img

পড়াশোনার খরচ বেড়েছে প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৫১ শতাংশ

প্রকাশিত :  ১৪:৪৪, ৩০ মার্চ ২০২৪

পড়াশোনার খরচ বেড়েছে প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৫১ শতাংশ

শিক্ষা মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি। এই শিক্ষা ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে একটি পরিবারের ব্যয় হয় প্রায় ১৪ হাজার টাকা। আর মাধ্যমিকে ২৭ হাজার টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে ৫১ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে।

আজ শনিবার বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘বাংলাদেশে বিদ্যালয় শিক্ষা: মহামারি উত্তর টেকসই পুনরুত্থান’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এডুকেশন ওয়াচ–২০২৩ নামে এই গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্রিফিং করা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর জন্য বছরে গড়ে ১৩ হাজার ৮৮২ টাকা খরচ হয়। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে খরচ কম। গ্রামে বছরে গড়ে ১০ হাজার ৬৩৭ এবং শহরে ১৮ হাজার ১৩২ টাকা খরচ হয়। গত বছরের (২০২৩) প্রথম ছয় মাসে এ খরচ ৮ হাজার ৬৪৭ টাকা বা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। 

সারা দেশের ৮ বিভাগের ১৬টি জেলার মধ্যে থেকে ২৬টি উপজেলা ও ৫টি সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণার জন্য বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট ৭ হাজার ২২৫ জনের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। 

এদিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে গড়ে খরচ হয় ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। এর মধ্যে গ্রামে ২২ হাজার ৯০৯ এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ৬৬২ টাকা ব্যয় হয়। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে এ খরচ অন্তত ২০ হাজার ৭১২ টাকা বা ৫১ শতাংশ বেড়েছে। 

 ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর এবং গত বছরের (২০২৩) জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তুলনামূলক উপাত্তের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ খরচের বড় অংশই চলে যায় টিউশনি বা কোচিং সেন্টারে। এ ছাড়া বাকি খরচ হয় গাইড বইসহ সহায়ক বিভিন্ন সামগ্রী, যাতায়াত, খাবার, শিক্ষা উপকরণ (বই, খাতা, কলম), স্কুলের বিভিন্ন ফি এবং এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজে। 

এ বিষয়ে এডুকেশন ওয়াচ–২০২৩–এর মুখ্য গবেষক ড. মনজুর আহমদ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে খরচ বেড়েছে। প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিক ৫১ শতাংশ খরচ বেড়েছে। খরচ বেশি হচ্ছে কোচিং, টিউশনি ও গাইড বইয়ে। 

গবেষণার তথ্য বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মহামারির পরে তাদের নতুন শ্রেণির পাঠ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী পাঠ বোঝার ক্ষেত্রে অসুবিধায় ছিল। 

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে তিন–চতুর্থাংশের বেশি শিক্ষার্থী প্রাইভেট টিউটরের সহায়তা নিয়েছে বা কোচিং সেন্টারে গেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় এই নির্ভরতার হার ছিল যথাক্রমে ৯২ ও ৯৩ শতাংশ। 

গবেষণার তথ্য বলছে, করোনা মহামারির কারণে দ্বিতীয় শ্রেণির ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়েছে। আর ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বর্তমানে প্রাথমিক স্কুল বয়সী শিশুদের ৪১ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের ৪৯ শতাংশ কাজ বা শিশুশ্রমে নিয়োজিত আছে। 

করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় স্থানান্তরের বিষয়টিও গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এ বিষয়ে বলা হয়, ২০২০ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদ্রাসায় স্থানান্তরের একটি প্রবণতা দেখা গেছে। মাধ্যমিক স্তরের তুলনায় প্রাথমিক স্তরে এ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি (৬ দশমিক ৪ শতাংশ) ছিল। এর কারণ হিসেবে প্রায় দুই–তৃতীয়াংশ অভিভাবক ধর্মীয় কারণকে প্রধান বিবেচ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এক–পঞ্চমাংশ বলেছেন, মাদ্রাসা বাড়ির কাছে ও মহামারি চলাকালে মাদ্রাসা খোলা ছিল এবং মূলধারার স্কুলগুলো তখন বন্ধ ছিল।



শিক্ষা এর আরও খবর

img

দক্ষিণ কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় রোস্টারভুক্ত ভিসা প্রত্যাশীদের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশিত :  ০৬:৩৮, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫০, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় পাস করা রোস্টারভুক্ত ডিলিট হওয়া (ইপিএস) কর্মীদের পুনঃরোস্টার ও সব রোস্টারভুক্তকে ভিসা ইস্যু করার লক্ষ্যে ৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ইপিএস কর্মীরা।

আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় রোস্টারভুক্ত সকল ভিসাপ্রত্যাশী’র ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করেন তারা।

এ সম্পর্কে রোস্টারভুক্ত ভিসাপ্রত্যাশী'রা বলেন, ‘ভাষা শিক্ষার দুই বছর পার হয়ে গেলে আমাদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকশ লোক ভাষা শিখেছেন, অথচ এখন মেয়াদ শেষ। এত কষ্ট করে এত টাকা খরচ করে আমরা ভাষা শিখেছি, সেটা কি বিফলে যাবে? আমরা আর কত অপেক্ষা করবো?

ইপিএস কর্মীদের চলমান সংকট নিরসনের জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়:

১. ২০২২ সাল থেকে শুরু করে যে সকল কর্মী ডিলেট হয়েছে বা হবে সে সকল কর্মীদের রাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পূণঃরোস্টার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এবং ২০২৩ সাল সহ যে সকল ইপিএস কর্মী রোস্টারে আছে তাদের ডিলিট না হওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

২. দুই বছরের ১০টি ইস্যুতে ৭-৮ বার কোম্পানির মালিকের কাছে আমাদের ফাইল বাধ্যতামূলক পৌছাতে হবে এবং সেটা সিরিয়াল/সাল/বছর অনুযায়ী হতে হবে। ৩. বর্তমান রোস্টারকৃত কর্মীদের মধ্যে ৭৫-৮৫ ভাগ কোরিয়াতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত সকল প্রকার

সার্কুলার বাণিজ্য বন্ধ রাখতে হবে। ৪. কোরিয়ার প্রত্যেক বানিজ্যিক জোনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এজেন্ট নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে, কমপক্ষে (৪-৫ জন)। যারা

প্রত্যেক ইস্যুর পূর্বে তাদের নির্ধারিত জোনের আওতাভুক্ত কোম্পানিতে গিয়ে ইস্যুর জন্য কোম্পানির মালিকদের উৎসাহিত করবে। ৫. ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন মুক্ত বাংলাদেশ ইপিএস ঘোষণা করতে হবে। আর্থিক লেনদেনের কোন প্রমান পেলে বোয়েসেল/এইচ.আর.ডি সেই সকল চত্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয় কোন পক্ষ থাকলে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৬. নতুন নতুন খাত/সেক্টর খুঁজে বের করে রোস্টারভুক্তদের মধ্য হতে সরকারি প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী গড়ে তুলে তাদের কোরিয়া যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতায় ও কূটনৈতিক বিচক্ষন্তার মাধ্যমে সকল রোস্টারভূক্তদের কোরিয়ায় প্রবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে যাতে কোন কর্মী কোরিয়াতে প্রবেশ করতে না পারে সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৭. মৎস, কনস্ট্রাকশন, শিপ বিল্ডিং খাতের ভিসা ইস্যু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। রোস্টারকৃত কর্মীদের ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোন অঞ্চল থেকে রোস্টারবিহীন কাউকে ভিসা ইস্যু করা যাবেনা, এই বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। প্রয়োজনে তাদের অন্য খাত/সেক্টরে রোস্টার পরিবর্তন করে হলেও ভিসা ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে।

৮. কোরিয়া প্রবাসী কোন কর্মী কোম্পানি পরিবর্তন বা রিলিজ নেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির এজেন্ট স্ব-শরীরে কোম্পানিতে গিয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে।

৯. বর্তমান সংকট নিরসনে দ্রুততার সহিত বোয়েসেলের কর্মকর্তাগন সফল না হলে ব্যার্থতার দ্বায় নিয়ে অতিশীগ্রই তাদের পদত্যাগ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপে বোয়েসেলকে বিচক্ষণ লোকদের সমন্বয়ে ঢেলে সাজাতে হবে।

শিক্ষা এর আরও খবর