img

বিয়ানীবাজারে আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী (রহ.) ট্রাষ্ট এর রামাদ্বানের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

প্রকাশিত :  ০২:২২, ০৪ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ানীবাজারে আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী (রহ.) ট্রাষ্ট এর রামাদ্বানের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

সিলেটের বিয়ানীবাজারে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ, পীরে কামিল, হযরত আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.) ট্রাষ্টের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পবিত্র রামাদ্বান মাস উপলক্ষে দুবাগী ছাহেব বাড়ীতে এলাকার শতাধিক গরীব ও অসহায় পরিবারের মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

৩১ মার্চ রোববার বাদ জোহর, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুবাগ মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক হাফিজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, দক্ষিণ দুবাগ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা কাজী আব্দুল কাদির, দুবাগ মক্তব মসজিদের ইমাম মাওলানা শিহাবুজ্জামান, দক্ষিণ দুবাগ বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জামিল আহমদ সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, পীরে কামিল, হযরত আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দিন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব ক্বিবলাহ (রহ.) নিজ এলাকা সহ বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন স্থানে নিরবে নিভৃতে গরীব এতিম, বিধবা, প্রতিবন্দী অসহায়দের সার্বিক সাহায্য—সহযোগিতা ও সেবামূলক কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মসজিদ—মাদ্রাসা, রাস্তা—ঘাট ইত্যাদি নির্মাণে সাহায্যের হাত প্রসারিত করতেন। এতিম অনাথদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতেন। অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তা, অসহায় মানুষকে ঘর তৈরী ও মেরামত, ঢেউটিন বিতরণ, নিরাপদ পানি পানের জন্য টিউবওয়েল স্থাপন, চিকিৎসা বঞ্চিতব্যক্তি, আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন দুর‌্যোগ ও আপদকালীন সময়ে অসহায় অস্বচ্ছল লোকজনকে সার্বিকভাবে সহায়তা ও সহযোগিতা সহ সামাজিক সকল কর্মকান্ডে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। 

এছাড়া আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিদেশের মাটিতে থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সময়েও দেশের মানুষের কথা ভুলে যান নি। এই মাতৃভূমির অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের কথা বিবেচনা করে সব সময় সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। 

উপস্থিত সবাই দয়াময় আল্লাহর দরবারে করজোড়ে দোয়া করেন তিনি যেন হযরত আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব (রহ.)’র কবরকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিন। এছাড়া হযরতের রেখে যাওয়া সকল খেদমত, ঐতিহ্য ও স্মৃতিকে আজীবন হেফাজত রাখেন। পরে চাল, ডাল, আলু, ভোজ্য তেল, ছোলা সহ বিভিন্ন পন্যের খাদ্য ও ইফতার সামগ্রীর বিতরণ করা হয়। এসব খাদ্য সামগ্রী পেয়ে গরীব অসহায় দরিদ্র পরিবারগুলো খুবই আনন্দিত হয়েছেন।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

কুলাউড়ায় স্কুল ছাত্রী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, ঘাতক গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার

প্রকাশিত :  ১২:৫৮, ১৭ জুন ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৯, ১৭ জুন ২০২৫

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় স্কুল ছাত্রী নাফিসা জান্নাত আনজুম (১৫) হত্যায় প্রতিবেশী মো: জুনেল মিয়াকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া আসামির দেখানো মতে এবং পুলিশের তল্লাশীকালে হত্যাকাণ্ডের আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখা ভিকটিমের পরিহিত বোরকা, স্কুল ব্যাগ, বই ও একটি জুতা উদ্ধার করে পুলিশ। 

সোমবার (১৬ জুন ) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে  মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন এসব তথ্য গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন।

গত ১২ জুন সকালে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের আব্দুল খালিকের কন্যা এবং স্থানীয় শ্রীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী নাসিফা জান্নাত আনজুম (১৫) 
কোচিং ক্লাসে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় । এরপর সে আর ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়েও তাকে না পেয়ে স্বজনরা ঐ দিনই কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ।

নিখোঁজের দুই দিন পর ১৪ জুন বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে বাড়ির পাশের ছড়ার পাশে দূর্গন্ধ পেয়ে ভিকটিমের ভাই ও মামা অর্ধগলিত মরদেহটি খুঁজে পান এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় থানায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। 

ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, কুলাউড়া সার্কেলের (অতিঃ দায়িত্বে) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আজমল হোসেন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম আপছার, পুলিশ পুরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্যসহ একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। 

দ্রুততম সময়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল (অতিঃ দায়িত্বে কুলাউড়া সার্কেল) নেতৃত্বে কুলাউড়া থানার অফিসারদের নিয়ে কয়েকটি বিশেষ টিম গঠন করে আশেপাশের বাপক তল্লাশী করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলের পাশে একটি ঝোপ থেকে ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ, বই এবং একটি জুতা উদ্ধার করা হয়। 

শুধু স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিশেষ ৬টি টিম গঠন করা হয়। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, আলামত উদ্ধারের জাগো এবং নারী ঘটিত কিছু বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্টতা দেখে সন্দেহ হওয়ায় জুনেল মিয়াকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তার মোবাইল চেক করে পর্ন সাইটে ব্রাউজিং এর তথ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে। আটকের পর দুপুর থেকে রাত প্রায় ১২ টা পর্যন্ত জুনেল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে পুলিশ সুপারের সামনে রাত ১২ টার দিকে হত্যাকাণ্ডে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। 

জিজ্ঞাসাবাদের জুনেল মিয়া জানায়, ভিকটিম তার বাড়ির সামনের একটি রাস্তা দিয়ে প্রায়ই স্কুল ও প্রাইভেটে আসা যাওয়া করত। সেই সুবাদে জুনেল মিয়া ভিকটিমের সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে ঘটনার দিন গত ১২জুন ভিকটিম পাশের গ্রামে প্রাইভেট পড়া শেষে আসামীর বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় আসামী ভিকটিমের সাথে কথা বলতে বলতে তার পিছু নেয়। ভিকটিম এড়িয়ে যেতে চাইলে জুনেল মিয়া ভিকটিমকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। তখন ভিকটিম চিৎকার করলে জুনেল মিয়া তার হাত দিয়ে গলায় চাপ দিয়ে ধরলে ভিকটিম ঘটনাস্থল কিরিম শাহ মাজারের মধ্যের রাস্তায় অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর ভিকটিমকে মোকাম সংলগ্ন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়ার পাড়ে ঝোপে ফেলে রাখে। 

মোকামের মাঠে পড়ে থাকা ভিকটিমের স্কুল ব্যাগ ও একটি জুতা ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী ঘন ঝোপে  এবং ভিকটিমের পরিহিত বোরকাটি নিকটবর্তী কিরিম শাহ মাজারের উত্তর পাশে জনৈক রওশন আলী গংয়ের পারিবারিক কবরস্থানের সীমানা বাউন্ডারীর পাশে ছুড়ে ফেলে দেয়। পুলিশ আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার দিবাগত রাতে স্থানীয় লোকজন এবং মিডিয়ার উপস্থিতিতে ভিকটিমের সেই বোরখা উদ্ধার করে।

সিলেটের খবর এর আরও খবর