বিরতির পর আবার বিএনপির অবরোধ শুরু
বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি মাঝে এক দিনের বিরতি দিয়ে আবার শুরু হলো । এর মধ্যে আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে ২৪ ঘণ্টার অবরোধ।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ শেষ হবে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায়, এর পর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল করবে দলগুলো।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোমবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
যুগ্ম মহাসচিব রিজভী জানান, বুধবার ভোর ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সর্বাত্মক অবরোধ পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো। বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালন করা হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং হয়রানি বন্ধের দাবিও রয়েছে এ কর্মসূচির পেছনে।
বিএনপির অবরোধ-হরতালের এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের পর। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সেদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিল বিএনপি। ওই সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান দলটির নেতা-কর্মীরা। আগুন, ভাঙচুর ও ককটেল ছোড়া হয়। পিটিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের এক কনস্টেবলকে। এ ছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন আরও একজন।
এ অবস্থায় সমাবেশ কর্মসূচি চলার মধ্যেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৯ অক্টোবর সারা দেশে হরতালের ডাক দেন। পরে একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। অজ্ঞাত স্থান থেকে রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি দেন। বিএনপির অবরোধে একাত্মতা জানায় জামায়াতে ইসলামীও।
এর পর থেকে বিরতি দিয়ে দফায় দফায় অবরোধ-হরতালের ঘোষণা দিয়ে আসছে বিএনপি। দলীয় সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ কিছু দাবিতে এমন কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে। তবে এর মাঝে নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল দিয়েছিল বিএনপি। সর্বশেষ ঘোষণা করা হয় ২৪ ঘণ্টার অবরোধ এবং ২৪ ঘণ্টার হরতালের কর্মসূচি।
বিএনপির ডাকা অবরোধে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপসহ নানা সহিংসতা হচ্ছে। কঠোর অবস্থানে থেকে দলটির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। তবে আতঙ্ক সঙ্গে করেই বাইরে বের হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।