img

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫৮ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন

প্রকাশিত :  ০৬:২২, ০৩ আগষ্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫৮ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন

দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হত্যা, নির্যাতনে জোরদার হয়েছে । ফলে বর্ধিত ১৫৮ সদস্য বিশিষ্ট নতুন সমন্বয়ক টিম ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

শনিবার (৩ আগস্ট) সকালে সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত ‌‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামের অফিসিয়াল টেলিগ্রাম গ্রুপে নতুন সমন্বয়ক রিফাত রশিদ এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেন। তাছাড়া, আন্দোলনের সুবিধার্থে সামনের দিনে সারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়কদের নিয়ে সমন্বয়ক টিম বর্ধিত করা হবে বলেও জানানো হয়।

আন্দোলনকে আরও গতিশীল করতে কমিটিতে সমন্বয়ক হিসেবে ৪৯ জন এবং সহ-সমন্বয়ক হিসেবে ১০৯ জন শিক্ষার্থীকে পদায়ন করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্মমভাবে চালানো গণহত্যার বিচার, গণহত্যায় দায়ীদের পদত্যাগ এবং গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবিতে সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে ১৫৮ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন করা হলো।

এর আগে ৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।

সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করে হত্যার প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টায় ফেসবুক পোস্ট ও ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশিদ। 

এর আগে ১ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের প্রেরিত এক বার্তায় শুক্রবার সারা দেশে ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ নামে নতুন কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংখ্যা দুই শতাধিক বলে দাবি করা হচ্ছে।

শিক্ষা এর আরও খবর

img

পরিমার্জিত হচ্ছে সব শ্রেণির পাঠ্যবই

প্রকাশিত :  ০৮:১৫, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:২৩, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নতুন কারিকুলাম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ—সবার মতামত উপেক্ষা করেই। পাঠ্যবইয়ে ইচ্ছেমতো বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষা ও নৈতিকতা বাদ দিয়ে ‘রাজনৈতিক’ বিবেচনায় তৈরি করা হয়েছিল পাঠ্যবই।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বইয়ের নানা অসংগতি বাদ দিয়ে বইয়ের পরিমার্জনের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুতগতিতেই চলছে এই কাজ। শিক্ষাবিদরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বিকৃত করে ছাপিয়েছে। সেগুলো সংশোধন ছাড়া কোনোভাবেই প্রকাশযোগ্য নয়। তাই বই পরিমার্জন করা জরুরি। বিকৃত ও ভুল তথ্য সংযোজিত বই আগে দেওয়ার চেয়ে পরিমার্জিত বই দেরিতে দেওয়াও ভালো।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশের ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো ছাপা হয়নি উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যবই। মেলেনি সিলেবাসও। এ স্তরের পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জনের কাজ চলমান থাকায় বই পেতে আরও বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বইয়ের পরিমার্জনের কাজ শেষ করে পাণ্ডুলিপি প্রেসে পাঠানো যাবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিষয়গুলো বাদে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি—এ তিনটি বিষয়ের চারটি পাঠ্যবই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত হয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৪ সাল থেকে বাংলা সাহিত্য পাঠ ও সহজপাঠ, ২০১৫ সাল থেকে ইংলিশ ফর টুডে এবং ২০২১-এ প্রণীত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই এখনো শিক্ষার্থীদের পাঠ্য। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর উদ্যোগ নেয় পরিমার্জনের। বাংলা বইয়ের কাজ শেষ হলেও বাকি এখনো ইংরেজি ও আইসিটি।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, আমাদের নতুন শিক্ষাক্রমের বইও প্রস্তুত আছে। কনটেন্টের কিছু বিষয় পরিবর্তন হবে। চলমান শিক্ষাক্রমের বইয়ের সেনসিটিভ বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার জন্য একটি টিম কাজ করছে। বইয়ের প্রচ্ছদসহ ভেতরের ছবিসহ অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হবে। যারা শিক্ষাক্রম বিষয়ে কথা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তারাও এ পরিমার্জনের কাজে জড়িত রয়েছেন।

তথ্য অনুযায়ী, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে বই পরিমার্জন করে আগামী বছর দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বর্তমান শিক্ষাক্রমের বই দেওয়া হলেও সেটি পরিমার্জন করে দেওয়া হবে। তবে নবম ও দশম শ্রেণিতে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের সংশোধিত পাঠ্যবই দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কীভাবে প্রশ্নকাঠামো হবে, সে অনুযায়ী সিলেবাসও তৈরি করা হচ্ছে। প্রশ্নকাঠামো ও সিলেবাস ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। চলতি বছর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ২০২৬ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা দেবে। এ বছর তারা নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে রচিত পাঠ্যবই পড়ছে। ষান্মাসিক মূল্যায়নে অংশ নিয়েছে। তবে বছরের শেষদিকে এ শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে রচিত বইয়ের ওপর আগের মতো সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষায় বসবে। আগামী বছর বই পরিবর্তন হবে। এমনকি আগের মতো বিভাগ বিভাজনও থাকবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২-এর আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবই তাদের সরবরাহ করা হবে। সে কারণে তাদের ওপর বাড়তি চাপ এড়াতে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, সৃজনশীল পদ্ধতিতে হবে। নবম এবং দশম শ্রেণির বই আগে দুই বছর পড়ানো হতো। চলতি বছর সেটি আলাদা করে লেখা হয়েছিল। আগামী বছর থেকে দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই যাওয়ার কথা ছিল। তবে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রমের বই পড়ছে। আগামী বছর তারা পড়বে আগের শিক্ষাক্রমের বই।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বছর যারা দশম শ্রেণিতে উঠবে, তারা পুরোনো শিক্ষাক্রমের বই পড়বে। তাদের যে ঘাটতি হয়েছে, সেটি আমরা সিলেবাস কমিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে পরীক্ষা নেব। এখন যে বার্ষিক পরীক্ষা হবে, থিউরোটিক্যাল যে বিষয়গুলো কমানো হবে, তা তো বর্তমান নতুন বইতেও আছে। পুরোনো বইয়েও ছিল। এর সামঞ্জস্য দেখার জন্য আমরা নতুন একটি প্রশ্ন কাঠামো তৈরি করছি।