img

এমপি হওয়ার আশা, নির্বাচন এলেই সামনে আসেন পাশা!

প্রকাশিত :  ১১:৪০, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ১৮:০৫, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

এমপি হওয়ার আশা, নির্বাচন এলেই সামনে আসেন পাশা!

মাওলানা শাহীনুর পাশা এক আলোচিত নাম, বিচিত্রধর্মী চরিত্র। সিজনাল পলিটিশিয়ান হিসেবে বেশ সুখ্যাতি আছে তার। আছে নানামুখি বিতর্ক ও অযুত সমালোচনা। নিজের হীন স্বার্থে দালালি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও প্রতারণার একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই ধর্মীয় রাজনীতিকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করার পর জমিয়ত থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন এই নেতা। এর পর থেকেই বেড়িয়ে আসছে ধর্মীয় খোলসের আবরণে থাকা তার আসল পরিচয়।

পাশা যখন জমিয়তের শৃঙ্খলা নাশা

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহসভাপতির পদধারী মাওলানা অ্যাডভোকেট শাহীনুর পাশার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টি ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর থেকে। দৃশ্যত দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচরণমূলক এ ঘটনায়ই তাকে পদ হারাতে হয়।

উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহের কথা জানান ইসলামপন্থী নয়টি দলের ১৪ নেতা। তাদের মধ্যে শাহীনূর পাশা চৌধুরীও ছিলেন। এর একদিন পর শুক্রবার শাহীনূর পাশার দল জমিয়ত তার সদস্যপদ স্থগিতের ঘোষণা দেয়। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দলের কিছু নেতাকর্মীকে দলের সিদ্ধান্ত ও অবস্থানের বিরুদ্ধে আসতে প্ররোচিত করা ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সকল পদ স্থগিত করা হলো।
এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিন। 

দলনেতার এমন দ্বিচারিতার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন খোদ শাহীনুর পাশা চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ কর্মী সমর্থকেরা। তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকেও স্ট্যাটাস পোস্ট করে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। তারা বলছেন, কোনো ব্যক্তি দলের বাইরে গিয়ে নীতিবহির্ভূত কাজ করলে তার দায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেবে না। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শাহীনুর পাশার সকল পদ স্থগিত করায় খুশি হয়েছেন অনেকে। খুশি বিএনপির নেতাকর্মীরাও।

মাহমুদুল হাসানের নামে একজন শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে তার ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, “লোকটাকে এমনিতেই আমার অপছন্দ ছিল। আলেমদের মান-সম্মান নিয়ে এমন খেলা করা উনাদের মতো লোকেরই সাজে।”

জমিয়তের আরেক নেতা মাওলানা খলিলুর রহমান তার ফেসবুকে লিখেছেন, “শাহীনুর পাশা দালালি করবেন সেটা আমি আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। তার সমালোচনা করায় কিছু কর্মী সমর্থকেরা আমার বিষোদগার করেছিলেন। তারা কি আমার চেয়েও তাকে বেশি চিনতেন..................?”

সথীর্তদের সাথে অব্যাহত মিথ্যাচার 

শাহীনূর পাশার একক ও স্বার্থান্বেষী ‍সিদ্ধান্তে যখন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে তখন তিনি তাদের উদ্দেশে ফেসবুক ওয়ালে লিখেন,

“গতরাতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ইসলামী ৯টি দলের সাক্ষাতে জমিয়তের নামটিও মিডিয়ায় এসেছে। আর তাতে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং জমিয়তপ্রেমীরা মনে কষ্ট পেয়েছেন। এটা আমার প্রিয় দল জমিয়তের প্রতিনিধিত্ব নয়, সাক্ষাৎকারটি আমার ব্যক্তিগত। যার সহযোগিতায় গিয়েছি, তিনিই আমাকে ১ দিন আগে বলেছেন, জমিয়ত নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল। সুতরাং ওখানে আমি জমিয়ত নেতা হিসেবে যাই নি। আমার মামলাগুলো উইথড্র করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে গিয়েছিলাম। দেশের সুপ্রিম অথরিটির কাছে যে কেউ সুযোগ পেলে তার আবদার পেশ করার জন্য যাওয়ার অধিকার রয়েছে। এরপরেও যারা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের প্রতি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”

তার এই স্ট্যাটাসে সহকর্মীদের প্রতি প্রবোধ থাকলেও তাতে মিথ্যাচার ছিল চোখে পড়ার মতো; কেননা পরবর্তীতে সিলেটের ডাক পত্রিকায় দেয়া মাওলানা পাশার এক সাক্ষাৎকারে সেই মিথ্যা প্রতীয়মান হয়েছে। পত্রিকাটির সাথে আলোচ্য সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

“আমি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ কারণে দল যদি আমাকে বহিষ্কার করে, তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবো।”

তিনি আরো বলেন, “গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে দল আমার সদস্যপদ স্থগিতের কথা জানিয়েছে। কিন্তু নিয়ম হলো অভিযুক্তকে চিঠি দিয়ে তার বক্তব্য শোনা। অথচ আমাকে কারণ দর্শানোর কোনো নোটিশ না দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় আমার পদ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনী ও গঠনতন্ত্রবিরোধী। দুই-একদিনের মধ্যে আমার সিদ্ধান্ত জাতিকে জানাবো। এখন নির্বাচনী এলাকায় আছি।”

তবে, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, “গঠনতন্ত্র অনুসারেই শাহীনূর পাশা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশার বিরুদ্ধে দলের শৃঙ্খলাবিরোধী অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গঠনতন্ত্রের ৫১(১) ধারা মোতাবেক দলের সভাপতি নির্বাহী ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলের আগামী কার্যনির্বাহী বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। গঠনতন্ত্রের কোথাও উল্লেখ নেই যে, পদপদবী স্থগিত করতে হলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে। বহিষ্কারের ক্ষেত্রে সেই প্রশ্ন আসতে পারে। কিন্তু তাকে তো বহিষ্কার করা হয়নি, পদ স্থগিত করা হয়েছে।”

নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই সামনে আসেন পাশা!

মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে নিয়ে সুনামগঞ্জ-৩ (শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর) নির্বাচনী এলাকায় প্রচলিত একটি কথা আছে, তিনি ‘সিজনাল বা মৌসুমী পলিটিশিয়ান’। বিএনপিসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই মনে করেন, নির্বাচন এলেই তিনি জনসম্মুখে হাজির হন; তা না হলে তার দেখা মেলা ভার। তার অবস্থান নিয়ে যখন মানুষের মাঝে এমন কথা উঠছে তখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন শাহীনুর পাশা। এ সাক্ষাৎকে নির্বাচনী ও দলীয় সাক্ষাৎ ভেবে পাশার প্রতি ক্ষুব্ধ জমিয়ত নেতারা। এ ঘটনায় তুমুল আলোচনা শুরু হয় জমিয়ত সমর্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে। ভাইরাল হয় ছবি।

জনপ্রতিনিধি হিসেবে যেখানে সার্বক্ষণিক এলাকায় আসা-যাওয়া করা, ভোটারদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার কথা, সেখানে তিনি উদয় হন কেবল নির্বাচন এলে। ধর্মীয় লেবাস ও ভাবভঙ্গিতে সরলপ্রাণ জনতাকে মুগ্ধ করে শর্টকাট রাস্তায় এমপি বনে যেতে চান।

শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর এলাকার সচেতন অনেকের সাথে মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে নিয়ে কথা বললে তারা বরাবরই উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, তিনি কীসের জনপ্রতিনিধি! সারা বছর খোঁজ নেই আর নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই সামনে আসেন।

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর ২০০৫ সালের উপনির্বাচনে চারদলীয় জোট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এর পর চৌদ্দ মাসের জন্য এমপি হয়েছিলেন মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। 

রয়েছে ঘুষ-দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ

মাওলানা শাহীনুর পাশার বিরুদ্ধে আবাসন প্রতারণা, বিদ্যুৎ সংযোগের নামে ঘুষগ্রহণ, রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের তহবিল গঠন করে আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ আছে। ইতঃপূর্বে হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে তিনি চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে আসছেন। জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন।

এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন, গত জাতীয় নির্বাচনের আগে মোহাম্মদ আলী তালুকদার নামক এক লন্ডন প্রবাসীর কাছ থেকে আবাসন ব্যবসার কথা বলে ৩২ লাখেরও অধিক টাকা নিয়ে এসেছিলেন মাওলানা শাহীনুর পাশা। লন্ডনে পরিচয়ের সুবাদে ঢাকার বনানী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী তালুকদারের কাছ থেকে ৩২ লাখ ২০ হাজার টাকা এনে ‘মাতৃভূমি হাউজিং ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি’ গঠন করে তাকে পরিচালক রাখেন। এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আলীকে না জানিয়েই আবাসন কোম্পানিটি বিক্রি করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন শাহীনুর পাশা।

মোহাম্মদ আলী তার টাকা ফেরত চাইলে টাকার কথা অস্বীকার করে উল্টো তাকে হুমকি ধমকি দেন। এ ঘটনায় ২০১৮ সনের ১৩ ডিসেম্বর সিলেট সিএমএম আদালতে প্রতারণার অভিযোগে হেফাজত নেতা মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মোহাম্মদ আলী। এ ঘটনায় ১৮ ডিসেম্বর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৯ ডিসেম্বর বাদীর অনুকূলে ১০ লাখ টাকার চেক আদালতে দাখিল করে জামিন প্রার্থনা করে অপরাধের দায় স্বীকার করেন তিনি। ওইদিন আদালত তার মামলার চেক যাচাই-বাছাই করে বাদীকে তার ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার স্বার্থে জামিন মঞ্জুর করেন। তবে এখনো ওই ব্যবসায়ী মাওলানা শাহীনুর পাশার কাছ থেকে আবাসন ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত পুরো টাকা পাননি বলে জানা গেছে।

শুধু আবাসন খাতেই দুর্নীতি নয়, সিলেট শহরে একাধিক ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেও তিনি নানা অনিয়ম করেছেন। শিক্ষকদের বেতন না দিয়ে তিনি তাদের বেতনের টাকা নয়ছয় করেছেন এমন অভিযোগও আছে। ২০১৮ সনে সিলেটের রাফি ইসলাম নামের এক যুবকের বোনকে নিজের মালিকানাধীন একটি কলেজে  দীর্ঘদিন প্রভাষণার চাকরি করিয়েও বেতন দেননি বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগী।

২০১৮ সনে শাহীনুর পাশার বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুর রহমানের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি তখন  অভিযোগ করে লিখেছিলেন, “চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে বিদ্যুতের জন্য মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে ঘুষ দিয়েছিলাম। ঘুষ নিয়েও এই মাওলানা বিদ্যুৎ সংযোগ দেন নি।”

এছাড়াও মাওলানা শাহীনুর পাশার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের নামে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা এনে আত্মসাতের অভিযোগও আছে। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বহু প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। কক্সবাজারমুখি লংমার্চের কথা বলে সিলেটের শেরপুর পর্যন্ত গাড়ি ভাড়া করে শো-অফের মাধ্যমে তিনি কর্মসূচি শেষ করে পুনর্বাসন তহবিলের সমুদয় টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ আছে।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার গণিগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার নামে মোটা অংকের টাকা লন্ডন থেকে এনে লংমার্চের নামে নাটক করে পুরো টাকা আত্মসাত করেছিলেন মাওলানা শাহীনুর পাশা। তিনি নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে যুক্ত।” 

মোদ্দাকথা, একটি শীর্ষস্থানীয় ইসলামী সংগঠনের উচ্চপদে আসীন হয়ে, সাংগঠনিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে এ যাবৎকাল নিজের ব্যক্তিস্বার্থই চরিতার্থ  করে যাচ্ছেন মাওলানা শাহীনূর পাশা। প্রতারণার পাশাপাশি ধর্মীয় উন্মাদনার মাধ্যমেও তিনি ধর্মপ্রাণ সহজ সরল মানুষদের বিভ্রান্ত করে থাকেন।



 

img

সিলেটে প্রবাসী তরুণীর আপত্তিকর ছবি তৈরি করে টাকা দাবি, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশিত :  ১৮:০৮, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সিলেট নগরের পীরমহল্লা এলাকার বাসিন্দা  প্রবাসী এক তরুণীর অশালীন, আপত্তিকর ও বিকৃত ছবি তৈরি করে টাকা দাবির অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ওই তরুণীর বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে মিন্টু দেবনাথ (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে সিলেট মহানগর পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এয়ারপোর্ট থানার পশ্চিম পীরমহল্লার এক বাসিন্দার দুই মেয়ে স্বামী ও সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ড থাকেন। সম্প্রতি প্রবাসে থাকা এক মেয়ের ছবি এডিট করে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ছবি তৈরী করে অপরিচিত মোবাইল থেকে ঐ মেয়ে এবং তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইলে হোয়াটস্ অ্যাপের মাধ্যমে ছবিগুলো পাঠানো হয়। একই সাথে বিভিন্ন আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ বার্তা পাঠিয়ে সামাজিক ও ব্যক্তি মর্যাদা হানি করার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করা হয়।

সাইফুল ইসলাম জানান, মেয়েটির বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরপর এসএমপি\'র সাইবার ইউনিট ছবি পাঠানো মোবাইল ব্যবহারকারীকে সনাক্তকরণের জন্য মাঠে নামে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মিন্টু দেবনাথকে  শ্রীমঙ্গল থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ গ্রেপ্তার করা হয়। মিন্টু সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের পর আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।