img

‘অচিরেই খুনিচক্রের মুখোশ উন্মোচন’, বললেন আনোয়ারুজ্জামান

প্রকাশিত :  ১৫:০০, ২৪ আগষ্ট ২০২৪

 ‘অচিরেই খুনিচক্রের মুখোশ উন্মোচন’, বললেন আনোয়ারুজ্জামান

অজ্ঞাত স্থান থেকে সিলেট সিটি মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী  একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।

শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে ১৮ মিনিট কথা বলেছেন সিসিকের সদ্য সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বিকাল ৫টার দিকে করা এই লাইভে তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কড়া সমালোচনা করেন।

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা বাংলাদেশকে জিম্মি বানিয়েছে। সারাদেশে লক্ষ লক্ষ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে। বাংলাদেশে কখনো এমনটি হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা করছে। পুলিশকে হত্যা করছে। পুড়িয়ে মারছে। বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষকদের বেইজ্জতি করছে। এসব নির্যাতনের বিচার একদিন বাংলাদেশে হবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি পদত্যাগ করেননি। তাকে জোর করে দেশছাড়া করা হয়েছে। দেশে থাকলে তাকে হত্যা করা হতো। তিনি (শেখ হাসিনা) অচিরেই বাংলাদেশে ফিরবেন।

আনোয়ারুজ্জামান বলেন, হত্যার রাজনীতি করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়াবে। যে অন্যায় ও নির্যাতন তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শুরু করতে হবে।

স্থানীয় সরকার থেকে তাকে অপসারণ প্রসঙ্গে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে তারা দেশে হামিদ কারজাই মার্কা সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। বাংলাদেশকে তারা আফগানিস্তান বানাতে চায়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান।

গত ১৯ আগস্ট সিলেটসহ দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করা হয়। তাদের অপসারণের পর সব সিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্শেশে মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের বদলে

 সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার সিসিক প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আনোয়ারুজ্জামানের ১৮ মিনিটের বক্তব্যে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার গুণগান এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দোষারূপ করেন। বক্তব্যে তিনি সিলেট ও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তবে তিনি বর্তমানে কোথায় আছেন সেটি বলেননি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট তিনি সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় চান আনোয়ারুজ্জামান। কয়েক দিন আগে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারত যান এবং সেখান থেকে যুক্তরাজ্যে চলে যান।

এদিকে, আনোয়ারুজ্জামানের লাইভের কমেন্টে ঘরে নেটিজেনরা তার দিকেই বেশি নেতিবাচক মন্তব্যের তীর ছুঁড়ে দেন। অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন- তিনি এখন কোথায় আছেন। সিলেটে নেই কেন? কিন্তু আনোয়ারুজ্জামান এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পরই সিলেটের অনেক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে আনোয়ারুজ্জামানও লাপাত্তা হয়ে যান।

হাসিনা সরকার পতনের আগে সিলেট অগ্নিগর্ভ ছিলো ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। আন্দোলনের বিভিন্ন দিন- বিশেষ করে ৪ আগস্ট সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার তুমুল সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ রয়েছে- সংঘর্ষকালে পুলিশের সঙ্গে মাঠে থাকা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা আনোয়ারুজ্জামানের অনুসারী ছিলেন।

অবস্থা পরিবর্তনের পর এবার সিলেটের আদালত ও বিভিন্ন থানায় পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে। এসব মামলার অন্তত ৫টিতে আনোয়ারুজ্জামানকে অন্যতম আসামি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পঞ্চম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান। ওই বছরের ৭ নভেম্বর নগরভবনে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

আনোয়ারুজ্জামান দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের চেষ্টা করেছিলেন। সেখানে তিনি বিফল হন।

নব্বইয়ের দশকে লন্ডনে পাড়ি জমিয়ে আনোয়ারুজ্জমান প্রথমে লন্ডন মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য হিসেবেও মনোনীত হন। যুবলীগের রাজনীতি থেকে তিনি সরাসরি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন এবং বিভিন্ন সময় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

img

আইফোন চুরি দেখে ফেলায় খুন হন মা-ছেলে

প্রকাশিত :  ১২:২৪, ০২ নভেম্বর ২০২৪

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর (এসপির বাংলোর সামনে) এলাকার একটি বাসা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মা ও ছেলের লাশ উদ্ধারের পর খুনের কারণ উদঘাটন করেছে পুলিশ। বন্ধুদের সাথে পার্টি করার জন্য খালাতো ভাইয়ের আইফোন চুরি করতে গিয়ে দেখে ফেলায় খুন করা হয় বলে জানান সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান।

বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত ১জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে তার বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় নাম পরিচয় জানানো হয়নি।

পুলিশ সুপার জানান, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সদর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে সুনামগঞ্জ সদর পৌর শহরে ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলায় একজন শিশুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

(৩০ অক্টোবর) বুধবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা জেলার সাভার থানা এলাকা থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। শিশুটির বাড়ি বিশ্বম্ভরপুর থানাধীন গনারগাও গ্রামে। সে সদর উপজেলাএ হাসন নগর হাসপাতাল রোডে ২০২২ সাল থেকে একটি বাসায় বসবাস করছিলো।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পুলিশ হেফাজতে নেওয়া শিশু ও তার এক বন্ধু ১টি আইফোন ১১ ও টাকা পয়সা চুরি করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা ২৯ তারিখ রাতে ভিকটিম মিনহাজের ঘরে ঢুকে আইফোনটি চুরির চেষ্টা করে। মিনহাজ টের পেয়ে একজনকে আটক করার চেষ্টা করলে অপরজন বটি দিয়ে কোপ মারে, ফলে মিনহাজ সেখানেই মৃত্যুবরণ করে। শব্দ শোনে মিনহাজের মা অন্য রুম থেকে বের হলে তাকেও বটি দিয়ে কোপ মারে, যার ফলে তিনিও নিহত হন। এই ঘটনায় জড়িত অপর শিশুকে পুলিশ হেফাজতে আনার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, এই পরিকল্পনাটি সে তার বন্ধুর সাথে আরও ৭ দিন আগে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে বসে করেছিলো তাদের চুরি প্লান করা ছিলো তবে শেষপর্যন্ত চুরি করতে দেখে ফেলায় খুন করে তারা। পরে তারা বাসার পিছনের রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা অপর আসামিকেও ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাকির হোসাইন, সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হকসহ স্থানীয় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সিলেটের খবর এর আরও খবর