মার্কিন প্রতিবেদন

img

বাংলাদেশে বিনিয়োগে বড় বাধা ঘুষ-দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা

প্রকাশিত :  ১৭:৩৭, ৩০ মার্চ ২০২৪

বাংলাদেশে বিনিয়োগে বড় বাধা ঘুষ-দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা

ঘুষ, দুর্নীতি, অস্বচ্ছতাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২৯ মার্চ) মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর (ইউএসটিআর) প্রকাশিত ২০২৪ সালের বৈদেশিক বাণিজ্যে বাধাবিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বাধাগুলো চিহ্নিত করা হয়।

বিদেশি বিনিয়োগ বাধা নিয়ে ২০২৪ জাতীয় বাণিজ্য প্রাক্কল শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ও বাছাই প্রক্রিয়ার কথা বলে থাকে। তবে নিজের শুল্ক মূল্যায়ন নীতি সম্পর্কে এখনো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) অবহিত করেনি দেশটি।

বাংলাদেশ জাতীয় ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল চালু করলেও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদাররা বিভিন্ন দরপত্রে প্রত্যাশিত পণ্যের পুরোনো কারিগরি মান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। এ ছাড়া কারিগরি মান পছন্দের দরদাতাদের কাজ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্ধারণ করা হয় কি না, তা নিয়ে মার্কিন অংশীদারদের সন্দেহ আছে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতার অভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানির দাবি, ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটাতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির দরপত্র ঠেকাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীরা স্থানীয় অংশীদারদের ব্যবহার করে। এমনকি দরপত্র বাছাইয়ে কারচুপির অভিযোগও ওঠে এসেছে। ডব্লিউটিওর সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত চুক্তির অংশীদার নয় বাংলাদেশ। ডব্লিউটিওর এ-সংক্রান্ত কমিটির পর্যবেক্ষক হয়নি দেশটি।

মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু আইনগত উদ্যোগ নিলেও বাংলাদেশে এর কার্যকর প্রয়োগ অনিশ্চিত। মার্কিন প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, সারা বাংলাদেশেই নকল ও পাইরেটেড পণ্য সহজলভ্য। ভোগ্যপণ্য, পোশাক, ওষুধ ও সফটওয়্যার খাতের পণ্যগুলো বাংলাদেশে নকল হচ্ছে বলে মার্কিন অংশীদাররা অভিযোগ করেছেন।

বাংলাদেশে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন বাধার কথা উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (২০১৩ সালে সংশোধিত) কথা বলা হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয় এই আইনের মাধ্যমে কীভাবে বাংলাদেশ সরকার তথ্য বা উপাত্ত প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে যেকোনো কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ এবং তথ্য আটকানোর কাজ করতে পারে।

ডিজিটাল বাণিজ্যে বাধা হিসেবে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরদের রাজনৈতিক কারণে ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২৩ সালে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ রাজনৈতিক কর্মসূচির আগে বিভিন্ন সময়ে ডেটা ট্রান্সমিশন সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়, বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ভয়েস কল ব্যতীত সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত সমস্ত পরিষেবা ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে মন্ত্রিসভা থেকে নীতিগতভাবে অনুমোদন পাওয়া ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি বিভাগ) ডেটা সুরক্ষা আইনের বিষয়ে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। যেখানে শিল্প এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্বেগের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার কথা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা তুলে ধরেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স বিদেশে পাঠাতে আইনি জটিলতার কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শ্রম ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করে। এটি এখনো বহাল রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি বিস্তৃত এবং দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা এবং দুর্নীতি দমন আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় না। সুবিধা প্রদান এবং উপহারের অবৈধতা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘুষ এবং চাঁদাবাজি ব্যবসার সাধারণ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ চাওয়ার কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো লাইসেন্স ও বিডের অনুমোদন পেতে দীর্ঘ বিলম্বের অভিযোগ করেছে।

প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে- এমন বিষয় তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত সরকারি চাকরি আইন বিল হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যেকোনো সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার আগে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদকের ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। এর পরও দুদক ক্রমবর্ধমানভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করছে। তবে সেখানে বহু মামলাই অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে।

অর্থনীতি এর আরও খবর

img

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক উদ্যোগ: সেকেন্ড হোম বাংলাদেশের বিনিয়োগে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা!

প্রকাশিত :  ১৯:২০, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে আত্মপ্রকাশ করেছে এক নতুন ও দৃষ্টান্তমূলক প্রকল্প, সেকেন্ড হোম বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এই প্রকল্পটি দেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য শুধুমাত্র আর্থিক লাভের উৎস নয়, বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কর্মসংস্থানের এক নিশ্চিত সুযোগও এনে দিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু দেশের রিয়েল এস্টেট খাত নয়, সমগ্র অর্থনৈতিক কাঠামোতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ একসঙ্গে! 

সম্প্রতি সেকেন্ড হোম বাংলাদেশ প্রকল্পের সিইও এক অভূতপূর্ব ঘোষণা দেন যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রথম ২০০ জন বিনিয়োগকারী যারা এই প্রকল্পে শেয়ার কিনবেন, তাদের পরিবারের মেধাবী ২০০ জন সদস্যকে মেধার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ দেওয়া হবে। এই অভিনব উদ্যোগটি বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে একটি বিরল সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এটি এমন একটি সময়ে এসেছে যখন দেশের কর্মসংস্থান বাজারে চাকরি পাওয়া এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। ফলে, এই উদ্যোগটি বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ভবিষ্যত এবং পরিবারের কর্মসংস্থান উভয়ই সুরক্ষিত করতে সক্ষম হবে।

দেশের চাকরি প্রার্থীদের জন্য স্বপ্নের সুযোগ 

চাকরির বাজার যেখানে প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, সেখানে সেকেন্ড হোম বাংলাদেশ প্রকল্পটি এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। প্রথম ২০০ জন বিনিয়োগকারী শেয়ার কেনার মাধ্যমে নিজেদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবারের মেধাবী সদস্যদের জন্য চাকরির একটি নিশ্চিত পথ তৈরি করছেন। দেশের যুবসমাজ এবং মেধাবী ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি নতুন দিগন্তের সূচনা।

সেকেন্ড হোম বাংলাদেশ: পূর্ণাঙ্গ জীবনধারা প্রকল্প 

সেকেন্ড হোম বাংলাদেশ কেবল একটি আবাসন প্রকল্প নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনধারা উন্নয়নের পরিকল্পনা। গাজীপুরের মাস্টারবাড়িতে অবস্থিত এই প্রকল্পটি রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। প্রকল্পটি দেশে এমন এক সমন্বিত জীবনধারার সুযোগ নিয়ে এসেছে যা বিনিয়োগকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক লাভের পাশাপাশি উন্নত মানের জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।