রিক স্কুটারটি যথার্থ। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, একজন ব্যক্তির হাঁটার গতির অন্তত তিনগুণ গতিতে দৌড়াতে পারে মটোকম্প্যাক্টো ইলেকট্রিক স্কুটারটি। মাত্র ৭ সেকেন্ডের মধ্যেই ই-স্কুটারটি তার সর্বাধিক স্পিড ছুঁতে পারে। তবে এর সিট ক্যাপাসিটি মাত্র একটাই ১২০ কেজি পর্যন্ত ওজন বহন করতে পারে স্কুটারটি।

এই ফোল্ডেবল ইলেকট্রিক স্কুটারে ফ্রন্ট-হুইল মোটর রয়েছে। সেই মোটর ০.৬ বিএইচপি পাওয়ার এবং ১৬এনএম পিক টর্ক দিতে পারে। ইলেকট্রিক স্কুটারটি ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স ফিচারও অফার করছে। রয়েছে একটি ৬.৮ এএইচ ব্যাটারি প্যাক, যা এক চার্জে ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ দিতে পারে। তবে স্কুটারটিকে চার্জ করতে গেলে আপনাকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় দিতে হবে। সাধারণ ১১০ ভোল্ট চার্জিং সকেটের সাহায্যেই স্কুটারটি চার্জ করা যাবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।


img

মহাবিশ্বের রহস্য!

প্রকাশিত :  ০৬:৪৮, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

রেজুয়ান আহম্মেদ

সন্ধ্যার আকাশ ধীরে ধীরে অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। গ্রামের প্রান্তের ছোট্ট একটি মাটির ঘরের বারান্দায় বসে রাকিব আর তার বন্ধুরা মহাবিশ্বের রহস্য নিয়ে আলোচনা করছে। রাকিব ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগী। কিন্তু তার বাবা-মায়ের ধর্মীয় অনুশাসন তাকে ইসলাম সম্পর্কে জানতেও আগ্রহী করে তুলেছে। এই দুই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তার মনে এক অদ্ভুত সমন্বয় তৈরি করেছে।

আজকের আড্ডায় রাকিবের বন্ধুরা মহাবিশ্ব নিয়ে তার মতামত জানতে চাইছিল। রাকিব বলল, “বিজ্ঞান বলে, মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে একটি বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে, যাকে আমরা বিগ ব্যাং নামে জানি। এটি প্রায় চৌদ্দ বিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল। সেই সময়, মহাবিশ্ব ছিল একটি অতি ঘন এবং গরম বিন্দুর মতো। এরপর এক বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে এটি প্রসারিত হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তা ঠান্ডা হয়েছে এবং গ্যালাক্সি, নক্ষত্র, গ্রহ ইত্যাদি সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এটিকে ‘বিগ ব্যাং তত্ত্ব’ বলে অভিহিত করেন।\"

রাকিব একটু থেমে বন্ধুর দিকে তাকিয়ে বলল, “তোমরা কি জানো, কোরআনেও এ বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে?”

তার বন্ধু রিয়াদ কৌতূহলী হয়ে বলল, “সত্যি? কোরআনে কীভাবে এসব কথা বলা হয়েছে?”

রাকিব তার পকেট থেকে একটি ছোট কোরআন বের করল। সূরা আম্বিয়ার ৩০ নম্বর আয়াতটি খুঁজে বের করে পড়তে শুরু করল:

“তারা কি লক্ষ্য করে না যে আমি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে একত্রিত অবস্থায় সৃষ্টি করেছি, তারপর আমি তা পৃথক করে দিয়েছি।”

রাকিব ব্যাখ্যা করল, “এখানে বলা হয়েছে, প্রথমে সবকিছু একসাথে ছিল। পরে আল্লাহ তা পৃথক করেছেন। বিজ্ঞান যা বলে, প্রথমে সবকিছু এক বিন্দুতে ছিল, তারপর একটি বিস্ফোরণে তা ছড়িয়ে পড়ল। এটি কি অবাক করার মতো নয় যে এই আয়াতটি চৌদ্দশ বছর আগের, যখন কোনো বিজ্ঞান ছিল না?”

বন্ধুরা চুপ হয়ে গেল। তাদের মনে যেন এক অদ্ভুত আলোড়ন সৃষ্টি হলো। রিয়াদ বলল, “কিন্তু, রাকিব, কীভাবে সম্ভব? এতদিন আমরা মনে করতাম বিজ্ঞান আর ধর্ম একে অপরের বিরোধী।”

রাকিব হেসে বলল, “আমিও একসময় তাই ভাবতাম। কিন্তু যখন আমি গভীরভাবে পড়াশোনা শুরু করলাম, দেখলাম ধর্ম আর বিজ্ঞান আসলে একে অপরের পরিপূরক। ইসলাম বারবার মানুষকে চিন্তা করতে, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করতে এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য উৎসাহিত করে। এর মানে ধর্ম কখনোই বিজ্ঞানের শত্রু নয়; বরং এটি বিজ্ঞানকে বোঝার একটি মাধ্যম।”

রিয়াদ বলল, “তাহলে তুমি বলছ কোরআনে আরও বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে?”

রাকিব বলল, “অবশ্যই। যেমন ধরো, কোরআনে বলা হয়েছে সূর্য আর চাঁদ নির্দিষ্ট পথে চলাচল করে। বিজ্ঞান এটি অনেক পরে প্রমাণ করেছে। আবার, পানির মধ্যেও জীবনের অস্তিত্ব সম্পর্কে কোরআনে উল্লেখ রয়েছে। আরও একটি উদাহরণ দিই—সূরা আয-যারিয়াতে বলা হয়েছে: ‘আমি বায়ুকে প্রেরণ করি, যা বীজবাহক।’ আজ বিজ্ঞান বলছে, বায়ু কেবল তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটায় না, এটি প্রকৃতির বীজবাহক হিসেবেও কাজ করে। চিন্তা করো, এগুলো কত আশ্চর্যজনক!”

বন্ধুরা যেন নতুন এক জগতের সঙ্গে পরিচিত হলো। তাদের মনে প্রশ্নের ঝড় উঠল। রাত বাড়তে থাকল, কিন্তু তাদের আলোচনা থামল না।

কিছুদিন পরে রিয়াদ নিজেও কোরআন এবং বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা শুরু করল। সে বুঝতে পারল কোরআন শুধু ধর্মীয় নির্দেশনা দেয় না, এটি মানুষকে জ্ঞান অন্বেষণেও উৎসাহিত করে।

রিয়াদ একদিন রাকিবকে বলল, “তুমি জানো, আমি আগে এসব তেমন গুরুত্ব দিতাম না। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, ধর্ম মানে শুধু উপাসনা নয়। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পথ দেখায়।”

রাকিব খুশি হয়ে বলল, “তুমি ঠিক বলেছ। আমরা যদি কোরআন থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজ্ঞানের পথে হাঁটি, তাহলে আমাদের জীবন আরও আলোকিত হবে। ইসলাম চায় মানুষ চিন্তা করুক, জ্ঞান অর্জন করুক।”

এরপর রাকিব আর রিয়াদ মিলে একটি দল গঠন করল, যেখানে তারা কোরআন এবং বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করত। তারা স্কুল-কলেজে সেমিনার করত এবং তরুণদের উৎসাহিত করত ধর্ম ও বিজ্ঞানের সমন্বয় নিয়ে ভাবতে। তাদের লক্ষ্য ছিল মানুষকে চিন্তার জগতে নিয়ে যাওয়া।

তাদের এই প্রচেষ্টা কেবল জ্ঞানের দ্বার খুলে দিচ্ছিল না, বরং ধর্ম ও বিজ্ঞানের বিভেদ কমাচ্ছিল। মানুষ বুঝতে শুরু করল, ধর্ম কোনো বাধা নয়; বরং এটি এক অনন্ত প্রেরণা, যা মানুষকে মহাবিশ্বের গভীর রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করে।

এইভাবেই রাকিব আর রিয়াদ তাদের জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু করল—একটি অধ্যায়, যেখানে ধর্ম আর বিজ্ঞান হাত ধরে মানুষকে নতুন দিশা দেখায়।




রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম