img

গাজায় শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, ৪ শিশুসহ নিহত ১৪

প্রকাশিত :  ০৫:২৪, ১০ এপ্রিল ২০২৪

গাজায় শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, ৪ শিশুসহ নিহত ১৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলী হামলায় ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন শিশু।

বুধবার (১০ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েল বোমা হামলা চালালে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-জাওয়াইদা এলাকায় আবু ইউসুফ পরিবারের একটি বাড়ি থেকে ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই বাড়িতে বোমাবর্ষণ করেছিল।

এর আগে হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে চার শিশুসহ অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে পৌঁছায়।

আল জাজিরার হাতে আসা এক্সক্লুসিভ ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ১০ জনের মৃতদেহ দেইর আল-বালাহের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে চার শিশুর লাশও রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বর্বর এই হামলার শিকার বাড়িটি ছিল আবু ইউসুফ পরিবারের এবং হামলায় আরও অনেক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

এর আগে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হন। নিহতদের সবাই নারী ও শিশু বলে সেসময় জানিয়েছিল আল জাজিরা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

মূলত আন্তর্জাতিক আদালতের অস্থায়ী রায়কে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা নিরলস এই হামলায় কমপক্ষে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও প্রায় ৭৬ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে যাচ্ছে ৪৩ দেশ

প্রকাশিত :  ০৮:০৬, ১৫ মার্চ ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সারাবিশ্বে হৈচৈ ফেলে দিচ্ছেন। এবার সেই ধারাবাহিকতায়  ৪৩টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ওপর নানা মাত্রায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

জানা গেছে, তিনধাপের নিষেধাজ্ঞার নিয়মাবলী তৈরি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। 

শনিবার (১৫ মার্চ) নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। 

প্রতিবেদনে এই পরিকল্পনা নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা কর্মকর্তাদের বরাতে জানানো  হয়, এবারের নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আরোপিত বিধিনিষেধের চেয়েও ব্যাপক হতে পারে। 

অবশ্য, রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার অধীনে পড়তে যাচ্ছে ৪১টি দেশ। সংবাদ সংস্থাটি তাদের হাতে আসা অভ্যন্তরীণ এক মেমোর বরাতে এই সংবাদ প্রকাশ করেছে।

এই দেশগুলোকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ভাগের দেশগুলোর ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, দ্বিতীয় ভাগের দেশগুলোর ওপর নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ ও তৃতীয় ধাপের দেশগুলোকে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগ দূর করতে।

রয়টার্সের তথ্য মতে, সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাচ্ছে আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া, কিউবা ও উত্তর কোরিয়া।

তবে, নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচ দেশ ছাড়াও সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ভুটান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, দ্বিতীয় ভাগে বা আংশিক নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা দেশগুলো হলো—ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার ও দক্ষিণ সুদান। এই ভাগের দেশগুলোর ক্ষেত্রে ভ্রমণ ও শিক্ষার্থী ভিসার পাশাপাশি অন্যান্য অভিবাসী ভিসার ওপরও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে কিছু ব্যতিক্রমও থাকবে।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই ভাগে আরও থাকছে বেলারুশ, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন ও তুর্কমিনিস্থান।

তৃতীয় ভাগে রয়টার্সের তালিকায় রয়েছে ২৬টি দেশ এবং নিউইয়র্ক টাইমসের তালিকায় রয়েছে ২২টি দেশ। এসব দেশের নাগরিকদের মার্কিন ভিসা আংশিকভাবে স্থগিত করা হতে পারে। তবে দেশগুলো যদি ৬০ দিনের মধ্যে ভিসা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ঘাটতি দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করা হবে।

এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই তালিকা পরিবর্তন হতে পারে। এটি এখনো মার্কিন প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সম্মতিও প্রয়োজন।

তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। কয়েকবার সংশোধন করার পর ২০১৮ সালে সেটি দেশটির সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়। দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর পরপরই তিনি কঠোর অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।