img

ক্যানসার থেকে দূরে রাখে যেসব খাবার

প্রকাশিত :  ০৫:৫১, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:২৫, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ক্যানসার থেকে দূরে রাখে যেসব খাবার
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে যেসব খাবার

ক্যানসার একটি মরণব্যাধি। বাংলাদেশে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে বছরে দেড় লাখ লোক মারা যায়। বর্তমান সময়ে নিম্নমানের খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এই রোগের ঝুঁকি বাড়ছে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা।

 সুষম খাদ্য আমাদের শরীরকে পুষ্ট করে এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে পারে। এই পুষ্টিকর খাদ্য আমাদের শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার সরবরাহ করে যা শরীরকে ক্যানসারের বিরুদ্ধে রক্ষা করে। চলুন জেনে নেয়া যাক যেসব খাবার খেলে আমাদের শরীর ক্যানসারের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।

১. সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, ফুলকপি এবং ব্রাসেলস স্প্রাউটের মতো সবুজ শাকসবজির শক্তিকে চিনতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যাল সমৃদ্ধ এই সবজি স্তন এবং প্রোস্টেট ক্যানসার সহ বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম। 

২. বেরি ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং রাস্পবেরির মতো বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ। এই যৌগগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে যা ক্যানসারের সাথে যুক্ত। নাস্তা হিসাবে এক মুঠো বেরি উপভোগ করুন বা স্বাদ এবং স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য সকালে হালকা খাবার যোগ করুন। 

৩. হলুদ কারকিউমিন হল হলুদের একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ। গবেষণায় দেখা গেছে যে কারকিউমিন এমন বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ যা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। আপনার খাবারে হলুদ অন্তর্ভুক্ত করুন। 

৪. ফ্যাটি ফিশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, স্যামন এবং ম্যাকেরেলের মতো ফ্যাটি মাছে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, কিছু ক্যানসার, বিশেষ করে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাসের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। ওমেগা-৩ এর প্রদাহরোধী এবং প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্যের সুবিধা নিতে সপ্তাহে অন্তত দুবার আপনার খাদ্যতালিকায় চর্বিযুক্ত মাছ অন্তর্ভুক্ত করুন।  

৫. রসুন আপনার খাবারে স্বাদ যোগ করার পাশাপাশি, রসুনের সম্ভাব্য ক্যানসার-লড়াই বৈশিষ্ট্যের জন্যও গবেষণা করা হয়েছে। অ্যালিসিন, রসুনে পাওয়া একটি যৌগ, বিভিন্ন গবেষণায় ক্যানসার-বিরোধী প্রভাব প্রদর্শন করেছে। আপনার খাবারে তাজা রসুন যোগ করুন শুধু স্বাদ বাড়াতে নয় স্বাস্থ্য বাড়াতেও। 

ক্যানসার প্রতিরোধী খাবারগুলোকে আপনার জীবনের একটি অংশ করার পাশাপাশি, আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং তামাক এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল এড়ানো উচিত।

img

কান্নায় রয়েছে যেসব উপকারিতা

প্রকাশিত :  ১১:১৩, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:১৯, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

কান্নাকাটিকে অনেকে বিড়ম্বনার বিষয় বলেই মনে করেন। যদিও বাস্তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কান্না মন ও শরীর দুইয়ের জন্যই ভালো। আনন্দে আবেগআপ্লুত হয়েও অনেকে কাঁদেন। দুঃখ বা আঘাতে ব্যথা পেলে কান্না করাটা স্বাভাবিক ভাবে নেয় সবাই। তবে বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের কান্নার প্রবণতা বেশি। তেমনি পুরুষের তুলনায় বেশি কাঁদেন নারীরা। প্রতিটি মানুষই জীবনে কখনো না কখনো কাঁদবে এটাই স্বাভাবিক। 

তবে কান্নারও যে কিছু শারীরিক উপকারিতা রয়েছে তা নিশ্চই জানা ছিলনা? মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বীপেন চৌধুরী জানিয়েছেন কাঁদলে কী ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

ব্যথা উপশম করে

কান্নাকাটি করার ফ‌লে শরীরে এন্ডোরফিন উৎপন্ন হয়, যা কিছু কিছু ব্যথাও উপশম করে। কান্নাকা‌টি আপনার প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকেও সক্রিয় করে, যা শিথিলতা বাড়ায়, স্ট্রেস বা চাপ কমায় এবং ব্যথা উপশম করে।

চাপ প্রশমিত করে

কান্না কর্টিসলের মতো স্ট্রেস-সম্পর্কিত রাসায়নিকগুলো বের করে দেয়, যা আপনার শরীরকে ধু‌য়েমুছে ‌ডিট‌ক্সিফাই ক‌রে। ফ‌লে মান‌সিক দু‌শ্চিন্তা দূর হ‌য়ে যায়।

এনে দেয় প্রশান্তির ঘুম

অনেকক্ষণ ধ‌রে কান্নাকা‌টির ফ‌লে শরী‌রে বি‌ভিন্ন হর‌মোন নিঃসরণের পাশাপাশি প্রচুর শ‌ক্তি ক্ষয় হয়। মা‌ঝেমধ্যে পা‌নির ঘাট‌তি দেখা দেয়। যার ফ‌লে ম‌াথা ঠান্ডা হ‌য়ে একধর‌নের প্রশা‌ন্তি বোধ কর‌বেন, এটা আপনাকে শান্তিপূর্ণ ও নিরবচ্ছিন্ন ঘুম দি‌তে পারে। তাই ঘুমানোর আগে মা‌ঝেম‌ধ্যে একটু কান্নাকাটি করতেই পা‌রেন!

ব্যাকটেরিয়ার বিরু‌দ্ধে লড়াই করে

চো‌খের পা‌নি‌তে লাইসোজাইম নামক একধর‌নের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এনজাইম রয়েছে। লাইসোজাইম ক্ষতিকারক জীবাণু ধ্বংস করে আপনার চোখকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা ক‌রে।

মুড ভা‌লো করে

ম‌নো‌বিদেরা ব‌লেন, কান্না আবেগ দমন ক‌রে আপনার মুড ভা‌লো করে দি‌তে পা‌রে। কান্নার মাধ্যমে আপনি প্রকারান্ত‌রে ক্ষতিকর হরমোনগুলো শরীর থেকে বের করে দিয়ে ফুরফুরে হয়ে ওঠেন।

কান্নাকা‌টি করার সময় আমরা দ্রুত নিশ্বাস নিই, এতে মস্তিষ্ক ‘ঠান্ডা’ হ‌য়ে অক্সিজেন নেওয়ার ক্ষমতা বেড়ে যায়।

চোখ‌ সুস্থ রাখে, উন্নত করে দৃষ্টিশক্তি

কান্নাকা‌টি চোখকে স্বাভাবিকভাবে পি‌চ্ছিল করে, শুষ্কতা প্রতিরোধ করে, কর্নিয়া থাকে আর্দ্র ও পরিষ্কার। ফলে সংক্রামক ব্যাধির ঝুঁকি কমে। চোখের জল ধুলাবালু ও অন্য বিরক্তিকর পদার্থগুলো ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করে। এ ছাড়া নেত্রনালি সতেজ করে চোখকে আরাম দেয় কান্না।

মানসিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে

অনেক সময় বন্ধু বি‌য়োগ হ‌লে বা ব্রেকআপ হ‌লে আমরা কান্নায় ভেঙে প‌ড়ি। এ ধর‌নের অপ্রতিরোধ্য অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে কান্না। তখন মানু‌ষের ম‌ধ্যে উত্তেজনা ও চাপ কাজ ক‌রে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ ক‌রে মানসিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে কান্না।

বাচ্চাদের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে ও ঘুমাতে সাহায্য করে

শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে কি কা‌রো ভা‌লো লা‌গে? কিন্তু কান্নাকা‌টি শিশুদের জন্যও উপকারী। এটি শিশু‌দের শ্বাসনালি পরিষ্কার করে। বে‌শি বে‌শি অক্সিজেন নি‌তে সহায়তা করে। এতে তার কষ্ট লাঘব হয়। 

‘ছন্দোবদ্ধ’ কান্না শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাসকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ঠিক বড়‌দের ম‌তোই কান্নাকা‌টির পর শিশু‌দের চাপ ও দুশ্চিন্তা ক‌মে যায়, ফ‌লে সে রিল্যাক্সড হয়। ঘুম ভা‌লো হয়।

প্রশান্তি এনে দেয়

চিৎকার ক‌রে বা নীর‌বে—যেভাবেই কান্নাকা‌টি করুন না কেন, দেখ‌বেন আপনার মন কিছুটা হালকা লাগ‌ছে। কারণ, কান্না আপনা‌কে প্রশান্তি দি‌তে পা‌রে। কান্না আমা‌দের প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে। 

যা স্নায়ু শিথিলীকরণের জন্য দায়ী বিভিন্ন হরমোনের নিঃসরণ, হজম ও সেরে ওঠার স‌ঙ্গে জ‌ড়িত। কান্নার ফলে এন্ডোরফিন বা ‘সুখী হরমোন’ নিঃসৃত হয়, যা প্রশান্তির অনুভূতি তৈরি ক‌রে।

সামাজিক বন্ধন শক্তিশালী করে

মু‌খে না বলেও কান্নার মাধ্যমে অন্যদের কাছে আমাদের সমর্থন, সহানুভূতি, সান্ত্বনা প্রকাশ কর‌তে পা‌রি। এতে সামাজিক বন্ধন শক্তিশালী হয়।

ত‌বে আপনি যদি প্রায়ই কান্নাকাটি করেন আর এটি যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করে বা উদ্বেগের কারণ হয়, তাহলে একজন মনো‌বি‌দের শরণাপন্ন হ‌তে পারেন।