img

ফিট থাকলেই কমবে মানসিক চাপ

প্রকাশিত :  ০৮:২৫, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

ফিট থাকলেই কমবে মানসিক চাপ

মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে কিংবা মানসিক চাপ কমাতে প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। শরীরকে ফিট রাখতে হবে মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য। সেজন্য করনীয় হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা,পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার ধাবার খাওয়া এবং এর পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা তা হলো দৈনিক কিছু ব্যায়াম করা। যা শারীরিকভাবে ফিট রাখার পাশাপাশি মানসিকভাবে ফিট রাখবে এবং শরীরের কিংবা মনের হাজারো ক্লান্তি দূর করবে।

মানসিক চাপ আমাদের দৈনন্দিনের সঙ্গী। কিন্তু সেই  সঙ্গীকে মেনে নিলে হবে না। এই চাপের সাথে আপোষ করলে চলবে না।  এই মানসিক চাপ মোকাবেলায় কিছু শারীরিক ব্যায়াম প্রয়োজন সেগুলোই উল্লেখ করা হলো: 

মানসিক চাপ কমাতে দৌড়ান

অন্যান্য ব্যায়ামের পাশাপাশি দৌড়ানো অন্যতম একটি ব্যায়াম। দৌড়ানোর সাথে অন্য কিছু কোন তুলনা হয় না।  প্রতিদিন যদি কোন ব্যক্তি ১০-১৫ মিনিট দৌড়াতে পারে সে অনেক ধরনের শারীরিক জটিলতা ও অসুস্থতা এড়াতে পারবে। পেশিগুলোর সঠিক সঞ্চালনের জন্য নিয়মিত দৌড়ানোর বিকল্প নেই। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, দৌড় হলো মানসিক চাপ কমাবার অন্যতম মহৌষধ। এমনকি ভালো ফলাফল না পেলেও নিয়মিত দৌড়ানো আপনাকে অতিরিক্ত কাজের সময়ে খিটখিটে মেজাজ থেকে দূরে রাখবে। এটা এমনই ধরনের ব্যায়াম যেটা প্রয়োজনমতো সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা জাগ্রত করে। এবং অহেতুক দুশ্চিন্তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করে দেয়। মানসিক চাপ দূর করে নিজের কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করতে নিয়মিত দৌড়ানোর বিকল্প নেই।

কাজের ফাঁকে বিশ্রাম

অফিসে কিংবা বাসায় যেখানেই কাজ করুন না কেন কাজের ফাঁকে বিরতি নেই কিছুক্ষণ বিশ্রাম করুন একটু হাঁটাচলা করতে পারেন। হয়তোবা ফোনে কথা বলার সময় টানা চেয়ারে না বসে থেকে একটু হাঁটাচলা করুন দুপুরে লাঞ্চ করার পর সরাসরি চেয়ারে না বসে থেকে একটু হাঁটা চলা করুণ। মাঝেমধ্যে অফিসে লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছুটা বিরতি নিন। চেয়ারে বসে আড়মোড়া কাটুন। মাথার পেছনে হাত রেখে পা সোজা করে কাঁধের পেশিগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করুন। এতে কাঁধের পেশিগুলোতে আরাম অনুভূত হবে।  দেখবেন মুহূর্তেই  বিরক্তিভাব দূর হয়ে আরাম অনুভব করবেন। দীর্ঘসময়ে বসে থাকলে কাঁধের ও পিঠের পেশিগুলো অসাড় হয়ে যায়। ফলে  বিরক্তিভাব চলে আসে। তাই হাঁটাহাঁটি করা ও ব্যায়াম করা  ফ্রেশনেস ফিরিয়ে আনতে যথেষ্ট সাহায্য করবে।

মানসিক চাপ কমাতে সূর্যের আলো

শারীরিক এবং মানসিক দুই সুস্থতার জন্যই সূর্যের আলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যেসব দেশের সূর্য দেখা দেয় না সে সব দেশের মানুষের মধ্যে মারাত্মক পরিমাণে হতাশা বিরাজ করে। শরীর সচল থাকলে এন্ডোরফিন নামক একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ কমিয়ে অবস্থার উন্নতি করে। সূর্যের আলোয় থাকলে মস্তিষ্কে বাড়ে সেরেটোনিনের মাত্রা, যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ঘর বন্ধ কিংবা গুমোট অথবা যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো প্রবেশ করে না সেই সব জায়গায় একটু এড়িয়ে চলাই ভালো। 

মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম 

যোগ ব্যায়াম করলে মন স্থির হয় আর মন স্থির থাকলে মানসিক চাপ অনেক অংশেই কমে যায়। শরীর ও মনের অতি উপকারী যোগব্যায়াম এটা কোনোভাবেই এড়ানো যাবে না যে, যোগব্যায়াম সত্যিকার অর্থেই দেহ এবং মনের জন্য যথেষ্ট উপকারী। যোগব্যায়াম শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর ও মনের যোগসূত্র স্থাপন করে থাকে। তাই এখনি মাদুর বা পাটি বিছিয়ে লেগে পড়ুন যোগব্যায়ামে এবং দূর করুন আপনার অহেতুক উদ্বেগ ও হতাশাগুলো দূরে রাখে।

সময় কাটান প্রিয় কিছুর সাথে 

মানসিক চাপ দূর করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে প্রিয় কিছুর সাথে সময় কাটানো বা প্রতিদিন এমন কোন কাজ করা যেটি আসলে আপনি ভালোবেসে।  যেমন অনেকে বই পড়তে ভালোবাসে সে প্রতিদিন কিছুটা সময় বই পড়তে পারে। কেউ গান শুনতে ভালোবাসে সে দিনের কিছুটা সময় গান শুনতে পারে। পরিবারের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করা, বাগানে গিয়ে গাছে জল দেওয়া এই ধরনের কাজগুলো করলে মানসিক চাপ অনেক অংশেই কেটে যায়।

img

বন্যা পরবর্তী সময়ে যা করা উচিত

প্রকাশিত :  ১০:০৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১০:১৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তলিয়ে গেছে দেশের ১১ থেকে ১৩টি জেলা আকস্মিক বন্যায়। বন্যা-কালীন সময়ে ত্রাণ ও দুর্গতদের সাহায্য গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু বন্যা পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন ও কিছু করণীয় থাকে। 

আভাস পেলে যা করবেন

আকস্মিক বন্যার শঙ্কা অনেক বেড়েছে। তাই বন্যার আভাস পেলে মুড়ি, চিড়া, গুড়, চিনি বা শুকনো জাতীয় খাবার সংরক্ষণ করা ভালো। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণের জন্য চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করা ভালো। এছাড়া সহজে বহনযোগ্য চুলা ও রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানির ব্যবস্থা রাখতে পারেন। বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীর দিকে বিশেষ নজর রাখুন। এছাড়া টাকা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংরক্ষণে রাখুন। বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।

ডায়রিয়া হলে

বন্যার সময় ডায়রিয়া বেশি দেখা দেয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। লবণ ও পানির অভাব পূরণ করাই এর একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন ও শরীরে লবণ পানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

বন্যার সময় চর্মরোগ

বন্যার পানি গোসল বা গায়ে লাগানো থেকে বিরত থাকুন। কেননা এ পানি বিভিন্ন জীবাণুর ধারক ও বাহক। তাই এ পানির সংস্পর্শে বিভিন্ন চর্ম রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে-পায়ে স্যাঁতসেঁতে ও ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিস জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে।

টিউবওয়েল ডুবে গেলে

যেসব টিউবওয়েল বন্যায় ডুবে গেছে, সেগুলোর পানি ডিসইনফেকশন না করে পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এ কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পরিমাণ পানি একটি জগ বা পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে হাতল চাপতে থাকুন।

বাড়ি ফিরলে

অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরবেন। একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।  জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন। বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না। বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না। সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন। বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।