img

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় নিন্দা, শাস্তির দাবি ১১৪ নাগরিকের

প্রকাশিত :  ১৮:৩৮, ১৬ জুলাই ২০২৪

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় নিন্দা, শাস্তির দাবি ১১৪ নাগরিকের

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নিন্দা ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন দেশের ১১৪ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিক দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন জানাই। সেই সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা প্রতিরোধে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলোর ব্যর্থতার নিন্দা জানাই।

তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে গতকাল এবং আজ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্বিচার হামলা চালানো হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পিস্তল, রড, লাঠি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। নির্বিচার হামলায় নারী শিক্ষার্থীরাও রেহাই পায়নি। এই বর্বরোচিত হামলায় আমরা ক্ষুব্ধ ও বেদনার্ত।

বিবৃতিতে বলা হয়, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, হত্যাকাণ্ড এবং শত শত শিক্ষার্থীকে আহত করা দেশের প্রচলিত আইনে গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে জরুরি বিভাগে থাকা অবস্থায় তাদের উপর আবারো হামলা চালানো হয়েছে, এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য। আমরা এসব হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও উপযুক্ত শাস্তি চাই। সেই সাথে এসব হামলার হুকুমের আসামি হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।


বিবৃতিদাতারা হলেন—

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ পরিবেশকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক স্বপন আদনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার, ড. আসিফ নজরুল, ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, রুশাদ ফরিদী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আনু মুহাম্মদ, মাহা মির্জা, আইনুন নাহার, মানস চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, নিউইউর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দিনা সিদ্দিকী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, নূর খান লিটন, রেহনুমা আহমেদ, হানা শামস আহমেদ, রেজাউর রহমান লেলিন, আইনজীবী তবারক হোসেইন, ডা. নায়লা জেড খান, আদিবাসী অধিকার সুরক্ষাকর্মী রাণী ইয়েন ইয়েন, সাংবাদিক কামাল আহমেদ, আইনজীবী ও গবেষক রুহী নাজ, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজাম মুনিরা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বুলবুল আশরাফ। আশফাক নিপুন, নির্মাতা, আলতাফ পারভেজ, লেখক ও গবেষক, রায়হান রাইন, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, আফসানা বেগম, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট, মাহবুব মোর্শেদ, কথাসাহিত্যিক, হামীম কামরুল হক, কথাসাহিত্যিক, সালেহীন শিপ্রা, কবি, কথাসাহিত্যিক ও সমালোচক, সায়েমা খাতুন, যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক নৃবিজ্ঞানী, অধ্যাপক আ-আল মামুন, সাখায়াত টিপু, কাজল শাহনেওয়াজ, অধ্যাপক মোস্তফা নাজমুল মনসুর তমাল, শিক্ষক আর রাজী, আবুল কালাম আল আজাদ, অমল আকাশ, মুহাম্মদ কাইউম, হামিম কামরুল হক, কল্লোল মোস্তফা, ফিরোজ আহমেদ, অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ, রাখাল রাহা, ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মো. শাহজালাল, মোহাম্মদ আজম, জাকির তালুকদার, বায়েজিদ বোস্তামী, ফেরদৌস আরা রুমী, সাঈদ জুবেরী, সারোয়ার তুষার, জিয়া হাশান। ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, লুৎফুল্লাহিল মজিদ, অস্ট্রিক আর্যু, ড. স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, দীপক রায়, তাসনুভা অরিন, মাহাবুব রাহমান, গাজী তানজিয়া, মজনু শাহ, খোকন দাস, মোহাম্মদ রোমেল, লতিফুল ইসলাম শিবলী, ইসমাইল হোসেন, তুহিন খান, সারোয়ার তুষার, সহুল আহমদ, পারভেজ আলম, দিলশানা পারুল, এহসান মাহমুদ, সাইয়েদ জামিল, সৈয়দ নাজমুস সাকিব, রুম্মানা জান্নাত, মিছিল খন্দকার, কাউকাব সাদী, জি এইচ হাবীব, ইমরুল হাসান, আবু বকর সিদ্দিক রাজু, তামান্না আজিজ তুলি, রাসেল রায়হান, রুহুল মাহফুজ জয়, মারুফ মল্লিক, চঞ্চল বাশার, কবি, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, মো. শাহজালাল, ওমর তারেক চৌধুরী, অ্যাক্টিভিস্ট, আব্দুল হালিম চঞ্চল, মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, ফেরদৌস আরা রুমী। তানিয়াহ মাহমুদা তিন্নী, মফিজুর রহমান লাল্টু, বাকি বিল্লাহ, সীমা দত্ত, রহমান মুফিজ, সাধনা মহল, ফেরদৌস আরা রুমী, শোয়েব আব্দুল্লাহ, রেদওয়ান আহমেদ, মোস্তফা জামান, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, শারমিন খান, মোশফেক আরা শিমুল, ড. মোবাশ্বার হাসান, মারজিয়া প্রভা।

জাতীয় এর আরও খবর

img

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন: সর্বদলীয় ঐকমত্য

প্রকাশিত :  ১৩:৪৭, ১৩ জুলাই ২০২৫
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:২৪, ১৩ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক উদ্দেশে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার অপব্যবহার ঠেকাতে নতুন বিধান প্রণয়নে সম্মত হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।  আজ রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের দ্বাদশ দিনে এই ঐকমত্যে পৌঁছায় দলগুলো।

জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৪১(ক) এর ১ নম্বর ধারায় বর্তমানে উল্লেখ রয়েছে- যদি রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়, যুদ্ধ, বহিরাক্রমণ কিংবা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের কারণে বাংলাদেশ বা তার কোনো অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন হুমকির মুখে পড়েছে, তবে তিনি অনধিক ৯০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন। তবে এই ঘোষণা দেওয়ার আগে মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে। বর্তমান সংবিধানে এই সময়সীমা ১২০ দিন।

প্রস্তাবনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈধতার শর্ত হিসেবে পূর্বে যে ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর’ প্রয়োজনীয় ছিল, তা পরিবর্তন করে ‘মন্ত্রিসভার সম্মতি’ গ্রহণের বিধান যুক্ত করা হবে।

এই বিষয়ে ৭ ও ১০ জুলাই অনুষ্ঠিত আলোচনার ভিত্তিতে রোববারের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়, ১৪১(ক) অনুচ্ছেদে ব্যবহৃত ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দটি বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত হুমকি’- এই শব্দগুলো অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

জরুরি অবস্থার সময় নাগরিকের দুটি মৌলিক অধিকারকে অলঙ্ঘনীয় হিসেবে বিবেচনায় আনার বিষয়ে সংলাপে গুরুত্বারোপ করা হয়। সংবিধানের ৪৭(৩) ধারা অনুযায়ী, জরুরি অবস্থার সময়েও কোনো নাগরিকের জীবনধিকার এবং নির্যাতন বা নিষ্ঠুর, অমানবিক ও মর্যাদাহানিকর আচরণ বা শাস্তি থেকে মুক্ত থাকার অধিকার খর্ব করা যাবে না।

জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এই বিষয়ে মন্ত্রিসভার বদলে সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আহমদ আবদুল কাদের প্রস্তাব করেন, মন্ত্রিসভার সঙ্গে বিরোধী দলকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আলোচনার একপর্যায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রস্তাব করেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতা বা নেত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান। পরে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন প্রশ্ন তোলেন—বিরোধী দলীয় নেতা অনুপস্থিত থাকলে কে উপস্থিত থাকবেন? তিনি সেই অবস্থায় বিরোধী দলীয় উপনেতাকে উপস্থিত রাখার সুযোগ রাখার প্রস্তাব দেন।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার জানান, বিরোধী দলীয় উপনেতারও মন্ত্রী পদমর্যাদা রয়েছে। সবশেষে সিদ্ধান্ত হয়, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী নয়, বরং মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন প্রয়োজন হবে। সেই বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতা বা তার অনুপস্থিতিতে উপনেতার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক থাকবে।