উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার
উত্তাপ ছড়ানো সুপার ক্লাসিকোতে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার। বিশ্বচ্যাম্পিয়নরাই মাঠ ছেড়েছে বিজয়ী বেশে এই ম্যাচে। টানা দুই হারের ক্ষত নিয়ে মারাকানায় পা রেখেছিল ব্রাজিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। কিন্তু ঘরের মাঠের ব্যাপক সমর্থনেও বদলালো না ব্রাজিলের গল্পটা। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারটাই সঙ্গী ব্রাজিলের। তার সঙ্গে এক লালকার্ড ব্রাজিলের ক্ষতটাই কেবল বাড়িয়েছে।
পুরো ম্যাচে গোল হয়েছে একটিই। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার।
খেলার প্রথমার্ধ ছিল গোলশুন্য। দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ছিল ব্রাজিলেরই। একাধিকবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে স্বাগতিকরা। তবে ঘরের মাঠে দর্শকদের আনন্দ দেওয়া হয়নি সেলেসাওদের। খেলার ধারার বিপরীতেই ম্যাচের প্রথম গোল করে বসে আর্জেন্টিনা। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে লাফিয়ে হেড করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। বল ঠেকাতে ব্যর্থ অ্যালিসন। তাতেই লিড হয় বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
তবে এ দিন ম্যাচ শুরু হওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষেই শুরু হয় প্রথম ঝামেলা। ব্রাজিলের মারাকানায় উপস্থিত আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ব্রাজিলের সমর্থকরা। দ্রুতই সেখানে ছুটে যান স্থানীয় পুলিশের সদস্যরা। ঘটনার জের ধরে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি পুরো দল নিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ম্যাচের লাইভ বিবরণীতে জানায়, ‘আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে ব্রাজিলের সমর্থকেরা দুয়ো দিতে শুরু করলে ঝামেলার শুরু হয়। আর্জেন্টিনা দলের সদস্যরা এবং ব্রাজিলের অধিনায়ক মার্কিনিওস দর্শকদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এরপর মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার বাকি খেলোয়াড়রা মাঠ ছেড়ে চলে যান। ঝামেলা শেষে যখন খেলা যখন শুরু, ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে পুরো আধঘন্টা।
ম্যাচের সময়েও ছিল এই উত্তেজনার রেশ। শুরুর ১৫ মিনিট যেন শারীরিক ভাষা প্রয়োগেই ব্যস্ত ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরমাঝে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাই অবশ্য চড়াও হয়েছেন বেশি। ম্যাচের ১৫ মিনিট না গড়াতেই কড়া ট্যাকল করে কার্ড দেখেন ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল জেসুস এবং রাফিনহা। ৩৪ মিনিটে আবার কার্ড দেখেন ব্রাজিলের কার্লোস অগাস্টো।
এমন কড়া ট্যাকেলের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিল ফুটবলটাই। ব্রাজিলের রক্ষণে দুই-একবার হানা দেয়ার চেষ্টা করেছিল বটে, তবে তাতে খুব একটা সুফল আসেনি। ম্যাচের ২৮ মিনিটে একবার পেনাল্টির আবেদন তুলেছিলেন জিওভানি লো সেলসো। তবে তাতে সাড়া দেননি রেফারি। আর্জেন্টিনাও এর আগে পরে কোন সুবিধাই করতে পারেনি।
ম্যাচের সেরা সুযোগ এসেছে একেবারে শেষের আগে। ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি এদিন শুরু থেকেই ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৪তম মিনিটে তিনিই এগিয়ে দিতে পারতেন দলকে। দারুণ এক হাফভলিতে বল জালেই জড়াতে পারতেন। তবে গোললাইন থেকে তা ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত রাখেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার কুটি রোমেরো।