বিশ্বকাপ ফাইনাল জিতবে কোন দল? ভারত না অস্ট্রেলিয়া?
আহমেদাবাদের বাইশ গজে আজ ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মহারণ ৷ বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে উত্তজনায় টগবগ করছে গোটা দেশ ৷ ফাইনাল ম্যাচের আর ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই। দেশের মাটিতে দ্বিতীয় বার বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে ভারত৷ অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ষষ্ঠবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ। কিন্তু কার মাথার উঠবে সেরার শিরোপা? কে ছিনিয়ে নেবে ট্রফি?
শক্তিমত্তায় দুই দলই প্রায় সমানে সমান, তাই লড়াইটা হতে পারে হাড্ডাহাড্ডি। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ১ লাখ ৩২ হাজার দর্শকের সামনে কারা উঁচিয়ে তুলবে শিরোপা?
এই ভেন্যুতেই বিশ্বকাপে দুঃসহনীয় স্মৃতি আছে অস্ট্রেলিয়ার। ২০১১ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের দাপটের কাছে এখানেই আত্মসমর্পণ করেছিল অজিরা। যুবরাজ সিংয়ের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ৫ উইকেটের হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় রিকি পন্টিংয়ের দল।
তবে, প্রসঙ্গ যখন ফাইনালের তখন পরিসংখ্যান বলছে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে ১-০ তে। বিশ্বকাপে লড়াইয়ের হিসেব আসলেও এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। তাতে অস্ট্রেলিয়ার ৮ জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় ৫টিতে।
২০০৩ সালে জোহানেসবার্গের ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপের ফাইনাল। দিনের শুরুতে টস জেতেন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। তবে ব্যাট হাতে ম্যাচের আসল নায়ক হয়ে ওঠেন টসে হারা অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং। ম্যাথু হেইডেন ও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের উদ্বোধনী জুটি ১৪ ওভারের মধ্যে ১০৫ রান তুলে দিলে অস্ট্রেলিয়াকে সাড়ে তিনশর ওপারে নিয়ে যান পন্টিং।
দ্বিতীয় উইকেট ডেমিয়েন মার্টিনকে (৮৮*) সঙ্গী করে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ২৩৪ রানের জুটি। অস্ট্রেলিয়ার ২ উইকেটে ৩৫৯ রানের মধ্যে ১৪০ রানই পন্টিংয়ের। ১২১ বল খেলা ইনিংসটিতে ছিল ৪টি চার ও ৮টি ছয়। রান তাড়ায় বড় সংগ্রহের পেছনে ছুটতে গিয়ে ৩৯.২ ওভারে ২৩৪ রানে থেমে যায় ভারতের ইনিংস। ফলে ১২৫ রানের বিশাল জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সেবার শিরোপা ঘরে তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া।
২০ বছর পর আরও একবার প্রস্তুত ফাইনালের মঞ্চ। আবারও ক্রিকেট ভক্তরা দেখতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া-ভারতের লড়াই।
সময়ে বদলেছে, সংস্কার হয়েছে ভেন্যু। বদলে গেছে দুই দলের চিত্র। ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলেরই গড়ে উঠেছে নতুন এক প্রজন্ম। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা রাহুল দ্রাবিড় যে এখন ভারতের কোচ। রোববার আহমেদাবাদের এই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেই লড়বে দুই ক্রিকেট পরাশক্তি।
চলতি আসরে গ্রুপ পর্যায়ে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দুই হারের পর টানা আট ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বিপরীতে লিগপর্বে প্রতিটি ম্যাচেই রোহিতের দল নিজেদের মতো করেই সাজাতে পেরেছিল চিত্রনাট্য। ফাইনালেও ভাগ্য বিধাতা তাই লিখে রেখেছেন কিনা জানা যাবে আজ।
ভারত ও অস্ট্রেলিয়া, দু’দেশের ক্রিকেটারদের ভাগ্য পরীক্ষা করে জ্যোতিষীরা বলছেন, পাল্লা ভারী ভারতেরই৷ কারণ, ভারতীয় ক্রিকেটারদের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান অনেক বেশি শক্তিশালী। আর ভারতকে সব থেকে বেশি সুবিধা দিচ্ছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তাঁর গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান অনেকটা ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো। ফলে ১৯ নভেম্বর আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে রোহিতের হাতে ট্রফি ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি৷
জ্যোতিষিরা আরও জানাচ্ছেন, বিরাট কোহলি, শুভমন গিল, শ্রেয়স আয়ার, লোকেশ রাহুল, মহম্মদ শামি ও যশপ্রীত বুমরার গ্রহগত অবস্থানও বেশ ভালো৷ তাঁদের শুক্র, ইউরেনাস ও নেপচুন ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে ভারতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারেরই মঙ্গল বিশেষ ভালো নয়। তাই ফিটনেসের উপর বিশেষ নজর দিতে হবে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ভালো হবে না৷
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থানও বেশ স্ট্রং। তবে তা ভারত অধিনায়ক রোহিতের থেকে বেশি নয়৷