রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাবেন কেন
ঘুমের সবচেয়ে উপযোগী সময় নির্ধারণ করা হয় রাতকে। কেননা সারা দিন কর্মব্যস্ততার পর মানুষের একটু বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। তাই আল্লাহ তা'আলা রাতকে বিশ্রামের উপযোগী করেই বানিয়েছেন।
মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছি আবরণস্বরূপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ৯-১১)
তবে আজ গোটা পৃথিবীতে এর উল্টো স্রোত শুরু হয়েছে। এর ক্ষতিকর দিকগুলো সবার সামনে স্পষ্ট। এটি আধুনিক সময়ের একটি অভিশাপরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।
অনেকেই অহেতুক গল্পগুজব, সমালোচনা, পরনিন্দা বা অনৈতিক কথাবার্তায় লিপ্ত থাকে। সমাজের বেশির ভাগ মানুষ, বিশেষভাবে যুবকশ্রেণি এতে জড়িত। রাতে বন্ধুদের সঙ্গে অযথা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো, দলবেঁধে পার্টিতে যাওয়া এবং গভীর রাত পর্যন্ত এতে লিপ্ত থাকা। যারা বাইরে যায় না, তারা ঘরে বসে ইন্টারনেটে সারা দুনিয়া চষে বেড়ায়।
অনলাইনে ছেলে-মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট ও আড্ডায় জড়িয়ে পড়ে। কেউ বা সিনেমা ও বিভিন্ন ভিডিও ডাউনলোড করে দেখছে। কারো টিভির পর্দায় চোখ, কারো বা এফএম রেডিওর সঙ্গে কান লেগে আছে। কেউ ঘুম ফেলে গেম খেলায় মগ্ন। এ হচ্ছে তরুণসমাজের ভয়াবহ চিত্র।
কিন্তু শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। দেহের সুষ্ঠু কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সকাল সকাল যেমন ঘুম থেকে উঠা উচিত, তেমনি রাতেও জলদি ঘুমানো দরকার।
আসুন জেনে নেই রাতে জলদি ঘুমানোর উপকারিতা...
> রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর ফলে আপনার মন শান্ত থাকে। ফলে দুশ্চিন্তা কম হয়।
> ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফেসবুকিং বা ফোন চালালে ব্রেনের নার্ভ সিস্টেমে চাপ পরে।
> ভালো ঘুম আপনার মেজাজ ভাল রেখে জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে।
> রাতের ৮ ঘন্টা ঘুম আপনার মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে।.
> নিয়মিত রাতের ঘুম শরীরের ওজন কমায়।
> রাতে দেরি করে ঘুমাবেন না, এতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
> মুখের লাবণ্যতা ধরে রাখতে রাতে জলদি ঘুমিয়ে পরুন।
> হৃদরোগ, ডায়াবেটিকস, কিডনি, উচ্চরক্তচাপ এর মত নানা রোগ থেকে নিজেকে বাঁচাতে জলদি ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
> আপনি যদি রাতে ১২টার মধ্যে ঘুমাতে পারেন তাহলে দেখবেন দিনভর আপনি ক্লান্তি, ঝিমানো, দুর্বলতা অনুভব করছেন না।
> পূর্ণ ঘুম আমাদের মানসিক প্রশান্তি দান করে আমাদের আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে।
> অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে হজম শক্তি কমে যায়।
নিজেকে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে রাতে ১২টার মধ্যে ঘুমিয়ে পরুন এবং সকালে জলদি ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন।