img

হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত নারী দুষলেন ইসরাইলকে

প্রকাশিত :  ১০:১৬, ২৫ আগষ্ট ২০২৪

হামাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত নারী দুষলেন ইসরাইলকে

গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরাইলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরাইলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে । হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের একজন ছিলেন ইসরাইলি নারী নোয়া আরগামানি।

জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ইসরাইলি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, হামাস যোদ্ধারা আরগামানিকে প্রহার করেছেন এবং তার চুল কেটে ফেলেন।  

কিন্তু এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন আলোচিত আরগামানি। তার দাবি, ইসরাইলি গণমাধ্যমে তার বক্তব্য বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে।  জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া এই নারীর ভাষ্য, উদ্ধার অভিযানে ইসরাইলে সেনাদের আক্রমণেই আহত হন তিনি। 

শুক্রবার জাপানের টোকিওতে তিনি বলেন, ‘এখানে আমার কথাকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে কিংবা বিভ্রান্তিকরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।  আমার বন্দিদশার সময় হামাস সদস্যরা আমাকে আঘাত করেনি, তারা আমার চুল কাটেনি; ইসরাইলি বিমান বাহিনীর এক পাইলট একটি দেয়াল গুঁড়িয়ে দিলে আমি আহত হই। আমি ৭ অক্টোবরের শিকার। আমি মিডিয়ার হাতে আবারো শিকার হতে চাই না।’

গত জুন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গাজার নুসেরাত ও দির আল-বালা উদ্বাস্তু শিবির থেকে বেশ  ২৬ বছর বয়সী আরগামানিকে উদ্ধার করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। ওই অভিযানের সময় অন্তত ২৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। তাদের বেশিভাগই ছিল নারী ও শিশু। এখনো

হামাসের হাতে আটক রয়েছেন আরগামানির বয়ফ্রেন্ড। বাকি জিম্মিদের মুক্তির পথ তৈরি করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি।

আরগামানি আরো বলেন, ‘আমার বয়ফ্রেন্ড আভিনাতান এখনো সেখানে আছে।খুব বেশি দেরি হওয়ার আগেই তাদের ফিরিয়ে আনা দরকার। আমরা ইতোমধ্যেই অনেক বেশি লোককে হারিয়ে ফেলেছি। আর কাউকে হারাতে চাই না।’

আরগামানির বাবা শান্তি ফেরাতে গাজায় জিম্মিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনি দুর্ভোগের অবসানের আহবান করেছেন।

‘আমাদের এবং তাদের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে যাতে এই দুই দেশের মধ্যে  সর্বদা প্রকৃত শান্তি নিশ্চিত হতে পারে’।

 

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

হিজবুল্লাহর ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলের এতটা ভেতরে ঢুকে হামলা চালাল

প্রকাশিত :  ০৮:০৭, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

দখলদার ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই ‘নির্ভরযোগ্য’ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে গতকাল রোববার ইসরায়েলের অনেকটা ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম হয় হিজবুল্লাহর ড্রোন।

লেবাননের ইরান-সমর্থিত রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলাটি হয়েছে মধ্য-উত্তর ইসরায়েলের একটি সেনাঘাঁটিতে।

হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আহত ৬০ জনের বেশি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে হতাহত হওয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হামলায় আহত সাত সেনার অবস্থা গুরুতর।

স্থানীয় সময় গতকাল দিনের শেষ ভাগে এই ড্রোন হামলা হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর গতকাল অন্যতম সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলো ইসরায়েল।

আইডিএফ বলেছে, হিজবুল্লাহর পাঠানো একটি ড্রোন বিন্যামিনা শহর-সংলগ্ন একটি ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায়। শহরটির অবস্থান তেল আবিবের উত্তরে। লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে।

গতকাল হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিন্যামিনায় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি পদাতিক প্রশিক্ষণ শিবির নিশানা করে হামলা চালাতে একঝাঁক ড্রোন পাঠিয়েছে।

হিজবুল্লাহর এমন কথার পর ইসরায়েলে ড্রোন হামলার খবর এল।

হিজবুল্লাহ বলে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে হামলা চালায় ইসরায়েল। বদলা হিসেবে তারা গতকাল ইসরায়েলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ২২ জন নিহত হন। আহত ১১৭ জন।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের গোলানি ব্রিগেডকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে।

গোলানি ব্রিগেড আইডিএফের একটি পদাতিক ইউনিট। এই ইউনিটের সদস্যদের দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।

হামলার দায় স্বীকার করার কিছু আগে হিজবুল্লাহ তাদের সদ্য প্রয়াত নেতা হাসান নাসরুল্লাহর একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করে। এ বার্তায় তিনি হিজবুল্লাহর সদস্যদের নিজেদের লোকজন, পরিবার, জাতি, মূল্যবোধ ও মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানান। গত মাসের শেষ দিকে ইসরায়েলি হামলায় নাসরুল্লাহর নিহত হন।

গতকাল দিনের শুরুর দিকে আইডিএফ বলেছিল, লেবানন থেকে পাঠানো একটি ড্রোন তারা রুখে দিয়েছে। তবে এ ঘটনা কোথায় ঘটেছে, তা তারা নির্দিষ্ট করে বলেনি।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই নির্ভরযোগ্য। কিন্তু গতকাল এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পেরেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন। গতকাল হিজবুল্লাহর ড্রোন ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালায়।

সিএনএন আরও বলেছে, গতকাল হামলার সময় বিন্যামিনা এলাকায় কোনো সতর্কবার্তার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের এতটা গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যতিব্যস্ত রাখার জন্য উত্তর ইসরায়েলি শহর নাহরিয়া ও একর নিশানা করে বেশ কয়েক ডজন রকেট ছোড়ে। একই সঙ্গে তারা একঝাঁক ড্রোন পাঠায়।

হিজবুল্লাহ বলেছে, এই ড্রোনগুলো শনাক্ত হওয়া এড়াতে পেরেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা রাডারগুলোকে ফাঁকি দিতে পেরেছে। ড্রোনগুলো বিন্যামিনার অভিজাত গোলানি ব্রিগেডের প্রশিক্ষণ শিবিরের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছায়।

আইডিএফের শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনা তদন্ত করবে। কীভাবে ঘাঁটিতে ড্রোন প্রবেশ করল, কিন্তু সতর্কসংকেত বাজল না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

ঘাঁটিটি থেকে দেওয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে হাগারি বলেন, তাঁরা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন। তাঁরা ঘটনাটি তদন্ত করবেন।

আইডিএফের এই মুখপাত্র বলেন, তাঁরা যুদ্ধের শুরু থেকেই ড্রোনের হুমকি মোকাবিলা করে আসছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় উন্নতি দরকার।