কোটাবিরোধী আন্দোলন

img

অবরোধে স্থবির ঢাকা, জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত :  ১২:২৪, ১০ জুলাই ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৮:৩২, ১০ জুলাই ২০২৪

অবরোধে স্থবির ঢাকা, জনদুর্ভোগ চরমে

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঢাকাবাসীকে। 

বুধবার সকাল ১০টা থেকে রাস্তায় নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ বুধবার এ স্থিতাবস্থা জারি করেন। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে কোর্ট নয়, নির্বাহী বিভাগের কাছে সিদ্ধান্ত চান তারা। 

আন্দোলনের সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সন্ধ্যা সাতটায় সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত চলবে। আমরা সব জায়গায় আমাদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণায় কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা। অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যাতায়াত ব্যবস্থা। বাসসহ অন্য যানবাহন প্রধান সড়কগুলোয় আটকা পড়েছে। এতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগে মোড়ে এসে অবরোধ করলে পুলিশের অনুরোধে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থানকারীরা চলে যান। 

এদিকে কারওয়ানবাজারে রেললাইনের ওপর বসে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাদের অবরোধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল চলাচল বন্ধ। একই সঙ্গে রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। দুপুর ১টার দিকে কয়েকশ আন্দোলনকারী অবস্থান নেন কারওয়ান বাজার সংলগ্ন রেললাইনের ওপর। এসময় তারা রেললাইনের দুই পাশে কাঠের স্লিপার দিয়ে বসে পড়েন। এতে বেলা ১১টার পর কমলাপুরের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

গুলিস্তান জিরোপয়েন্ট মোড় ও পল্টন মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। গুলিস্তানের নুর হোসেন চত্বর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ। শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টার পর থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন এই মোড়। গুলিস্তান মোড়ে শিক্ষার্থীরা চারপাশে বৃত্তাকার হয়ে বসে পড়েছেন। শিক্ষার্থীরা দখলে নিয়েছেন পল্টন মোড়ও। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শ্যামপুর, জুরাইন, পুরান ঢাকার লোকজন ঢাকার অন্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই জিরোপয়েন্ট মোড় ব্যবহার করেন। কিন্তু চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দিক থেকে আসা গাড়িগুলোকে জিরোপয়েন্টের আশপাশের সড়কে থেমে থাকতে দেখা যায়।

আগারগাঁও মোড়ের চারটি রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে মিরপুর থেকে গাড়ি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। শ্যামলী বা বিজয় সরণির দিকেও যাচ্ছে না কোনো গাড়ি। যে গাড়ি যেদিক থেকে এসেছে, সেদিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় মিরপুর ও গাবতলীর পথে চলাচলের সড়কটি দিয়েও যান চলাচল ব্যাহত হয়। জরুরি প্রয়োজনে হেঁটে ও গলিপথ ধরে রিকশায় যাতায়াত করছেন পথচারীরা।

আন্দোলনে মহাখালী থেকে বনানী পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ। যানবাহন না চলার কারণে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। অনেকে যানজটে দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে রয়েছেন আশেপাশের রাস্তায়। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা। এনামুল হক নামের একজন বলেন, কাজের সময় এভাবে একটানা এক জায়গায় বসে আছি। বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সকাল ১০টা থেকে এখনো যানজটে আটকে আছি। এখনো জানি না কখন রাস্তা ছাড়বে। এ রকম আর কত দিন চলবে?

এদিকে একই সময় রামপুরা থেকে শান্তিনগর, কাকরাইল পর্যন্ত রাস্তায় যানজট ছিল না। রাস্তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে। প্রতিদিনের মতো আবুল হোটেলের মোড় ও মেরুল বাড্ডা এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। এ রাস্তায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চোখে পড়েনি।

জরুরি কাজ ছাড়া আজ সকাল থেকে রাজধানীতে সড়কে বের হননি অনেকেই। এ কারণে বেশিরভাগ সড়ক রয়েছে অনেকটা ফাঁকা। কোথাও কোনো সিগন্যাল ছাড়া পার হতে পারছে যানবাহন। সড়কে বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের সংখ্যাও কম চলাচল করতে দেখা গেছে।

‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পূর্বনির্ধারিত স্থানে, এমনবি মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সড়কে ব্যারিকেড প্রস্তুত রেখেছে পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ সদস্যরা।

img

এবার ৬৫ কলেজে কেউ পাস করেনি

প্রকাশিত :  ০৯:১৬, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফলাফল আজ মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছরে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী।

এদিকে এবার দেশের ৬৫টি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কেউ পাস করতে পারেননি। গত বছর শূন্য পাস করা কলেজের সংখ্যা ছিল ৪২টি। সেই হিসাবে এবার শূন্য পাস কলেজের সংখ্যা বেড়েছে ২৩টি। 

আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সব শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের যে সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে, সেখান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এবছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮। আর এইচএসসির ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬।

গত বছর ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ বছর পাসের হার কমেছে দশমিক ৮৬ শতাংশ। তবে গতবছরের চেয়ে এ বছর ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ ছাত্রী বেশি পাস করেছে।

এবার এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। কিছু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিছু বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। বাতিল পরীক্ষাগুলোর নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং করে)। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে ফলাফল প্রকাশ করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।