img

মৌলভীবাজারে হাওরের দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৩০

প্রকাশিত :  ২০:৪৮, ৩০ জুলাই ২০২৪

মৌলভীবাজারে হাওরের দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৩০

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার  জেলার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের কমুদপুর গ্রামে জলাশয়ের (হাওর)  দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

গত  ২৮ জুলাই রোববার সকালে খলিলপুর ইউনিয়নের কমুদপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহতরা হলেন, কুমুদপুর গ্রামের রুমান মিয়া (২৫) ও রেদুয়ান আহমদ (১৭) । ওই এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি জমি দখলের ঘটনায় সংঘর্ষ হলে উভয়পক্ষের দুইজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ  ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের ৫ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।  এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।

 জানা গেছে, ঘটনার দিন কমুদপুর গ্রামের লেবাস মিয়া তার দলবলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একটি সরকারি বিল দখলে যান। এ সময় মনর মিয়াও  দলবলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিলের পাশে অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ৩০ জন আহত হয় বলে জানা গেছে।  আহতদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার জেলা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় ।

আহতদের মধ্যে সিলেটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় রুমান মিয়া ও রাতে রেদুয়ান আহমদ মারা যান। বর্তমানে এলাকা পুরুষর শূন্য। 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে সদর উপজেলার বড় হাওরের দখল নিয়ে লেবাস মিয়ার সঙ্গে অপর একটি পক্ষের বিরোধ চলছিলো । একাধিক মামলাও রয়েছে। ইতিপূর্বে ২০১৬ সালে ওই বিল দখল নিয়ে সংঘর্ষ হলে ২ জন নিহত হয়েছিল জানা গেছে।

img

শাহপরান মাজারে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

প্রকাশিত :  ০৯:১৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৪৫, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিলেটের হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার এলাকায় স্থানীয় আলেম-জনতার সঙ্গে ওরসে আসা ভক্ত, পাগল, ফকিরদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন যাবত শাহপরান (রহ.) মাজারে বার্ষিক ওরস চলছিল। এর আগে সিলেটের আলেম সমাজ শাহপরান মাজার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে ওরসে গান, বাজনা, অশ্লীলতা বা অসামাজিক কার্যকলাপ যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেন। এসব বৈঠকে কমিটির নেতারা ওরসে কোনো অসামাজিকতা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

এ অবস্থায় তিন দিন আগে শাহপরান মাজারে শুরু হয় ওরস। ওরসে তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারে সে জন্য আলেম-সমাজের একটি প্রতিনিধি দল প্রথম দিন থেকেই মাজার এলাকায় অবস্থান করেন এবং সার্বিক বিষয়ে নজর রাখেন। তারা মাজারে তদারকির বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট করেন।

এর ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতেও তারা মাজারের মসজিদের সিঁড়িতে বসে কুরআন তিলাওয়াত ও গজল পরিবেশন করছিলেন। রাত তিনটায় সেখানে অবস্থানরত মোশাহিদ আল বাহার নামে একজন ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে বলেন, ‘শাহপরান মাজার আপনারা যারা আশে পাশে আছেন দ্রুত আসুন। আলেম ওলামারা ও এলাকার ভাই ব্রাদাররা মিলে মাজার পরিদর্শন করছিলেন যে এখানে মদ, জুয়ার আসর, নারীদের অশ্লীলতা চলছে কি না। পরিদর্শন শেষে আমরা সিঁড়ির নিছে বসে গজল, তেলাওয়াত করছি, শুনছি। তেলাওয়াত চলাকালে হঠাৎ করে তৃতীয়পক্ষ এসে মাজারের পাগলদেরকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দেয়। তখন ও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসে তেলাওয়াত শুনছি। ওরা ধীরে ধীরে মানুষ বাড়তে লাগে এবং আমাদের উপর আক্রমণ করে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাজার পরিদর্শনকারী ওরসে আসা কিছু ভক্ত আশেকান, পাগল ফকিরদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের শুরুতে ওরসে আসা মাথায় লাল কাপড় বাধা কিছু লোক মাজার পরিদর্শনকারী আলেম সমাজের প্রতিনিধি দলের ওপর হামলা শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন তারা। খবর পেয়ে মাজারের আশপাশের এলাকার শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া প্রতিনিধি দলকে উদ্ধার করেন এবং অপরপক্ষের ওপর চড়াও হন। এ সময় তারা ওরসে আসা লোকজনের তাঁবুগুলো ভেঙে দেয়। এ সময় দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, মাজারের ওরসে আসা কিছু পাগল, ফকির ও আলেম সমাজের প্রতিনিধি দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কিছু ভাঙচুর হয়েছে। তবে এখানে সুনির্দিষ্ট ভাবে কেউ মাজারে হামলা করতে আসেনি। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। তবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।


সিলেটের খবর এর আরও খবর