img

পারমাণবিক অস্ত্র পেতে তোড়জোড় চালাচ্ছে তালেবান

প্রকাশিত :  ১৮:১৯, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩
সর্বশেষ আপডেট: ১৮:৩৩, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩

পারমাণবিক অস্ত্র পেতে তোড়জোড় চালাচ্ছে তালেবান

কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় থাকা তালেবান । এমনটাই দাবি করেছেন দেশটির সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান রহমতুল্লাহ নাবিল। তাঁর দাবি, ক্ষমতা সুসংহত করতেই তালেবান এমনটা করতে চায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রহমতুল্লাহ নাবিল আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের শাসনামলে ২০১০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ছিলেন। গত সপ্তাহে তাজিকিস্তানের দুশানবেতে অনুষ্ঠিত হেরাত নিরাপত্তা সংলাপে যোগ দিয়ে রহমতুল্লাহ নাবিল বলেন, আধুনিক সমরশক্তির নিদর্শন হিসেবে তালেবান সরকার উত্তর কোরিয়া, ইরান, চীন ও রাশিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার পর তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখল করে। এরপর তারা আফগানিস্তানে শরিয়া শাসন চালুর ঘোষণা দেয়। সেই থেকেই পশ্চিমা বিশ্ব আফগানিস্তানের সমালোচনায় মুখর। পশ্চিমা বিশ্বের দাবি, তালেবান সরকার আফগানিস্তানে ব্যাপকভাবে নারী ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এই অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কাছে থাকা আফগান রিজার্ভ জব্দ করেছে।

নাবিল বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, তালেবান সরকার কীভাবে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করা যায় সেই পথ খুঁজছে। এমনো হতে পারে যে, তারা পাকিস্তানের কাছ থেকে সেটি সরাসরি পেতে পারে, কিংবা দেশটির প্রকৌশলীদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র তৈরি করিয়ে নিতে পারে। এমনটা হলে তা হবে এক ভয়াবহ বিপর্যয়।’ 

তবে সংলাপে উপস্থিত বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা তালেবানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বিষয় নিয়ে বেশ সন্দিহান মনোভাব পোষণ করেন। তাঁদের মতে, আসলেই তালেবানের এমন কৌশলগত অস্ত্র অর্জনের সক্ষমতা আছে কি না, একই সঙ্গে তাদের ইচ্ছা ও যাদের কাছ থেকে অস্ত্র বা প্রযুক্তি নেবে, তাদের সঙ্গে ভালো সংযোগ রয়েছে কি না, তা নিয়েও তাঁরা সন্দেহ পোষণ করেছেন। 

তালেবানকে ‘জিহাদি যন্ত্র’ উল্লেখ করে নাবিল বলেন, ‘তাদের ইচ্ছা রয়েছে এবং কীভাবে তা পাবে তা নিয়েও তারা আলোচনা করছে। বিশেষ করে কীভাবে অন্যরা পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করেছে, সে বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনা করছে। তাই তারা (তালেবান) কী অর্জন করতে চায়, তা এখন থেকেই নজরে রাখতে হবে।’

সাবেক এই আফগান স্পাই মাস্টার বলেন, ‘বিগত দুই বছরে দেখা গেছে যে, এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ব্যাপক কৌশলগত গভীরতা অর্জন করেছে।’ এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য মিত্র দেশ আফগানিস্তানে যেসব অস্ত্র ফেলে গেছে, সেগুলোর দখল তালেবানের হাতে চলে গেছে উল্লেখ করে বলেন, ‘তাদের দখলে রয়েছে ন্যাটো বাহিনীর অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি তাদের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক নজরদারির ব্যবস্থা, যা দিয়ে তারা আফগান জনগণের ওপর নজরদারি করছে।’

img

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আইসিসি’র স্বাধীনতা হুমকির মুখে: ইইউ

প্রকাশিত :  ০৬:২৪, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সতর্ক করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং এতে বিশ্বব্যাপী বিচার ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

গতকাল শুক্রবার ইইউ এক বার্তায় একথা জানায় । 

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে এএফপি জানায়, ট্রাম্প বৃহস্পতিবার একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যাতে বলা হয়, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার মাধ্যমে দ্য হেগের আদালত তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কোস্টা এক্সে লিখেছেন, ‘আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আদালতের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’

ইউরোপীয় কমিশন পৃথকভাবে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ‘দুঃখ’ প্রকাশ করেছে, এবং আইসিসির ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচার ব্যবস্থা এবং দায়মুক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ তুলে ধরেছে।

কমিশনের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘এই নির্বাহী আদেশ চলমান তদন্ত এবং কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এটি বিশ্বব্যাপী দায়বদ্ধতা নিশ্চতে বছরের পর বছর ধরে চালানো প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে।’

কমিশনের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘ইইউ নির্বাহী আদেশের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করবে এবং সম্ভবত আরও পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মূল্যায়ন করবে।’

ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়েছে যে, আইসিসি ‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন কার্যক্রমে’ লিপ্ত হয়েছে। এটি আফগানিস্তানে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী এবং গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তের বিষয়ে আমেরিকা এবং তার মিত্র দেশ ইসরাইলকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।

এই আদেশে আইসিসির কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি জমা রাখা এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, পাশাপাশি যারা আদালতের তদন্তে সহায়তা করেছে তাদেরও একই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা ব্যক্তিদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ট্রাম্পের পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলো আদালতের প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল কেউই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্য নয়।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি কোস্টা বৃহস্পতিবার আইসিসির সভাপতি বিচারপতি টমোকো আকানে সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দেন।

কোস্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আইসিসি বিশ্বের কিছু নৃশংস অপরাধের শিকারদের জন্য বিচার নিশ্চিত করতে একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা আদালতের কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।’

একজন ইইউ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাক্ষাৎকালে কোস্টা ও আকানে ইইউ’র পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রতি সমর্থন জোরদার করার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।