img

শমশেরনগর হাসপাতাল পরিবার সদস্য হয়ে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন বৃটেন প্রবাসী শামীম আহমদ

প্রকাশিত :  ১১:৩২, ২০ আগষ্ট ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৪৮, ২০ আগষ্ট ২০২৪

শমশেরনগর হাসপাতাল পরিবার সদস্য হয়ে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন বৃটেন প্রবাসী শামীম আহমদ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর হাসপাতাল পরিবার সদস্য হয়ে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন বৃটেন ম্যানচেস্টারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম আহমদ।

রবিবার (১৮ আগষ্ট) বেলা ১টায় শমশেরনগর হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে বৃটেন প্রবাসী শামীম আহমদ এক প্রতিক্রিয়ায় তার এ ইচ্ছের কথা ব্যক্ত করেন। এ সময় তাঁর সাথে অতিথি ছিলেন সাবেক সাংসদ নওয়াব আলী আব্বাস খান, শমশেরনগর হাসপাতালের দাতা সদস্য বৃটেন প্রবাসী নিপু খন্দকারের ছোট ভাই টিপু খন্দকার ও ফটিকুল ইসলাম।

শামীম আহমদ সহ অতিথিরা হাসপাতালে এসে পৌঁছালে শমশেরনগর হাসপাতাল কমিটির সভাপতি কন্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরীর নেতৃত্বে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। পরে অতিথিরা অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে শুরু করে প্রতিটি কক্ষ ঘুরে দেখেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুজিবুর রহমান রঞ্জু, আব্দুস সালাম, আবু সাদাত মো. সায়েম, আমিনুল হক খোকন, ইউসুফ আলী, মতিউর রহমান সাহেদ, আবুল লেইছ প্রমুখ।

পরে শমশেরনগর হাসপাতাল কমিটির সভাপতি কন্ঠশিল্পী সেলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় হাসপাতাল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপে অতিথিরা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে শামীম আহমদ, নওয়াব আলী আব্বাস খান সহ অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় এবং হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাদেরকে স্মারক মগ উপহার দেওয়া হয়। বৃটেন প্রবাসী শামীম আহমদ শমশেরনগর হাসপাতাল তহবিলে ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, বৃটেন প্রবাসী শামীম আহমদের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রবির বাজার। তিনি রবির বাজারের জনপ্রিয় ডাক্তার সোহাগ আহমদের ভাই। শামীম আহমদ রবির বাজারের সূর্যসন্তান হলেও লেখাপড়া ও খেলাধুলায় বেশীরভাগ সময় পার করেছেন শমশেরনগরে।

শামীম আহমদ শমশেরনগর হাসপাতালের প্রধান রূপকার ও বৃটেন কমিটির আহবায়ক ময়নুল ইসলাম খানের বড় ভাই কানাডা প্রবাসী আলী কয়ছার খান চুনু এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জুর ছোট ভাই মুহিবুর রহমান টুটুলের সহপাঠী।

সম্প্রতি শামীম আহমদ বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত সফরে আসার পর ফোনে কথা বলে শমশেরনগর হাসপাতালের খোঁজ খবর নিয়েছেন এবং সাবেক সাংসদ আলী আব্বাস খানকে সাথে নিয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় অতিথিদের আজকের এই হাসপাতাল পরিদর্শন।


সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে কুরমাছড়া পাহাড়ি এলাকায় হামহাম জলপ্রপাত

প্রকাশিত :  ১০:১১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত বা ঝর্ণা। যা\' হাম হাম কিংবা হামহাম বা চিতা ঝর্ণা হিসেবে পরিচিত। 

জলপ্রপাতটি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের শেষাংশে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে দুর্গম জঙ্গলে ঘোরা একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন বলে জানা যায় । দুর্গম গভীর জঙ্গলে এই ঝরণাটি  মতান্তরে ১৪৭ কিংবা ১৭০ ফুট উঁচু। দেশের সবচেয়ে উঁচু ঝরণা হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের উচ্চতা  ১৬২ ফুট। তবে ঝরণার উচ্চতা বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরীক্ষিত মত নেই। সবই পর্যটকদের অনুমান। তবে গবেষকরা মত প্রকাশ করেন যে, এর ব্যাপ্তি, মাধবকুণ্ডের ব্যাপ্তির প্রায় তিনগুণ বড়।

হামাম ঝরণায় এপর্যন্ত (নভেম্বর ২০১১) গবেষকদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি। সাধারণ পর্যটকেরা ঝরণাটির নামকরণ সম্পর্কে তাই বিভিন্ন অভিমত দিয়ে থাকেন।  অনেকের মনে সিলেটি উপভাষায় \"আ-ম আ-ম\" বলে বোঝানো হয় পানির তীব্র শব্দ, আর ঝরণা যেহেতু সেরকমই শব্দ করে, তাই সেখান থেকেই শহুরে পর্যটকদের ভাষান্তরে তা \"হাম হাম\" হিসেবে প্রসিদ্ধি পায়। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি \"চিতা ঝর্ণা\" হিসেবে পরিচিত, কেননা একসময় এজঙ্গলে নাকি চিতাবাঘ পাওয়া যেত।

ঝরণার যৌবন হলো বর্ষাকাল। বর্ষাকালে প্রচন্ড ব্যাপ্তিতে জলধারা গড়িয়ে পড়ে। শীতে তা মিইয়ে মাত্র একটি ঝরণাধারায় এসে ঠেকে। ঝরণার ঝরে পড়া পানি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ছড়া তৈরি করে বয়ে চলেছে। এরকমই বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া পেরিয়ে জঙ্গলের বন্ধুর পথ পেরিয়ে এই ঝরণার কাছে পৌঁছতে হয়। ঝরণাটির কাছে যাওয়ার জন্য এখনও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গৃহীত হয়নি, সাধারণত স্থানীয় অধিবাসীদের থেকে কাউকে গাইড বা পথপ্রদর্শক নির্ধারণ করে পর্যটকরা ঝরণা ভ্রমণ করেন। তাছাড়া ঝরণাকে ঘিরে তৈরি হয়নি কোনো সরকারি অবকাঠামোও। ঝরণায় যেতে হলে কুরমা বন বিটের চম্পারায় চা বাগান হয়ে যেতে হয়। চম্পারায় চা-বাগান থেকে ঝরণার দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। পথে অত্যন্ত খাড়া মোকাম টিলা পাড়ি দিতে হয়। এবং অনেক ঝিরিপথ ও ছড়ার কাদামাটি দিয়ে পথ চলতে হয়। ঝিরিপথে কদাচিৎ চোরাবালুও তৈরি হয়। কিন্তু সে সকল স্থানে পর্যটকদের জন্য কোনো নির্দেশিকা দেখা যায় না। এছাড়া গভীর জঙ্গলে বানর, সাপ, মশা এবং জোঁকের অত্যাচার সহ্য করে পথ চলতে হয়। বর্ষাকালে হাম হামে যাবার কিছু আগে পথে দেখা পাওয়া যায় আরেকটি অনুচ্চ ছোট ঝরণার। হাম হামের রয়েছে দুটো ধাপ। সর্বোচ্চ ধাপটি থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে মাঝখানের ধাপে। এবং সেখান থেকে আবার পানি পড়ছে নিচের অগভীর খাদে। ঝরণার নিকটবর্তি বাসিন্দারা আদিবাসী ত্রিপুরা।

হাম হাম যাবার পথ এবং হাম হাম সংলগ্ন রাজকান্দি বনাঞ্চলে রয়েছে সারি সারি কলাগাছ, জারুল, চিকরাশি কদম গাছ। এর ফাঁকে ফাঁকে উড়তে থাকে রং-বেরঙের প্রজাপতি। ডুমুর গাছের শাখা আর বেত বাগানে দেখা মিলবে অসংখ্য চশমাপরা হনুমানের। এছাড়াও রয়েছে ডলু, মুলি, মির্তিঙ্গা, কালি ইত্যাদি বিচিত্র নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ।

পর্যটকরা অত্যন্ত দুর্গম পথ পাড়ি দেবার জন্য খাবার এবং প্লাস্টিকের পানীর বোতল সঙ্গে করে নিয়ে থাকেন এবং খাবারকে পানির স্পর্শ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রায়ই পলিথিন ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পর্যটকরা প্রায়ই সেসব ব্যবহৃত জিনিস বহন করে পুনরায় ফেরত না নিয়ে আসতে  ও যত্রতত্র ফেলে নোংরা করেন ঝরণার নিকট-অঞ্চল। যা\' ঝরণা এমনকি জঙ্গলের সৌন্দর্য্যহানির পাশাপাশি পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। তাই পর্যটকদেরকে পঁচনশীল বর্জ্য পুতে ফেলা এবং অপচনশীল বর্জ্য সঙ্গে করে নিয়ে আসা কিংবা পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়।

সিলেটের খবর এর আরও খবর