img

উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার

প্রকাশিত :  ০৪:২১, ২২ নভেম্বর ২০২৩

উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার

উত্তাপ ছড়ানো সুপার ক্লাসিকোতে শেষ হাসি আর্জেন্টিনার।  বিশ্বচ্যাম্পিয়নরাই মাঠ ছেড়েছে বিজয়ী বেশে এই ম্যাচে। টানা দুই হারের ক্ষত নিয়ে মারাকানায় পা রেখেছিল ব্রাজিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। কিন্তু ঘরের মাঠের ব্যাপক সমর্থনেও বদলালো না ব্রাজিলের গল্পটা। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হারটাই সঙ্গী ব্রাজিলের। তার সঙ্গে এক লালকার্ড ব্রাজিলের ক্ষতটাই কেবল বাড়িয়েছে। 

পুরো ম্যাচে গোল হয়েছে একটিই। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণী গোল করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। তাতেই নির্ধারিত হয় ব্রাজিলের টানা তৃতীয় হার।

খেলার প্রথমার্ধ ছিল গোলশুন্য। দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ছিল ব্রাজিলেরই। একাধিকবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে স্বাগতিকরা। তবে ঘরের মাঠে দর্শকদের আনন্দ দেওয়া হয়নি সেলেসাওদের। খেলার ধারার বিপরীতেই ম্যাচের প্রথম গোল করে বসে আর্জেন্টিনা। ৬৩ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর কর্নার থেকে লাফিয়ে হেড করেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। বল ঠেকাতে ব্যর্থ অ্যালিসন। তাতেই লিড হয় বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। 

তবে এ দিন ম্যাচ শুরু হওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষেই শুরু হয় প্রথম ঝামেলা। ব্রাজিলের মারাকানায় উপস্থিত আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ব্রাজিলের সমর্থকরা। দ্রুতই সেখানে ছুটে যান স্থানীয় পুলিশের সদস্যরা। ঘটনার জের ধরে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি পুরো দল নিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান ম্যাচের লাইভ বিবরণীতে জানায়, ‘আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত চলাকালে ব্রাজিলের সমর্থকেরা দুয়ো দিতে শুরু করলে ঝামেলার শুরু হয়। আর্জেন্টিনা দলের সদস্যরা এবং ব্রাজিলের অধিনায়ক মার্কিনিওস দর্শকদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এরপর মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনার বাকি খেলোয়াড়রা মাঠ ছেড়ে চলে যান। ঝামেলা শেষে যখন খেলা যখন শুরু, ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে পুরো আধঘন্টা।

ম্যাচের সময়েও ছিল এই উত্তেজনার রেশ। শুরুর ১৫ মিনিট যেন শারীরিক ভাষা প্রয়োগেই ব্যস্ত ছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরমাঝে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাই অবশ্য চড়াও হয়েছেন বেশি। ম্যাচের ১৫ মিনিট না গড়াতেই কড়া ট্যাকল করে কার্ড দেখেন ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল জেসুস এবং রাফিনহা। ৩৪ মিনিটে আবার কার্ড দেখেন ব্রাজিলের কার্লোস অগাস্টো।

এমন কড়া ট্যাকেলের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিল ফুটবলটাই। ব্রাজিলের রক্ষণে দুই-একবার হানা দেয়ার চেষ্টা করেছিল বটে, তবে তাতে খুব একটা সুফল আসেনি। ম্যাচের ২৮ মিনিটে একবার পেনাল্টির আবেদন তুলেছিলেন জিওভানি লো সেলসো। তবে তাতে সাড়া দেননি রেফারি। আর্জেন্টিনাও এর আগে পরে কোন সুবিধাই করতে পারেনি। 

ম্যাচের সেরা সুযোগ এসেছে একেবারে শেষের আগে। ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি এদিন শুরু থেকেই ছিলেন দুর্দান্ত। ৪৪তম মিনিটে তিনিই এগিয়ে দিতে পারতেন দলকে। দারুণ এক হাফভলিতে বল জালেই জড়াতে পারতেন। তবে গোললাইন থেকে তা ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত রাখেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার কুটি রোমেরো। 

img

আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রকাশিত :  ১১:১২, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রথম দুই ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে পথটা সহজ করেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। তৃতীয় ম্যাচেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সহজ জয় পেয়েছে টাইগ্রেসরা। এর মধ্য দিয়ে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে কোনো প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার রেকর্ডের তৃপ্তি মিলল টাইগ্রেসদের।

এর আগের ওই দুই ম্যাচে হয়েছিল তিনটি রেকর্ড। আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়ার পথে তৃতীয় ওয়ানডেতে আরও দুটি রেকর্ডের স্বাদ নিল বাংলাদেশ। ফারজানা হক পিংকি ও শারমিন আক্তার সুপ্তা গড়লেন এই সংস্করণে জাতীয় দলের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। 

সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আইরিশ নারীদের বিপক্ষে বাংলাদেশের নারীরা পেয়েছে ৭ উইকেটের অনায়াস জয়। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে পুরো ৫০ ওভার খেলে ১৮৫ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। 

জবাবে ৭৫ বল হাতে রেখে ৩ উইকেট খুইয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে স্বাগতিক দল। তবে, সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ৯ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার মুর্শিদা খাতুন (৮)। তিনে ব্যাট করতে নেমে ফারজানা হককে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন শারমিন আক্তার সুপ্তা।

দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন এই ডান হাতি ব্যাটার। অপর প্রান্ত থেকে ফিফটি তুলে নেন ওপেনার ফারজানাও। এরপর পিচে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি এই দুই ব্যাটার। ৮৮ বলে ৭২ রান করে শারমিন আউট হলে ৬১ রান করে তাকে সঙ্গে দেন ফারজানা। এতে দলীয় ১৬৫ রানে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

এরপর শোবাহানা মোস্তারির ৭ রান এবং নিগার সুলতানা জ্যোতির অপরাজিত ১৮ রানে ভর করে ৭৬ বল এবং ৭ উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে সুবিধা করতে পারেনি সফরকারীরা। দলীয় ৯ রানেই বাংলাদেশের ডানহাতি স্পিনার সুলতানা খাতুনের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সারাহ। এরপর ওয়ান ডাউনে নামা অ্যামি হান্টারকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন আইরিশ অধিনায়ক।

দলীয় ৫২ রানে রাবেয়া খানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অ্যামি হান্টার। তার ব্যাক্তিগত ২৩ রান তোলার আগে ৪০ বল খরচায় ছিল একটি চারের মার। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন সফরকারী অধিনায়ক। নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের ৯ম ফিফটি তুলে নেন তিনি।

এরপর পিচে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লুইস। ৭৯ বলে ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। দলীয় ১০৭ রানের মাথায় রান আউটের ফাঁদে সাজঘরে ফেরেন লেয়া পল। তবে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন মিডল অর্ডার ব্যাটার ওরালা প্রেন্ডারগাস্ট।

তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ৪৫ বলে ২৭ রানে স্বর্ণা আক্তারের তৃতীয় ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন প্রেন্ডারগাস্ট। পরের ওভারেই বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ফাহিমা খাতুনের হাতে তুলে দিয়ে সুলতানা খাতুনের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন উনা রেমন্ড-হোই। এতে দলীয় ১২৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আইরিশরা।

অষ্টম উইকেটে আর্লেন কেলিকে সঙ্গে নিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন আলানা ডালজেল। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি দুজনের কেউই। কেলি ১৮ রান এবং ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন ডালজেল। এরপর কারা মুরাই (১৩) এবং অ্যামি ম্যাগুয়ার ৩ রান করে আউট হলে নির্ধারিত ওভারে ১৮৬ রান করে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড।

এদিকে, এই সিরিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল নাহিদা-জ্যোতিদের কাছে। কারণ, আসন্ন ভারত বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে ৬টি ম্যাচের সব কটিতেই জিততে হবে বাংলাদেশকে। এই ৬ ম্যাচের বাকি ৩টি খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তাই আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে নিজেদের আত্মবিশ্বাস মজবুদ করল টাইগ্রেসরা।