খাদ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় কৌশল হলো ফ্রিজ। ফ্রিজ ছাড়া এখনকার দিনে আমাদের জীবন প্রায় অচল। পরিবারের বন্ধুর মতোই খাবার সংরক্ষণের কাজটি করে থাকে ফ্রিজ। আমাদের অনেক সময়, অর্থ, পরিশ্রম বাঁচিয়ে দিচ্ছে কাজের এই যন্ত্রটি।
কিন্তু কোন খাবার কতদিন ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে, এটা না জানার কারণে খাবারের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
আসুন জেনে নেই কোন খাবার কতদিন:
মাছ-মাংস
রান্না করা মাছ,মাংস সাধারণত চার দিন পর্যন্ত ফ্রিজে রাখতে পারেন। প্রতিদিনের জন্য ছোট ছোট বক্সে ঢাকনা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখুন।
আর কাঁচা মাছ-মাংস অবশ্যই ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এভাবে মাছ দুই সপ্তাহ, মুরগি এক মাস এবং গরু ও খাসির মাংস তিন মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। মাছ মাংস কেটে ধুয়ে, পানি ঝরিয়ে প্রতিবার যেটুকু রান্না করবেন, সেই পরিমাণে প্যাকেট করে রাখুন।
ডিম
১২ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
দুধ
গরমে প্যাকেটজাত দুধ কেনার সময় অবশ্যই মেয়াদ দেখে নিন। ফ্রিজে সংরক্ষণ করলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই খাবেন।
সবজি
সবজি বাজার থেকে এনে ধুয়ে পানি শুকিয়ে ফ্রিজে রাখুন দুই থেকে তিন দিনের বেশি ফ্রিজে সবজি না রেখে টাটকা সবজি খান।
ফল
মৌসুমী ফল ২ থেকে ৩ দিন ভালো থাকে।
ফ্রিজে বেশিদিন খাবার রাখলে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। নিজের পরিবারের সবার স্বাস্থ্য তো ভালো রাখতে হবে। এজন্য ফ্রিজে খাবার রাখার সময় যেমন সচেতন হতে হবে, তেমনি ফ্রিজটিও নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে।
বাসার চাবি কোথায় রেখেছেন তা মনে না পড়া কিংবা বাজার থেকে কী কী কিনতে হবে তা হুট করে ভুলে যাওয়ার সমস্যায় ইদানীং অনেকেই ভুগছেন। এমনটা যে বয়স্কদের হচ্ছে তা নয়। অনেক কম বয়সীদের মধ্যেও এ ধরনের ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যাচ্ছে। হুট করে সবকিছু গুলিয়ে যাওয়া, প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে ভুলে যাওয়া কিংবা পছন্দের মানুষের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর তারিখ ইত্যাদি ভুলে যাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা নয়। চলার পথে হুট করে কিছু মনে না রাখত্রে পারলে খানিকটা পিছিয়ে পড়তে হয়। কখনো কখনো অন্যদের সামনে বেশ অস্বস্তিতেও পড়তে হয়।
কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? গবেষকরা বলছেন, প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ব্যাহত করছে। দিনের পর দিন একই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে।
উচ্চস্বরে গান শোনা: গান শোনা খুব ভালো একটি অভ্যাস। গান শুনলে মস্তিষ্ক শীতল হয়। দুশ্চিন্তা দূর হয়। কিন্তু কানে হেডফোন গুঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উচ্চস্বরে গান শুনলে মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়। টানা ৩০ মিনিট অতি উচ্চমাত্রার শব্দ শুনতে থাকলে শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ রূপে লোপ পেতে পারে। শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে পারে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম: অতিরিক্ত ‘স্ক্রিন টাইম’ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। অফিসে সারা ক্ষণ কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের সামনে মুখ গুঁজে বসে থাকা, সারাক্ষণ ফোন স্ক্রল করা, স্ক্রিনে গেমস খেলা, ওয়েব সিরিজ দেখা ইত্যাদি কাজগুলো করলে দিনের অধিকাংশ সময় স্ক্রিনে চোখ থাকে। এতে চোখের যেমন ক্ষতি হয়, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও কমে যায়। এতে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ে।
অন্ধকারে থাকা: কেউ কেউ অন্ধকারে থাকতে ভালোবাসেন। দীর্ঘ সময় অন্ধকারে থাকার অভ্যাস মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। এই অভ্যাস মনে বিষণ্ণতা তৈরি করে। আর বিষণ্ণতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে ধীর করে দেয়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে প্রাকৃতিক আলোতে থাকতে হবে। সূর্যের আলোতে সময় কাটাতে হবে। এতে মেজাজ ভাল থাকে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বাড়ে।
একা থাকার অভ্যাস: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুঁ মারলে অনেক বন্ধু পাওয়া যায়। কিন্তু ভার্চুয়াল বন্ধুরা কাছের হয় না। এখন বেশিরভাগ মানুষ ভেতর থেকে একা হয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই ভীড়-আড্ডা-অনুষ্ঠানে যেতে চান না। পারিবারিক অনুষ্ঠান হোক কিংবা অফিসের পার্টি— সব কিছুই এড়িয়ে চলতে চান। অর্থাৎ নিজের মতো একা থাকতে চান। একা থাকার অভ্যাসও কিন্তু মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যাঁরা কাছের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় হাসিখুশি ও কর্মদক্ষ হন। তাঁদের স্মৃতিশক্তিও অন্যদের তুলনায় বেশি হয়।
অধিক পরিমাণে চিনি খাওয়া: অতিরিক্ত চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার খাওয়াও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। আবার বার্গার, ভাজাপোড়া খাবার, আলুর চিপ্স বা কোমল পানীয়ের মতো খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার জন্য দায়ী। তাই এসব খাবারের বদলে খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি, ফল ও বাদামজাতীয় খাবার রাখতে হবে।