রাবির আবাসিক হলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধসহ সাত সিদ্ধান্ত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশসহ সাতটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষরা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের এক আলোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ওই সাতটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদ এবং সমন্বয়কদের মধ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের তাঁদের স্বপদে থেকে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানান।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, সংকটকালীন এই সময়ে প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকেরা পদত্যাগ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবাসন প্রক্রিয়া ব্যাহত, হলসমূহে নৈরাজ্য সৃষ্টি, আবাসিক সমস্যা বৃদ্ধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে সংকট সৃষ্টির পাশাপাশি হলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে উভয় পক্ষ। তাই হলের নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষা ও শিক্ষার্থীদের জন্য হলে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব পক্ষের আন্তরিক সহায়তা করতে হবে।
প্রাধ্যক্ষ ও সমন্বয়কারীদের অপর পাঁচটি সিদ্ধান্ত হলো—১. এখন থেকে শুধু বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন ২. হলে কোনো ধরনের রাজনৈতিক ব্লক থাকবে না। পরবর্তী আসন বরাদ্দ না দেওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক ব্লকে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না এবং চিহ্নিত কক্ষগুলো সিলগালা করা থাকবে ৩. হলের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের রাজনৈতিক মিছিল, মিটিং, শোডাউন করা যাবে না ৪. হলে আবাসনের নিয়ম ব্যতিরেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ যেকোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে হলে আবাসন কিংবা কোনো ধরনের বাড়তি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা যাবে না এবং হলের কক্ষে বা করিডরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ কোনো ধরনের ক্ষমতার পরিচয় প্রকাশ করে এমন কোনো লেখা, ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট ইত্যাদি প্রদর্শন করা যাবে না।
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চান। সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং পরবর্তী প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রথম দাবি থাকবে ছাত্র সংসদ চালু করে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচন করা।’