img

৪৭ ইউএনওকে বদলির সিদ্ধান্ত ইসির

প্রকাশিত :  ১২:৪১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

৪৭ ইউএনওকে বদলির সিদ্ধান্ত ইসির

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রথম পর্যায়ে দেশের ৮ বিভাগের ৪৭ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বদলির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ইসি এই প্রস্তাবে সম্মতি দেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, প্রথম পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জন, বরিশাল বিভাগের ২ জন, খুলনা বিভাগের ৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ৬ জন, সিলেট বিভাগের ৬ জন, রাজশাহী বিভাগের ৬ জন এবং রংপুর বিভাগের ২ জন ইউএনওকে বদলির প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে দেশের সব ইউএনওকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। ইউএনওদের বদলির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে গত ৩০ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে যেসব ইউএনওর বর্তমান কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ এক বছরের বেশি হয়ে গেছে, তাদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিতে পাঠানো প্রয়োজন। ইউএনওদের পাশাপাশি সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়েছে ইসি।

গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর থেকে বাছাই শুরু হয়েছে, বাছাই চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। আর আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় এর আরও খবর

img

ধর্ম আলাদা হলেও আমরা এক পরিবারের সদস্য: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত :  ১৭:৩৮, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ধর্ম আলাদা হলেও আমরা এক পরিবারের সদস্য। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশি, আমরা এক পরিবারের সদস্য। আমাদের নানা মত থাকবে, নানা ধর্ম থাকবে, নানা রীতিনীতি থাকবে কিন্তু পরিবার একটা।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

ধর্মীয় নেতাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের মনে অনেকগুলো প্রশ্ন জেগেছে। সেগুলোর জবাব খুঁজে পাওয়ার জন্যই আপনাদের সঙ্গে বসা। জুলাই অভ্যুত্থানের পর পরই এই সরকার যখন গঠন হয়, আগস্টের ৮ তারিখ আমি যখন বিমানবন্দরে উপস্থিত হলাম। তখন সবার কাছে আন্তরিকভাবে একটা আহ্বান জানিয়েছিলাম। সেটা কোন রাজনৈতিক বা শ্রোতাপ্রিয় বক্তব্য ছিল না। বলেছিলাম আমরা একটা পরিবার। আমাদের নানা মত থাকবে, নানা ধর্ম থাকবে, নানা রীতিনীতি থাকবে কিন্তু পরিবার একটা আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এটাতেই জোর দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, আমাদের শত পার্থক্য সত্ত্বেও আমরা কারও শত্রু না। পরস্পরের শত্রু না। আমরা এক জায়গাতে, এক কাতারে ওখানে চলে আসি। যেখানে আমাদের জাতীয়তার প্রশ্ন আছে, পরিচয়ের প্রশ্ন আছে। আমরা বাংলাদেশি, আমরা এক পরিবারের সদস্য।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যখন শপথ গ্রহণ করলাম, শুনলাম যে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যচার চলছে। এরপরই আমি খোঁজ নিই এবং ঢাকেশ্বরী মন্দিরে চলে যাই। সেখানে আমাকে কিছু দাবি-দাওয়া দেওয়া হলো। তবে একটি দাবি হচ্ছে ‘আমাদের সবার সমান অধিকার। বলার অধিকার, ধর্মের অধিকার ও কাজকর্মের অধিকার। সেগুলো আসবে সংবিধান থেকে এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেগুলো নিশ্চিত করা।’

তিনি বলেন, আমি তাদের আন্তরিকভাবেই বলেছিলাম যে আমরা এটা দেখব নিশ্চিত করার ব্যাপারে। সংবিধান নাগরিককে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেগুলো তার কাছে পৌঁছে দেওয়া ও নিশ্চিত করা আমার কাজ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারপরও শুনলাম যে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। তো আমি সবার সঙ্গে বসলাম এবং কথা বললাম যে এখান থেকে কী করে তাদের উদ্ধার করতে পারি? তখন পূজার সময় এল। আমি মনে করলাম এই সময়ে হামলা হবে। ফলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যাতে কোনো রকম হামলা না হয়।

তিনি বলেন, দুর্গাপূজা পুরো জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছিল। তখন তৃপ্তি পেলাম একটুতো কাজ করেছি। এখন আবার নতুন কথা, হামলা হচ্ছে, অত্যাচার শুরু হচ্ছে। বিদেশি গণমাধ্যম বলবো না প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, এসব হচ্ছে। আমি খোঁজ নিচ্ছি, কি হচ্ছে? সবদিকে দেখলাম এটা হচ্ছে না। এক খবরে বলা হচ্ছে, আরেক খবরে বলা হচ্ছে না, তথ্যের মধ্যে ফারাক আছে। এটা ঠিক না। এটার অবসান হতে হবে। আমরা যে তথ্য পাচ্ছি তা ভুল হতে পারে। ভুল তথ্যের ওপর বসে থাকার কিছুই নাই, এটার অর্থ অন্ধের মত বসে থাকা। ভেতরে গিয়ে দেখতে হবে। খোঁজ নিতে হবে তথ্যের গরমিল কেন? তাতে ওরা যা বলছে তা কি মিথ্যা প্রচার? না আমরা যা বলছি তা মিথ্যা প্রচার। সত্যটা কোথায়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্যের কোন ফারাক নেই। সেখানে সঠিক তথ্য কিভাবে পাব, সেটা আমাদের জানার। প্রকৃত তথ্য, অনেক সময় সরকারি তথ্যের ওপর ভরসা করে লাভ নেই। কর্তা যা চায়, সেভাবে বলে। আসলটা মন খুলে বলতে চাই না। আমরা আসল খবরটা জানতে চাই। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এতবড় দেশে যেকোন ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে চাই। তাৎক্ষণিক খবর পেলে যাতে সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই দোষী দোষীই। তাকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, প্রথম কথাটা হলো না হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা। আর হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের ব্যবস্থা করা। আমি যা বলছি তা দেশের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে। আমরা এক পরিবারের মানুষ হিসেবে সামগ্রিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি। সেখানে তথ্য ও প্রতিকার হলো বড় বিষয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি তথ্য পেলাম কিন্তু প্রতিকার পেলাম না। সমস্যা হয়ে গেলে সমাধান করতে হবে। আজকের আলোচনা খোলাখুলি, আমরা সবাই আলোচনা করব। আমাদের লক্ষ্যে কোন গোলমাল নেই। তথ্যপ্রবাহ কিভাবে পাব, দোষীকে কিভাবে ধরব। যাতে সবাই সঠিক তথ্যটা পেয়ে যায়। এমন বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যার নাম দিয়েছি নতুন বাংলাদেশ। এটা আমাদের করতে হবে। আপনাদের কথা বলে সন্তুষ্ট করে আজকের মত বিদায় দিলাম তা নয়। এটা দ্রুত করতে হবে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দেখলে হবে না, আমাদের বর্তমানেই করে যেতে হবে।

সংখ্যালঘু সমস্যার বিষয়ে অবাধ, সত্য তথ্য কিভাবে সংগ্রহ করা যায় সে বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কিভাবে নিরাপদে তথ্য সংগ্রহ করবো, যে তথ্য দিচ্ছে তা যেন বিব্রত না করে তাও নিশ্চিত হতে হবে।