img

যেসব খাবার আপনার খিদে বাড়ায়

প্রকাশিত :  ০৯:২১, ০৭ নভেম্বর ২০২৩

যেসব খাবার আপনার খিদে বাড়ায়

আপনার ক্ষুধাপ্রবণতা বাড়িয়ে৷ খাই খাই প্রবণতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই কিছু খাবার অনেক প্রভাব রাখে। যদিও আমাদের অনেকেরই জানা নেই এই খাবারগুলো আসলে কতটা প্রভাব ফেলে। প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট ও চিনিযুক্ত খাবার খেলে এই অনুভূতি বেশি কাজ করে। কোন কোন খাবারে এমন প্রবণতা কাজ করে চলুন জেনে নেই: 

পেস্ট্রি

ছোট আকারের এই মিষ্টি খাবার দেখতেও আকর্ষণীয় লাগে। তবে মুডি বলেন, “এই খাবারে থাকে সরল কার্বস। ফলে স্বাদে তৃপ্তি দিলেও খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়।”

আর যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন এবং আঁশ না থাকায় দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে আবার কমিয়ে দেয়।  

মুডি বলেন, “রক্তের শর্করার মাত্রা কমার পরপরই ক্ষুধা অনুভত হয় আর ক্লান্তি লাগে। তাই এই ধরনের মিষ্টি খাবারের সাথে সিদ্ধ ডিম বা টক দই খেতে পারলে বাজে প্রভাব কাটানো যায়।”

ক্রোস্যান্ট

এই খাবার দেখতে বড় লাগলেও আসলে ফাঁপা অংশের পরিমাণ বেশি। ফলে খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার খিদা লেগে যায়।

“সাদা ময়দা দিয়ে তৈরি যে কোনো খাবারেই সরল কার্বোহাইড্রেইটস থাকে। যা কিনা দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে খরচ হয়ে যায়। যে কারণে পেস্ট্রির মতো এটাও খাওয়ার পর আবার খাওয়ার ইচ্ছে যাগে”- বলেন মুডি।

কম চর্বিযুক্ত দই

সাধারণভাবে দই স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে ধরা হয়। তবে কম ননীযুক্ত ও আলাদা করে মিষ্টি দেওয়া দই শরীরে বাজে প্রভাব ফেলতে পারে। আর খিদাও বাড়িয়ে দেয়।

তবে টক দই এই ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর। কারণ এতে থাকে প্রোটিন ও প্রাকৃতিক চিনি যাকে বলে ল্যাক্টোজ।

দই খাওয়ার ক্ষেত্রে কম পরিশোধিত ও ননিযুক্ত দই খাওয়ার পরামর্শ দেন এই পুষ্টিবিদ।

অ্যালকোহল

যদিও এটা কোনো খাবার না। তবে পানীয় হিসেবে মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।

মুডি ব্যাখ্যা করেন, “দেহ অ্যালকোহল হজম করতে গিয়ে গ্লুকোজ নিঃসরণ বাড়ায়, যা যকৃতের কার্যক্রম ধীর করে দেয়। এর বিপরীত প্রভাবে রক্তে চিনির মাত্রা কমে যায়। কোনো কোনো সময় রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে গিয়ে দ্রুত কমে আসে।”

রক্তে ঘন ঘন চিনির মাত্রা ওঠা নামার কারণে মুখরোচক খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগতে থাকে। আর এই সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয় যদি অ্যালকোহল কোনো মিষ্টি পানীয়র সাথে মিশিয়ে খাওয়অ হয়- যেমন চিনিযুক্ত কোমল পানীয়।

এছাড়া অ্যালকোহলে থাকা কার্বোহাইড্রেইটস ক্ষুধার মাত্রা বাড়ায়।

আলুর চিপস

হাত ভর্তি করে চিপস খেতে বেশ লাগে। তবে সব আলুর চিপসেই থাকে লবণ, যা খাবার ইচ্ছে বাড়িয়ে দেয়।

মুডি বলেন, “প্রায় সব খাবারের স্বাদের জন্য লবণ প্রয়োজন হয়। আর লবণ লালাগ্রন্থির কার্যক্রম বাড়িয়ে দেয়। আর মুখে অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ মানে আরও মজার স্বাদের খাওয়ার ইচ্ছে তৈরি হয়।”

এছাড়া পরিতৃপ্ত থাকার হরমোন ডোপামিন নিঃসরণ করতে সহায়তা করে লবণ।

তাই তৃপ্তি পেতে আলুর চিপস খাওয়ার পরও আরও খেতে ইচ্ছে হতে থাকে। সেই সাথে পরিশোধিত কার্বস ও প্রোটিনের পরিমাণ কম থাকায় হজমও হয়ে যায় দ্রুত। ফলে দ্রুতই খিদা লেগে যায়- ব্যাখ্যা করেন মুডি।

সাদা রুটি ও ভাত

সাদা ভাত খারাপ না। তবে বাদামি চালের ভাত বরং বেশি ‍উপকারী।

বাদামি চাল প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হয় সাদা চাল। চালের ওপর থাকা বাদামি অংশ ‘ব্র্যান’ বা তুষ পরিশোধনের সময় পলিশ করে উঠিয়ে চকচকে সাদা চাল প্রস্তুত করা হয়। যে কারণে সাদা চাল খেতেও নরম লাগে।

মুডি বলেন, “চালের বাদামি অংশেই থাকে আঁশ ও ভিটামিন বি। আর এই ভিটামিন থিয়ামিন হিসেবে পরিচিত। যেটার অভাবে নানান রোগ দেখা দিতে পারে।”

আর বাদামি চালে থাকা আঁশও গুরুত্বপূর্ণ। যা সাদা চালে থাকে না। কারণ আঁশ ছাড়া সাদা চাল খাওয়ার কারণে ইন্সুলিনের দ্রুত নিঃসরণে হজমও হয় দ্রুত। আর তাড়াতাড়ি পেট খালি হওয়ার কারণে দ্রুত ক্ষুধার্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।

একইভাবে সাদা রুটিও তাই। কারণ যে সাধা শষ্য থেকে আটা বা ময়দা প্রস্তুত করা হচ্ছে রুটি বা পাউরুটি তৈরির জন্য সেখানেও থাকছে না আঁশ।

যে কারণে সাদা রুটি দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচ খাওয়ার পরও খিদা লাগে। তাই খেতেই যদি হয় তবে চর্বিহীন মাংসের সঙ্গে সাদার রুটি দিয়ে তৈরি স্যান্ডউইচ খাওয়ার পরামর্শ দেন, মার্কিন পুষ্টিবিদ।

সাদা পাস্তা

কার্বোহাইড্রেইটস’য়ের উৎস হিসেবে বাজারে সাদা ও বাদামি- দুই ধরনের পাস্তা পাওয়া যায়। তবে খেতে বেশি মজা লাগে সাদা পাস্তা।

সাদা পাস্তা তৈরি হয় পরিশোধিত ময়দা থেকে। মানে হল সেটা থাকে কম আঁশ, ভিটামিন আর খনিজ।

“কম আঁশযুক্ত পাস্তা খাওয়ার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই খাওয়ার পরও আরও খেতে ইচ্ছে করে”- ব্যাখ্যা করেন মুডি।

অন্যদিকে পরিশোধন করা ‘হোল-হুইট পাস্তা’ ধীরে হজম হয়, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

জুস

ফল খাওয়া উপকারী। তবে সেটা থেকে তৈরি শুধু জুস বা রসে থাকেনা ফলের আঁশ। বরং ফলের শর্করা থেকে যায়। যে কারণে রক্তে দ্রুত ফলের রসের শর্করা মিশে গিয়ে রক্তে চিনির পরিমাণ যেমন বাড়ায়, আবার দ্রুত কমিয়েও দেয়।

শর্করার এই দ্রুত ওঠা-নামার কারণে পেটের পরিতৃপ্ততা দ্রুত হারায়। তাই ফলের রস বা জুসের চাইতে আস্ত ফল খাওয়া উপকারী আর পেট ভরা অনুভূতিও দেয় অনেকক্ষণ।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ

আলু দীর্ঘক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দিতে পারে। তবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ আকারে নয়।

কারণ এতে থাকে পরিশোধিত কার্বস ও লবণ বা সোডিয়াম। যা স্বাদের তৃপ্তি দিলেও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে পারে না- ব্যাখ্যা করেন মুডি।


img

আবেগ চেপে রাখলে বাড়ে মানসিক ব্যাধি

প্রকাশিত :  ১০:৩৭, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৫৮, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রকৃতিগতভাবে মানুষ আবেগপ্রবণ। যদিও এ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারা অনেক বড় একটি গুণ, যা সবার মধ্যে থাকে না। তবে আবেগ চেপে রাখা কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মনের কথা প্রকাশ করাটাও জরুরি। তবে অনেকেই আছেন, যারা নিজেদের চিন্তাভাবনা কিংবা অনুভূতি কারও সঙ্গে শেয়ার করতে চান না। দীর্ঘদিনের এ অভ্যাসে বাড়ে মানসিক ব্যাধির ঝুঁকি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে যদি আপনি আবেগ প্রকাশ না করেন, তখন একাকিত্ব ও বিষন্নতায় ভুগতে পারেন।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক সম্পর্ক বোঝার ক্ষমতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে গভীর সম্পর্ক আছে। যা বোঝা প্রত্যেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক জ্ঞান হলো একটি জটিল মানসিক প্রক্রিয়া। এটি আমাদের অনুভূতি, উদ্দেশ্য, বিশ্বাস ও সামনের মানুষের চিন্তা করার উপায়গুলো বুঝতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, কারও যদি সামাজিক দক্ষতার ঘাটতি থাকে তাহলে তা অনেক ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন বিষন্নতা, বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা সিজোফ্রেনিয়ার মতো সমস্যা। বিষন্নতায় মানুষ অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করে। এমনকি সবার সঙ্গে যোগাযোগে আগ্রহও হারিয়ে ফেলে।

অন্যদিকে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে, মেজাজের পরিবর্তন সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অস্থিরতা হয়ে দেখা দেয়। তবে সিজোফ্রেনিয়ায়, বিভ্রম বা হ্যালুসিনেশনের মতো উপসর্গগুলো দেখা যায়। বাইপোলার ডিসঅর্ডার হলে, আক্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যদের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে অসুবিধা বোধ করেন। অন্যরা কি বলছে, তা সঠিকভাবে বুঝতে অক্ষম হন। শুধু তাই নয়, তাদের অনুভূতিগুলো সঠিকভাবে প্রকাশ করতেও দ্বিধাবোধ করেন তারা। ফলে তাদের বন্ধু তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, মানসিক ব্যাধি সামাজিক দক্ষতায় প্রভাব ফেলে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সামনের মানুষের আবেগ বুঝতে ও নিজস্ব আবেগগুলো সঠিকভাবে প্রকাশ করতে অসুবিধা বোধ করেন।

আপনিও যদি মানসিক কোনো সমস্যার মধ্যে দিয়ে যান তাহলে অবশ্যই শরীরচর্চা ও মেডিটেশন করুন। কারণ ব্যায়াম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমরা সামনের মানুষে আবেগ বুঝতে সক্ষম হই। তাই সুস্থ থাকতে ব্যায়াম করুন।