img

আলোচিত ডা. সাবরিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত :  ১২:০৮, ১০ জুলাই ২০২৪

আলোচিত ডা. সাবরিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সাবরিনা শারমিনসহ সাতজনের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১০ জুলাই) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিও সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনা শারমিন, জেকেজি হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুল চৌধুরী, জেকেজি হেলথ কেয়ারের স্টাফ আ.স.ম সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ওরফে হিমু, তানজিনা পাটোয়ারী ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী জেবুন্নেসা রিমা।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, ডা. সাবরিনা শারমিন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অসৎ উদ্দেশ্য এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অন্যান্যদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন, ট্রেডলাইসেন্সবিহীন তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ওভাল গ্রুপের নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারকে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।

বিনামূল্যে বুথ থেকে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে বুথ থেকে স্যাম্পল কালেকশন না করে ডা. সাবরিনা শারমিন ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর নির্দেশে তার অফিসের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফি হিসেবে প্রতিটি টেস্টের জন্য আনুমানিক ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে পরীক্ষা না করে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট (আনুমানিক ১৫,৪৬০ টি) প্রস্তুত করে সেবা গ্রহীতাদের কাছে সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং লকডাউনের সময় ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন মাত্র ৩ মাসে ওভাল গ্রুপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ভেলবিল সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লি. এর ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭ টাকা জমা হয়। যা করোনা টেস্টের টাকা মর্মে প্রতীয়মান হয়। শুধু তাই নয় তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতির উদ্দেশে নিজের জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে দুটো সচল জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করে তা দিয়ে দুটো ভিন্ন টিআইএন নম্বর খুলেন এবং প্রকৃত জন্মতারিখ ১৯৭৮ সালকে ১৯৮৩ বানিয়ে তার কর্মস্থলে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে চাকরির মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা অবৈধভাবে গ্রহণের অপচেষ্টা করেছেন।

আসামিরা সরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার উদ্দেশে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট (আনুমানিক ১৫,৪৬০ টি) প্রস্তুত করে তা সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহীতাদের কাছে সরবরাহ করে করোনামহামারির সময়ে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তার ঘটিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে দন্ডবিধির ১৬৮/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের রিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় দুদক, সজেকা, ঢাকা-১ এর সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া বাদী হয়ে আজ একটি মামলা করেন।

img

নিউইয়র্কে ইউনূস-মোদির বৈঠক আয়োজনে ঢাকার প্রস্তাব

প্রকাশিত :  ১৬:৩৭, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক আয়োজনে নয়াদিল্লিকে প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা। চলতি মাসের শেষের দিকে নিউইয়র্কে ওই বৈঠকের প্রস্তাব করা হলেও ভারত এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

ড. ইউনূস-মোদির বৈঠকের প্রস্তাবের বিষয়ে অবগত সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার ভারতের ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য ঘিরে বৈঠকটি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সাক্ষাৎকারে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সীমান্ত হত্যা এবং তিস্তার পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন ইউনূস। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান এই উপদেষ্টার মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি।

ওই সূত্র বলেছে, এই মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার জন্য নিউইয়র্কে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই অধিবেশনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মাঝে একটি বৈঠক আয়োজনে ঢাকার পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। ভারতীয় পক্ষ এখন পর্যন্ত এই প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং নিউইয়র্কে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য মোদির অ্যাজেন্ডাও এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

চলতি সপ্তাহে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেওয়া সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের সমালোচনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার প্রত্যর্পণ চাইতে পারে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্যান্য সব রাজনৈতিক দল ‘‘ইসলামপন্থী’’ বলে ভারতের যে ‘‘আখ্যান’’ রয়েছে, দেশটিকে সেটি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।

পিটিআইকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘‘বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তাহলে তাকে সেখানে চুপ থাকতে হবে। ভারতে বসে তিনি কথা বলছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন। দেশে এটা কেউ পছন্দ করছে না। এটা আমাদের বা ভারতের জন্য ভালো নয়।’’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এই মন্তব্যের বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে ভারতীয় ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ধরনের মন্তব্য সুসম্পর্কের জন্য সহায়ক নয়।

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সংক্ষিপ্ত সময়ের নোটিশে ভারতের অনুমতিতে দেশটিতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে দেশটিতেই অবস্থান করছেন তিনি। তাকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের সম্ভাব্য অনুরোধের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৬ আগস্ট টেলিফোনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেন। ফোনালাপের সময় জাতীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সামঞ্জস্য রেখে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।