ব্যারিস্টার সায়েদুল হক চৌধুরী সুমন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ।
এর আগে হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। তবে দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
রোববার (২৬ নভেম্বর) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ পাস করে আসতে পারবেন না। প্রত্যেক প্রার্থীকেই একজন করে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আমি দলীয় মনোনয়ন না পেলেও হবিগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।
তিনি বলেন, নির্বাচনটা যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, তাতে জোর দেওয়া হয়েছে। সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সবাইকে। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করে এই আইনজীবী বলেন, পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। আমার একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। এজন্য আরও তরুণের ক্ষমতায়ন করতে চাই। যারা আমার চেয়েও বেশি উন্নত চিন্তা করে। তাদের কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন ঘটাতে চাই।
উল্লেখ্য, এ আসনে পরপর দুইবার নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
প্রকাশিত :
০৯:১৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সিলেটের হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার এলাকায় স্থানীয় আলেম-জনতার সঙ্গে ওরসে আসা ভক্ত, পাগল, ফকিরদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন যাবত শাহপরান (রহ.) মাজারে বার্ষিক ওরস চলছিল। এর আগে সিলেটের আলেম সমাজ শাহপরান মাজার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ওরসে গান, বাজনা, অশ্লীলতা বা অসামাজিক কার্যকলাপ যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেন। এসব বৈঠকে কমিটির নেতারা ওরসে কোনো অসামাজিকতা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
এ অবস্থায় তিন দিন আগে শাহপরান মাজারে শুরু হয় ওরস। ওরসে তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারে সে জন্য আলেম-সমাজের একটি প্রতিনিধি দল প্রথম দিন থেকেই মাজার এলাকায় অবস্থান করেন এবং সার্বিক বিষয়ে নজর রাখেন। তারা মাজারে তদারকির বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট করেন।
এর ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতেও তারা মাজারের মসজিদের সিঁড়িতে বসে কুরআন তিলাওয়াত ও গজল পরিবেশন করছিলেন। রাত তিনটায় সেখানে অবস্থানরত মোশাহিদ আল বাহার নামে একজন ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে বলেন, ‘শাহপরান মাজার আপনারা যারা আশে পাশে আছেন দ্রুত আসুন। আলেম ওলামারা ও এলাকার ভাই ব্রাদাররা মিলে মাজার পরিদর্শন করছিলেন যে এখানে মদ, জুয়ার আসর, নারীদের অশ্লীলতা চলছে কি না। পরিদর্শন শেষে আমরা সিঁড়ির নিছে বসে গজল, তেলাওয়াত করছি, শুনছি। তেলাওয়াত চলাকালে হঠাৎ করে তৃতীয়পক্ষ এসে মাজারের পাগলদেরকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দেয়। তখন ও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসে তেলাওয়াত শুনছি। ওরা ধীরে ধীরে মানুষ বাড়তে লাগে এবং আমাদের উপর আক্রমণ করে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাজার পরিদর্শনকারী ওরসে আসা কিছু ভক্ত আশেকান, পাগল ফকিরদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের শুরুতে ওরসে আসা মাথায় লাল কাপড় বাধা কিছু লোক মাজার পরিদর্শনকারী আলেম সমাজের প্রতিনিধি দলের ওপর হামলা শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন তারা। খবর পেয়ে মাজারের আশপাশের এলাকার শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া প্রতিনিধি দলকে উদ্ধার করেন এবং অপরপক্ষের ওপর চড়াও হন। এ সময় তারা ওরসে আসা লোকজনের তাঁবুগুলো ভেঙে দেয়। এ সময় দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, মাজারের ওরসে আসা কিছু পাগল, ফকির ও আলেম সমাজের প্রতিনিধি দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কিছু ভাঙচুর হয়েছে। তবে এখানে সুনির্দিষ্ট ভাবে কেউ মাজারে হামলা করতে আসেনি। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। তবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।