কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে গিয়েই কী এমন বন্যার কবলে দুবাই?
শুষ্ক জলবায়ু আর মরুভূমির জন্য সুপরিচিত শহর দুবাই এখন বন্যায় তলিয়ে গেছে। শহরটিতে মঙ্গলবার গত ৭৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে। অপ্রত্যাশিত বর্ষণ শুধু শহরের স্বাভাবিক গতিকেই রুখে দেয়নি বরং এই অঞ্চলে চরম আবহাওয়া জনিত ঘটনায়জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগও সৃষ্টি করেছে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমস।
এই পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে বিশ্লেষকরা কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের প্রচেষ্টাকে দায়ী করছেন। কৃত্রিম বৃষ্টিপাত বা ক্লাউড সিডিং হল একটি কৌশল যা ঘনীভূতকরণ প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে এবং বৃষ্টিপাত ঘটাতে মেঘের মধ্যে ‘সিডিং এজেন্ট’ প্রবর্তন করে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ১৯৮২ সালে প্রথম ক্লাউড সিডিং পরীক্ষা করে। ২০০০ এর দশকের গোড়ার দিকে উপসাগরীয় দেশটির কৃত্রিম বৃষ্টির প্রোগ্রামটি কলোরাডো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক রিসার্চ (এনসিএআর), দক্ষিণ আফ্রিকার উইটওয়াটারসরান্ড ইউনিভার্সিটির এবং নাসার সঙ্গে যৌথ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণার মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়েছিল।
এই প্রোগ্রামের পেছনের বিজ্ঞানীরা আরব আমিরাতের বায়ুমণ্ডলের ভৌত এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলো বিশেষত অ্যারোসল ও দূষণকারী এবং মেঘ গঠন নিয়ে তাদের প্রভাব বিশ্লেষণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল মেঘের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করার জন্য একটি কার্যকরী এজেন্ট সনাক্ত করা এবং শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বাড়ানো।
তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার কোনো ধরনের ক্লাউড সিডিং (কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর পদ্ধতি) করা হয়নি। এটা মৌসুমি বৃষ্টিপাত।
খালিজ টাইমসকে আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান আহমেদ হাবিব বলেছেন, আবহাওয়ার চরম অবস্থার কারণেই এমন বৃষ্টি হয়েছে। কোনো ধরনের ক্লাউড সিডিং করা হয়নি।
গত দুই দিনে ৭৫ বছরের মধ্যে দুবাইতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর তাতেই তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। রাস্তাঘাট নদীতে পরিণত হয়েছে।
ভারী বৃষ্টিতে অনেক রাস্তাঘাট ও বিমানবন্দরের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় গত দুই দিনে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের ৮৮৪ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।