img

সালেহ উদ্দিন দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত

প্রকাশিত :  ১০:৪৫, ২৫ আগষ্ট ২০২৪

সালেহ উদ্দিন দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত

সংগ্রাম দত্ত: হবিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান ও দেশের খ্যাতনামা সাংবাদিকদের মধ্যে অন্যতম সাংবাদিক সালেহ উদ্দিন দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেছেন। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাঁকে এই নিয়োগ প্রদান করেছেন। তাঁর এই নিয়োগ লাভের খবরে শুভাকাঙ্ক্ষীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। বিশেষ করে ফেসবুকে হবিগঞ্জের সাংবাদিকরা তাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা শুভ কামনা জানিয়েছেন। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস সালেহ উদ্দিন প্রখ্যাত সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী সম্পাদিত বাংলাবাজার পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে ১৯৯২-১৯৯৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। 

১৯৯৮ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সিনিয়র রিপোর্টার, ২০০১ থেকে ২০১২ দৈনিক ইত্তেফাকে সিনিয়র রিপোর্টার এবং ২০১২ থেকে বর্তমান পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিবেদক ও আইন, বিচার, রাজনীতি ও নির্বাচন কমিশন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে অত্যন্ত সম্মানজনক পদ নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন।

বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রক্ষাকারী সাংবাদিক সালেহ উদ্দিন সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। 

তিনি বেশ কয়েকটি কৌতূহলী এবং প্রভাবশালী প্রতিবেদনে কাজ করে সম্মাননা পেয়েছেন। 

অন্যতম উল্লেখযোগ্য, \'রয়‍্যাল স্ক্যান্ডালের খসড়া\' হাইকোর্টের একজন বিচারকের পদত্যাগের দিকে পরিচালিত করে এবং এর ফলে স্বৈরশাসক এরশাদকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সালেহ উদ্দিন বাংলাদেশের সংবিধানের উপর একটি গবেষণা সিরিজেও অবদান রেখেছেন। উপরন্তু, তিনি দুই মেয়াদে ল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং দুটি মামলায় অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে হাইকোর্টে আমন্ত্রিত হওয়ার সম্মান পেয়েছেন। 

উল্লেখ্য যে, লেখক ও সাংবাদিক সালেহ উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব মুসলিম উদ্দিনের ছেলে। মুসলিম উদ্দিনও ছিলেন এলাকার একজন কৃতি সন্তান। মরহুম মুসলিম উদ্দিন পাকিস্তান আমল থেকে দীর্ঘকাল চুনারুঘাটের চেয়ারম্যান ছিলেন।  স্বেচ্ছাশ্রমের এ কাজের জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি পদক পান। দেশের শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবেও তিনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। মুসলিম উদ্দিন চুনারুঘাটে অসংখ্য শিক্ষা, ধর্মীয় এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।


সিলেটের খবর এর আরও খবর

img

মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে কুরমাছড়া পাহাড়ি এলাকায় হামহাম জলপ্রপাত

প্রকাশিত :  ১০:১১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

সংগ্রাম দত্ত: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত বা ঝর্ণা। যা\' হাম হাম কিংবা হামহাম বা চিতা ঝর্ণা হিসেবে পরিচিত। 

জলপ্রপাতটি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের শেষাংশে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে দুর্গম জঙ্গলে ঘোরা একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন বলে জানা যায় । দুর্গম গভীর জঙ্গলে এই ঝরণাটি  মতান্তরে ১৪৭ কিংবা ১৭০ ফুট উঁচু। দেশের সবচেয়ে উঁচু ঝরণা হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের উচ্চতা  ১৬২ ফুট। তবে ঝরণার উচ্চতা বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরীক্ষিত মত নেই। সবই পর্যটকদের অনুমান। তবে গবেষকরা মত প্রকাশ করেন যে, এর ব্যাপ্তি, মাধবকুণ্ডের ব্যাপ্তির প্রায় তিনগুণ বড়।

হামাম ঝরণায় এপর্যন্ত (নভেম্বর ২০১১) গবেষকদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি। সাধারণ পর্যটকেরা ঝরণাটির নামকরণ সম্পর্কে তাই বিভিন্ন অভিমত দিয়ে থাকেন।  অনেকের মনে সিলেটি উপভাষায় \"আ-ম আ-ম\" বলে বোঝানো হয় পানির তীব্র শব্দ, আর ঝরণা যেহেতু সেরকমই শব্দ করে, তাই সেখান থেকেই শহুরে পর্যটকদের ভাষান্তরে তা \"হাম হাম\" হিসেবে প্রসিদ্ধি পায়। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি \"চিতা ঝর্ণা\" হিসেবে পরিচিত, কেননা একসময় এজঙ্গলে নাকি চিতাবাঘ পাওয়া যেত।

ঝরণার যৌবন হলো বর্ষাকাল। বর্ষাকালে প্রচন্ড ব্যাপ্তিতে জলধারা গড়িয়ে পড়ে। শীতে তা মিইয়ে মাত্র একটি ঝরণাধারায় এসে ঠেকে। ঝরণার ঝরে পড়া পানি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ছড়া তৈরি করে বয়ে চলেছে। এরকমই বিভিন্ন ছোট-বড় ছড়া পেরিয়ে জঙ্গলের বন্ধুর পথ পেরিয়ে এই ঝরণার কাছে পৌঁছতে হয়। ঝরণাটির কাছে যাওয়ার জন্য এখনও সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ গৃহীত হয়নি, সাধারণত স্থানীয় অধিবাসীদের থেকে কাউকে গাইড বা পথপ্রদর্শক নির্ধারণ করে পর্যটকরা ঝরণা ভ্রমণ করেন। তাছাড়া ঝরণাকে ঘিরে তৈরি হয়নি কোনো সরকারি অবকাঠামোও। ঝরণায় যেতে হলে কুরমা বন বিটের চম্পারায় চা বাগান হয়ে যেতে হয়। চম্পারায় চা-বাগান থেকে ঝরণার দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। পথে অত্যন্ত খাড়া মোকাম টিলা পাড়ি দিতে হয়। এবং অনেক ঝিরিপথ ও ছড়ার কাদামাটি দিয়ে পথ চলতে হয়। ঝিরিপথে কদাচিৎ চোরাবালুও তৈরি হয়। কিন্তু সে সকল স্থানে পর্যটকদের জন্য কোনো নির্দেশিকা দেখা যায় না। এছাড়া গভীর জঙ্গলে বানর, সাপ, মশা এবং জোঁকের অত্যাচার সহ্য করে পথ চলতে হয়। বর্ষাকালে হাম হামে যাবার কিছু আগে পথে দেখা পাওয়া যায় আরেকটি অনুচ্চ ছোট ঝরণার। হাম হামের রয়েছে দুটো ধাপ। সর্বোচ্চ ধাপটি থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে মাঝখানের ধাপে। এবং সেখান থেকে আবার পানি পড়ছে নিচের অগভীর খাদে। ঝরণার নিকটবর্তি বাসিন্দারা আদিবাসী ত্রিপুরা।

হাম হাম যাবার পথ এবং হাম হাম সংলগ্ন রাজকান্দি বনাঞ্চলে রয়েছে সারি সারি কলাগাছ, জারুল, চিকরাশি কদম গাছ। এর ফাঁকে ফাঁকে উড়তে থাকে রং-বেরঙের প্রজাপতি। ডুমুর গাছের শাখা আর বেত বাগানে দেখা মিলবে অসংখ্য চশমাপরা হনুমানের। এছাড়াও রয়েছে ডলু, মুলি, মির্তিঙ্গা, কালি ইত্যাদি বিচিত্র নামের বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ।

পর্যটকরা অত্যন্ত দুর্গম পথ পাড়ি দেবার জন্য খাবার এবং প্লাস্টিকের পানীর বোতল সঙ্গে করে নিয়ে থাকেন এবং খাবারকে পানির স্পর্শ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রায়ই পলিথিন ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পর্যটকরা প্রায়ই সেসব ব্যবহৃত জিনিস বহন করে পুনরায় ফেরত না নিয়ে আসতে  ও যত্রতত্র ফেলে নোংরা করেন ঝরণার নিকট-অঞ্চল। যা\' ঝরণা এমনকি জঙ্গলের সৌন্দর্য্যহানির পাশাপাশি পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। তাই পর্যটকদেরকে পঁচনশীল বর্জ্য পুতে ফেলা এবং অপচনশীল বর্জ্য সঙ্গে করে নিয়ে আসা কিংবা পুড়িয়ে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়।

সিলেটের খবর এর আরও খবর