img

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে হুশিয়ারি দিলেন এরদোগান

প্রকাশিত :  ০৯:৩৩, ২৬ আগষ্ট ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৩৬, ২৬ আগষ্ট ২০২৪

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে হুশিয়ারি দিলেন এরদোগান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান সন্ত্রাসবাদ রুখে দেওয়ার ব্যাপারে নিজের শক্ত অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন। গত ২৫ আগস্ট পূর্বাঞ্চলীয় শহর বিটলিসের এক ইভেন্টে অংশ নিয়ে সন্ত্রাসবাদ রুখে দেওয়ার ব্যাপারে নিজের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি। এরদোগান বলেন, সন্ত্রাসবাদকে আবার তুরস্কের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে দেবেন না।

ইভেন্টে এরদোগান বলেন, ‘আমরা যে সন্ত্রাসী হুমকির পিঠ ভেঙে দিয়েছি, তা আবার পুনরুজ্জীবিত হতে দেব না। আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো থেকে সন্ত্রাসবাদের অন্ধকার ছায়া সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শহরগুলোর সম্ভাবনা উত্থাপিত হচ্ছে। এ অঞ্চলে আমাদের প্রদেশগুলোর একটি ভিন্ন গতি পেয়েছে। আস্থার বদলে উদ্বেগ এসেছে, ভয়ের জায়গায় এসেছে শান্তি। এই অঞ্চলে শান্তির পরিবেশ যেমন শক্তিশালী হচ্ছে, বিনিয়োগ দ্রুততর হচ্ছে।’ 

এরদোগান মূলত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কুর্দিশ ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে উল্লেখ করেছেন। কেননা এ সংগঠনটিকে এরই মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ ব্যাপারে তাই নিজ দেশের জনগণকেও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন এরদোগান।

শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করার পদক্ষেপ হিসেবে ইরাকের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়াচ্ছে তুরস্ক। যেই লক্ষ্যে এই মাসের শুরুর দিকে পিকেকের বিরুদ্ধে বাগদাদ ও বাশিকায় যৌথ সামরিক কেন্দ্র স্থাপনের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশ দুটি। যেই চুক্তিতে সামরিক ও আইন প্রয়োগকারী প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি এবং সীমান্ত নিরাপত্তার সহযোগিতার রূপরেখা রয়েছে।

ইরাকের সঙ্গে এ চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে ঘোষণা করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান, যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরাকের সঙ্গে আমরা যে বোঝাপড়ার ঐক্য গড়ে তুলছি, তা এগিয়ে নিতে চাই মাঠে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে।’

নতুন এই চুক্তির অংশ হিসেবে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি এবং ৫০ বছরের বেশি ইরাকি নাগরিকদের জন্য ভিসার প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করবে তুরস্ক।




আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

img

হিজবুল্লাহর ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলের এতটা ভেতরে ঢুকে হামলা চালাল

প্রকাশিত :  ০৮:০৭, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

দখলদার ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই ‘নির্ভরযোগ্য’ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে গতকাল রোববার ইসরায়েলের অনেকটা ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম হয় হিজবুল্লাহর ড্রোন।

লেবাননের ইরান-সমর্থিত রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলাটি হয়েছে মধ্য-উত্তর ইসরায়েলের একটি সেনাঘাঁটিতে।

হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আহত ৬০ জনের বেশি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে হতাহত হওয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, হামলায় আহত সাত সেনার অবস্থা গুরুতর।

স্থানীয় সময় গতকাল দিনের শেষ ভাগে এই ড্রোন হামলা হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর গতকাল অন্যতম সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলো ইসরায়েল।

আইডিএফ বলেছে, হিজবুল্লাহর পাঠানো একটি ড্রোন বিন্যামিনা শহর-সংলগ্ন একটি ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায়। শহরটির অবস্থান তেল আবিবের উত্তরে। লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ মাইল দূরে।

গতকাল হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা বিন্যামিনায় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি পদাতিক প্রশিক্ষণ শিবির নিশানা করে হামলা চালাতে একঝাঁক ড্রোন পাঠিয়েছে।

হিজবুল্লাহর এমন কথার পর ইসরায়েলে ড্রোন হামলার খবর এল।

হিজবুল্লাহ বলে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে হামলা চালায় ইসরায়েল। বদলা হিসেবে তারা গতকাল ইসরায়েলে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় ২২ জন নিহত হন। আহত ১১৭ জন।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের গোলানি ব্রিগেডকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে।

গোলানি ব্রিগেড আইডিএফের একটি পদাতিক ইউনিট। এই ইউনিটের সদস্যদের দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।

হামলার দায় স্বীকার করার কিছু আগে হিজবুল্লাহ তাদের সদ্য প্রয়াত নেতা হাসান নাসরুল্লাহর একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করে। এ বার্তায় তিনি হিজবুল্লাহর সদস্যদের নিজেদের লোকজন, পরিবার, জাতি, মূল্যবোধ ও মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানান। গত মাসের শেষ দিকে ইসরায়েলি হামলায় নাসরুল্লাহর নিহত হন।

গতকাল দিনের শুরুর দিকে আইডিএফ বলেছিল, লেবানন থেকে পাঠানো একটি ড্রোন তারা রুখে দিয়েছে। তবে এ ঘটনা কোথায় ঘটেছে, তা তারা নির্দিষ্ট করে বলেনি।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুবই নির্ভরযোগ্য। কিন্তু গতকাল এই আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পেরেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন। গতকাল হিজবুল্লাহর ড্রোন ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে প্রাণঘাতী হামলা চালায়।

সিএনএন আরও বলেছে, গতকাল হামলার সময় বিন্যামিনা এলাকায় কোনো সতর্কবার্তার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের এতটা গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ব্যতিব্যস্ত রাখার জন্য উত্তর ইসরায়েলি শহর নাহরিয়া ও একর নিশানা করে বেশ কয়েক ডজন রকেট ছোড়ে। একই সঙ্গে তারা একঝাঁক ড্রোন পাঠায়।

হিজবুল্লাহ বলেছে, এই ড্রোনগুলো শনাক্ত হওয়া এড়াতে পেরেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা রাডারগুলোকে ফাঁকি দিতে পেরেছে। ড্রোনগুলো বিন্যামিনার অভিজাত গোলানি ব্রিগেডের প্রশিক্ষণ শিবিরের লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছায়।

আইডিএফের শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনা তদন্ত করবে। কীভাবে ঘাঁটিতে ড্রোন প্রবেশ করল, কিন্তু সতর্কসংকেত বাজল না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

ঘাঁটিটি থেকে দেওয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে হাগারি বলেন, তাঁরা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন। তাঁরা ঘটনাটি তদন্ত করবেন।

আইডিএফের এই মুখপাত্র বলেন, তাঁরা যুদ্ধের শুরু থেকেই ড্রোনের হুমকি মোকাবিলা করে আসছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় উন্নতি দরকার।