img

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে যা বললেন বুয়েট উপাচার্য

প্রকাশিত :  ১০:৩৭, ৩০ মার্চ ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:২২, ৩০ মার্চ ২০২৪

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে যা বললেন বুয়েট উপাচার্য

বুয়েট ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকে বেআইনি বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে যে আন্দোলন চলছে সেটার সঙ্গেও তিনি সহমত পোষণ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণ সময়সাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন বুয়েট ভিসি।

শনিবার বেলা সোয়া ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বুয়েট উপাচার্য এ কথা বলেন। 

এর আধাঘণ্টা আগে বুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করেন। বিক্ষোভ শেষ করার আগে শিক্ষার্থীরা রোববারও টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দেন।

ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। সকাল ৭টায় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও গত বুধবার মধ্যরাতের পর বহিরাগত কিছু নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান। 

বুধবার মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন, যিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে শুক্রবার উত্তাল ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। পাঁচ দফা দাবিতে দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ করেন তারা। 

তারা দাবি আদায়ে আজ ও আগামীকালের (৩০ ও ৩১ মার্চ) পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা পরীক্ষা স্থগিত করিনি। তারা (শিক্ষার্থী) বর্জন করেছেন। তারা পরীক্ষা স্থগিতের আবেদনও করেননি। তারা আবেদন করলে আমরা বিবেচনা করতাম। তারা এখানে ভুল করেছেন। পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু তারা পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী ঘণ্টা বাজবে, ছাত্ররা আসুক না আসুক—এমন ঘটনা বুয়েটে আগেও ঘটেছে। পরে তারা পরীক্ষার জন্য আবেদন করলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বিবেচনা করতে পারে।

ডিএসডব্লিউর পদত্যাগের দাবির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ডিএসডব্লিউর পদত্যাগের বিষয়ে এখন আমরা চিন্তা করছি না। কারণ এটা নরমাল একটা প্রসিডিউর। নিয়মানুযায়ী যখন হওয়ার হবে। 

ডিএসডব্লিউ বলেছেন, তার পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না। শিক্ষার্থীরা দাবি করতেই পারেন। কিন্তু দাবির মুখে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। সময় হলে আমরা নতুন ডিএসডব্লিউ নিয়োগ দেব।’

মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশের দায় কার—এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেব যে কেন তিনি ঢুকতে দিলেন। 

তার তো ঢুকতে দেওয়া উচিত হয়নি। গভীর রাতে কেউ (ক্যাম্পাসে) ঢুকলে এটা অবশ্যই অমানবিক বা অনিয়মতান্ত্রিক। কে ঢুকেছে, তাকে তো আগে চিহ্নিত করতে হবে।

চিহ্নিত না করে তো শাস্তি দেওয়া যাবে না। তার জন্য সময় প্রয়োজন। যদি কোনো নিরাপত্তারক্ষী বহিরাগত ব্যক্তিদের ঢুকতে দিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন, এমন মন্তব্য করে বুয়েট উপাচার্য বলেন, কিন্তু সকাল ৯টা, বেলা ২টা—এভাবে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। দাবি পূরণ করার জন্য যা যা করার, করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন এলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। 

নিয়মের বাইরে আমি কিছু করতে পারব না। নিয়মবহির্ভূতভাবে একজনকে বহিষ্কার করলে সেটা আদালতে টিকবে না। নিয়মের মধ্যে সবকিছু করার জন্য সময়ের প্রয়োজন। যেহেতু রোজার মাস, সময় একটু বেশি দেওয়া উচিত ছিল।

শিক্ষা এর আরও খবর

img

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা শিক্ষক সমিতির

প্রকাশিত :  ১০:১৩, ১৫ মে ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১১:১৩, ১৫ মে ২০২৫

শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘোষণা আলোচনা শেষে কাকরাইলে চলমান আন্দোলনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নিয়ে এসেছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমাদের ওপর নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা এবং অন্যায়। আমরা কারো বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি। কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসিনি। আমাদের অধিকার চাইতে, আমাদের দাবি আদায় করতে এসেছি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে না।

অধ্যাপক রইস উদ্দিন বলেন, আমাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় ভালো হবে না। চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছে। অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরেননি কেউ। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়ে আজ সকালেও অবস্থান করছেন।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো— বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী। লং মার্চটি গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে লং মার্চে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

পরবর্তীতে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ সামনে বিফ্রিং করতে আসেন। বিফ্রিংয়ে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বক্তৃতার একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুঁড়ে মারেন একজন। উপদেষ্টা বিফ্রিং বন্ধ করে চলে যান।

এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা।


শিক্ষা এর আরও খবর