‘স্মার্ট কার্ড’ দেয়া হবে প্রবাসীদেরকে: যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের মতবিনিময় সভায় ড.একে আব্দুল মোমেন
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার এবং সকল সহযোগী অংগ সংগঠনের উদ্যোগে আযোজিত মতবিনিময় সভা ও নৈশ ভোজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন,‘স্মার্ট কার্ড’ দেয়া হবে প্রবাসীদেরকে ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার এবং প্রবাসীদের সাথে গত ১৪ জুলাই ২০২৪,রোববার রাত ৯টায় এক মতবিনিময় সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, খেটে খাওয়া প্রবাসী এবং তাদের স্ত্রী-সন্তান-স্বজনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত কল্পে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হবে।
এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রীর সম্মতিও পাওয়া গেছে। এই কার্ডধারীরা বাংলাদেশের যে কোন এয়ারপোর্টে বিশেষ চ্যানেলে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রবাসীর সন্তানেরা ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন। যে কোন অফিসে প্রয়োজনীয় কাজেও অগ্রাধিকার পাবেন। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, যারা অনেক বেশি পরিমাণের রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তাদেরকে সিআইপি কার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু খেটে খাওয়া সাধারণ প্রবাসীরা দেশে ফেরার সময় এয়ারপোর্টে অবহেলিত হচ্ছেন, নিজ এলাকার অফিস-আদালতে অনেক সময়েই পাত্তা পাচ্ছেন না। এসব রেমিটেন্স যোদ্ধার সন্তানেরাও লেখাপড়ায় তেমন সুবিধা পাচ্ছেন না। সামগ্রিক অবস্থার আলোকে এই স্মার্ট কার্ড প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তা অর্থ মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। আর এভাবেই শেখ হাসিনা যে সত্যিকার অর্থেই প্রবাস-বান্ধব সরকার তা দৃশ্যমান হচ্ছে। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ৩০ ডিসেম্বরকে ‘প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। এরফলে দিবসটিতে বিদেশের সকল মিশনে প্রবাসীরা নিজেদের সমস্যা, অসুবিধার কথা অবাধে উপস্থাপন করতে পারবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনার পথ বেয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রেও বিদেশের অভিজ্ঞতা স্বাধীনভাবে পেশ করতে পারবেন।
ড. মোমেন টানা ৫ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়ায়, মুক্তচিত্তে কল্যাণমূলক কিছু করার উৎসাহ জুগিয়েছেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করেছি সেজন্য আমি খুবই গর্বিত। আই অ্যাম এ্যা হ্যাপিম্যান। আমাকে আবারো পররাষ্ট্র মন্ত্রী করা হয়নি বলে আমার কোন আক্ষেপ নেই। কোটা বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, গত ৪৩ বছর নানা প্রতিক’লতা ডিঙ্গিয়েই শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মহাসড়কে উঠিয়েছেন, ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হবে বাংলাদেশ। তাই কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে মহলবিশেষের যে অপতৎপরতার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তারও অবসান ঘটবে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বেই। এ নিয়ে সংশয়-সন্দেহের কোন অবকাশ থাকা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের অভিযোগ এবং অসৎ উপায়ে পদ-পদবি বিক্রির প্রসঙ্গ উত্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট-১ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকদের অন্যতম ড. মোমেন বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীগণের খুবই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার সমীপে বিরাজিত পরিস্থিতি যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হলে নিশ্চয়ই তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন সামনের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারন অধিবেশনে যোগদানের সময়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা ড.প্রদীপ রঞ্জন করের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান ও আবুল হাসিব মামুনের সঞ্চালনায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের মুনলাইট গ্রীল রেস্টুরেন্টের মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভায় ও নৈশ অনুষ্ঠানে নানা ইস্যুতে কথা বলেন বিশেষ অতিথি প্রধান অতিথি ড.একে আবদুল মোমেনের সহধর্মিনী সেলিনা মোমেন,যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের
উপদেষ্টা সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন,বীর মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান মুক্তা ।মতবিনিময় সভা ও নৈল ভোজ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাজি এনাম,দপ্তর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী,, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শাহ মোঃবখতিয়ার আলী,শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এমএ করিম জাহাঙ্গীর,মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম,বিশেষ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাসহ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃএমএ বাতেন,আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন,শামসুল আবদিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রীচি, বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলু,বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল খান আনসারী,বীর মুক্তিযোদ্ধা সরাফ সরকার,বঙ্গবন্ধু আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মোর্শেদা জামান, শেখ হাসিনা মঞ্চের সভাপতি জালালউদ্দিন জলিল, মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রুমানা আকতার, জলি কর, শেখ রাসেল সংসদের সভাপতি গোলাম খান লিপটন,কানেকটিকাট স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির চৌধুরী,যুব লীগ নেতা শেখ জামাল, ইফজাল চৌধুরী, ছাত্রলীগের নেতা শহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, জেড চৌধুরী জয়, জাহাঙ্গগীর এইচ মিয়া ।উল্লেখ্য, পারিবারিক সফরে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন। সাড়ে তিন দশকের অধিক সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অভিজ্ঞতা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কানেকশনকে বাংলাদেশের স্বার্থে ব্যবহারের জন্যে ড. মোমেনকে শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। দীর্ঘ ৫ বছর অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান। তার সুফল হিসেবে শেখ হাসিনা ড. মোমেনকে মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগের পর সিলেট-১ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটিও অত্যন্ত সুনামের সাথে ৫ বছর পালন করেছেন।
মতবিনিময় সভা ও নৈশ ভোজ অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬২, ৬৪ এর ৬ দফা, এগারো দফা শিক্ষা আন্দোলন ও স্বাধিকার আন্দোলন, ৬৯ এর গনঅভ্যুত্থান, আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৭১এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, “৭৫-এর ১৫ই আগষ্ট, ২১শে আগস্ট, ৩রা নভেম্বরের নিস্ঠুর হত্যাকান্ড এবং স্বৈরাচার বিরোধী এবং সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আত্মত্যাগী বীর এবং সম্ভ্রমহারা ২ লক্ষাধীক মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে নৈশ ভোজে আপ্যায়ন করা হয় ।