মঙ্গলগ্রহে সন্ধান মিলল বিশাল জলাধারের
মঙ্গল হচ্ছে সৌরজগতের চতুর্থ গ্রহ। পৃথিবীর মতো মঙ্গল গ্রহেও রয়েছে বায়ুমণ্ডল। রয়েছে পাহাড়-পর্বত, আগ্নেয়গিরি, মরুভূমি ও মেরুদেশীয় বরফ। পৃথিবীর সঙ্গে মিল থাকলেও মঙ্গলগ্রহের অনেক বৈশিষ্ট্য খুবই অদ্ভুত। এজন্যই হয়ত গবেষকরা চাঁদের তুলনায় মঙ্গল গ্রহের প্রতি বাড়তি আগ্রহ দেখান। পৃথিবীর তুলনায় আরও দূর থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এই গ্রহ৷ সৌরজগতে পৃথিবী ছাড়া মঙ্গলই একমাত্র গ্রহ, যেটি মানুষের বসবাসের যোগ্য৷
তবে সম্প্রতি মার্কিন একদল গবেষক দাবি করেছে সৌরজগতের এই গ্রহটিতে মিলেছে পানির সন্ধান। এক-দুই ফোটা নয় বরং বিশাল মহাসাগর পরিমাণ জলের আধার রয়েছে মঙ্গলগ্রহে।
অবিশ্বাস্য হলেও, বিস্ময়কর এ তথ্য প্রকাশ করেছে, মার্কিন সংস্থা- ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস। নাসার মার্স ইনসাইট ল্যান্ডারের ডেটা ব্যবহার করে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলপৃষ্ঠের সাড়ে ১১ থেকে ২০ কিলোমিটারের গভীরে রয়েছে বিশাল এই জলাধার। লুকিয়ে আছে ভূগর্ভস্থ শিলার ফাটলে। যা, জমা হয় বিলিয়নখানেক বছর পূর্বে। সুবিশাল এই পানির স্তরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা প্রবল, এমনটাই দাবি বিজ্ঞানীদের।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার সহকারী অধ্যাপক ভাসান রাইট বলেন, মঙ্গলগ্রহে পানির অস্তিত্ব পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পানি গ্রহের বিবর্তনের সবকিছুকে প্রভাবিত করে। আমরা জানি যে, জীবন ধারণের জন্য একটি মূল উপাদান পানি। যার মানে হলো সেখানে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ থাকতে পারে।
এর আগে, লাল গ্রহটিতে জমে থাকা পানির সন্ধান মিললেও এবারই প্রথম তরল পানির খবর পাওয়া গেল। মঙ্গলগ্রহের যে বিরান-রুক্ষ পৃষ্ঠের সঙ্গে আজ বিশ্ব পরিচিত; ঠিক ৩শ’ কোটি বছর আগে তেমন ছিল না এটি। তখন দেখতে অনেকটাই পৃথিবীর মতো ছিলো গ্রহটি। ছিল নদী, হৃদ খুব সম্ভবত সমুদ্রও। যা শুকিয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে ভাসান রাইট বলেন, প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে অনেকটাই পৃথিবীর মতোই ছিল মঙ্গলগ্রহ। কিন্তু এখন সেটি নেই। এখন গ্রহটি শুকনো। তাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, পানি কোথায়? সেগুলো কোথায় গেলো? এজন্যই এই গবেষণা।
মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ২০১৮ সালে সেখানে ইনসাইট নামক ল্যান্ডার পাঠায় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা- নাসা। যার সিসমোমিটারের সাহায্যে রেকর্ড করা হয় গ্রহটির ভূকম্পন। ২০২২ সালে চার বছরের দীর্ঘ মিশন শেষ করে ল্যান্ডারটি।