
শোকাবহ জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় চার নক্ষত্রের স্মরণে ইউকে বিডি টিভির ভার্চুয়াল শোক সভা অনুষ্ঠিত

বদরুল মনসুর, কার্ডিফ (ওয়েলস) থেকেঃ শোকাবহ জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় চার নক্ষত্রের স্মরণে শোকার্ত হৃদয়ের শ্রদ্ধা শীরনামে ইউকে বিডি টিভির উদ্যোগে গত ৫ ই নভেম্বর রোববার এক ভার্চুয়াল শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর সভাপতিত্বে এবং ইউকে বিডি টিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিশিষ্ট সাংবাদিক খায়রুল আলম লিংকন এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত শোক সভায় প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সুলতান মাহমুদ শরীফ. যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরী, গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মইনুল হক চৌধুরী হেলাল, নিউইয়র্ক ষ্টেইট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আজমল শাহীন, নিউপোর্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ তাহির উল্লাহ, ম্যানচেস্টার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মীরা গোলাম মোস্তফা, নিউপোর্ট যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহ শাফি কাদির, ওয়েলস ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুল হক মনসুর ও মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মোহাম্মদ ফয়ছল মনসুর সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভার শুরুতেই পবিত্র কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ মিফতাউর রহমান ও পরে পরম করুণাময় মহাণ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা সহ সকল শহীদানদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন কার্ডিফ জালালিয়া মসজিদের ঈমাম ও খতীব মাওলানা আব্দুল মোক্তাদির।
আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, “১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ও ৩রা নভেম্বর প্রতিবছর আমাদের শোকাবহ স্মৃতিকে আরো শোকার্ত করে তোলে। বাংলার আকাশ—বাতাস, মাটি ও স্বাধীনতাকামী মানুষ এ বিষাদ স্মৃতি কোনোদিন ভুলতে পারবে না। যে কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত অর্জনের পথে বাধা তৈরি করেছে, তার মধ্যে অন্যতমটি ঘটেছিল ১৯৭৫ সালের এই দিনে। কিছু কিছু হত্যাকাণ্ড জাতির মেরুদণ্ডকে ভেঙে দেয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে “জেল হত্যা’ সেইরকমই একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বাংলাদেশ স্বাধীনতা পর চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগষ্ট জাতির জনককে সপরিবার হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির ইতিহাসে যে কলংকময় অধ্যায় এর সূচণা করছিলো সেই ঘাতকচক্র বাঙালী জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ জাতির চার মহান সন্তানকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করে জাতির ইতিহাসে দ্বিতীয় কলংকজনক অধ্যায়ের জন্ম দেয়। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন জঘন্য,কলঙ্কিত,হৃদয়বিদারক নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।”
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরী বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারারুদ্ধ থাকাকালে বা তাঁর অবর্তমানে ও নিদর্শিত পথে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী অন্যতম পরিচালক হিসাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাতীয় চার নেতাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দল—মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অপূর্ব দক্ষতার সাথে স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকার পরিচালনা ও পরম নিষ্ঠার সাথে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদ দান ও দু ‘লক্ষ মা—বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর আমরা পেয়েছিলাম বিজয়ের লাল বৃত্ত সবুজ পতাকা তথা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মইনুল হক চৌধুরী হেলাল বলেন, “জাতির স্বাধীন বাংলাদেশের যে কয়টি দিন চিরকাল কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে, তার একটি ৩ নভেম্বর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, একনিষ্ঠ ঘনিষ্ঠ সহচর, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দানকারী জাতীয় চার নেতা বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, ও এ এইচ এম কামরুজ্জামান ছিলেন৷ জাতির চার উজ্জ্বল নক্ষত্র যারা বারবার জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নিউইয়র্ক ষ্টেইট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আজমল শাহীন বলেন, “আজকের দিনে রাজনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে হলে এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের পথে আমরা আমাদের যে চেতনাকে লালন করি, সেজন্য চিরতরে হত্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান, সাবেক ছাত্রনেতা ও কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ মকিস মনসুর বলেন, “পনেরই অগাস্ট একটা পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়াই ছিল তাদের লক্ষ্য এবং তেসরা নভেম্বর জেলের অভ্যন্তরে যে হত্যাকাণ্ড, সেটা আসলে ১৫ অগাস্টের হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা, একই সূত্রে গাঁথা। তেশরা নভেম্বর আমাদের জাতীয় চার নেতা, তাদের নিষ্ঠুরভাবে কারা অভ্যন্তরে হত্যা করা হয়। এই হত্যার রাজনীতির ধারায় ২০০৪ সালের একুশে অগাস্ট হত্যাকাণ্ড।”