img

গাজা সম্পর্কিত মার্কিন নীতি প্রত্যাখ্যান করলেন আরব নেতারা

প্রকাশিত :  ০৫:১০, ০৫ নভেম্বর ২০২৩

গাজা সম্পর্কিত মার্কিন নীতি প্রত্যাখ্যান করলেন আরব নেতারা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলের অব্যাহত বোমা হামলার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি গ্রহণ করতে পারেননি আরব নেতারা। তারা মনে করছেন, অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাতে একমত হয়নি।

জর্ডানের রাজধানী আম্মানে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন যুদ্ধবিরতির জন্য জর্ডান ও মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যথাক্রমে আয়মান সাফাদি এবং সামেহ শুকরির অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যঅন করেন।

সাফাদি ইসরাইলি অব্যাহত হামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‌\'আমরা একে আত্মরক্ষা বলে গ্রহণ করতে পারছি না। যা চলছে, তা কোনো অবস্থাতেই যৌক্তিক বলে গ্রহণ করা যেতে পারে ন। এমনটা চলতে তা ইসরাইলের নিরাপত্তা বয়ে আনবে না। এমন হামলা এই অঞ্চলে শান্তি আনবে না।\'

তবে ব্লিনকেন বলেন, যুদ্ধবিরতি হলে \'হামাস পুনরায় সংগঠিত হতে এবং আবার হামলা\' চালানোর সুযোগ পাবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির বদলে মানবিক বিরতির আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে গাজায় সাহায্য পাঠানো যেতে পারে এবং হামাসের হাতে আটক বন্দীদের মুক্ত করা যেতে পারে।

গাজায় অব্যাহত হামলার মুখে ওয়াশিংটন এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের মধ্যে বিভাজন দেখা দিলো। ইসরাইল ৯ অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করতে ওঠেপড়ে লেগেছে ইসরাইল। কিন্তু চার সপ্তাহ ধরে অব্যাহত ভয়াবহ হামলার মধ্যেও তিনি অক্ষত রয়েছেন।

শনিবার ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গাজায় তার দেশের ৯ সৈন্য নিহত হওয়ার খবর স্বীকার করার পর সিনওয়ারের বিষয়টি আবার সামনে আনেন।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, \'চলমান যুদ্ধের পর গাজায় হামাস আর থাকবে না। গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলে আর কোনো নিরাপত্তা হুমকি থাকবে না।\'

ইসরাইল অবশ্য কেবল সিনওয়ার নয়, হামাসের অন্যান্য নেতার বাড়িতেও হামলা চালাচ্ছে। শনিবার তারা হামাসের ইসমাইল হানিয়ার গাজাস্থ বাড়িতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এ সময় হানিয়ার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন কিনা জানা যায়নি। তিনি অবশ্য, ২০১৯ সাল থেকে তুরস্ক ও কাতারে বসবাস করে আসছেন।

সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে যাচ্ছে ৪৩ দেশ

প্রকাশিত :  ০৮:০৬, ১৫ মার্চ ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সারাবিশ্বে হৈচৈ ফেলে দিচ্ছেন। এবার সেই ধারাবাহিকতায়  ৪৩টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ওপর নানা মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

জানা গেছে, তিনধাপের নিষেধাজ্ঞার নিয়মাবলী তৈরি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। 

শনিবার (১৫ মার্চ) নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। 

প্রতিবেদনে এই পরিকল্পনা নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা কর্মকর্তাদের বরাতে জানানো  হয়, এবারের নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আরোপিত বিধিনিষেধের চেয়েও ব্যাপক হতে পারে। 

অবশ্য, রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার অধীনে পড়তে যাচ্ছে ৪১টি দেশ। সংবাদ সংস্থাটি তাদের হাতে আসা অভ্যন্তরীণ এক মেমোর বরাতে এই সংবাদ প্রকাশ করেছে।

এই দেশগুলোকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, দ্বিতীয় ভাগের দেশগুলোর ওপর নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ ও তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে।

রয়টার্সের তথ্য মতে, সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাচ্ছে আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া, কিউবা ও উত্তর কোরিয়া।

তবে, নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচ দেশ ছাড়াও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ভুটান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, দ্বিতীয় ভাগে বা আংশিক নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা দেশগুলো হলো—ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার ও দক্ষিণ সুদান। এই ভাগের দেশগুলোর ক্ষেত্রে ভ্রমণ ও শিক্ষার্থী ভিসার পাশাপাশি অন্যান্য অভিবাসী ভিসার ওপরও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে কিছু ব্যতিক্রমও থাকবে।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই ভাগে আরও থাকছে বেলারুশ, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন ও তুর্কমিনিস্থান।

তৃতীয় ভাগে রয়টার্সের তালিকায় রয়েছে ২৬টি দেশ এবং নিউইয়র্ক টাইমসের তালিকায় রয়েছে ২২টি দেশ। এসব দেশের নাগরিকদের মার্কিন ভিসা আংশিকভাবে স্থগিত করা হতে পারে। তবে দেশগুলো যদি ৬০ দিনের মধ্যে ভিসা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ঘাটতি দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করা হবে।

এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই তালিকা পরিবর্তন হতে পারে। এটি এখনো মার্কিন প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সম্মতিও প্রয়োজন।

তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। কয়েকবার সংশোধন করার পর ২০১৮ সালে সেটি দেশটির সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়। দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর পরপরই তিনি কঠোর অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।